টোকিও: ভিন গ্রহে জলের খোঁজে একের পর এক দুরন্ত সব মহাকাশ (cosmic) অভিযান (expedition) করি আমরা। কিন্তু এই বিশ্বে জলের উৎস কী? জাপানের (japan) 'হায়াবুসা টু' স্পেস প্রোব থেকে যে তথ্য উঠে আসছে, তা সত্যি হলে আমাদের পৃথিবীর জলের-ইতিহাসও কম চাঞ্চল্যকর হয় না। জাপানের দাবি, এই গ্রহে জল ও জৈব পদার্থ এসেছিল গ্রহাণুর (asteroids) হাত ধরে।


জলের ইতিহাস...
নেচার অ্যাস্ট্রোনমি শীর্ষক জার্নালে 'হায়াবুসা টু' মহাকাশ গবেষণার তথ্য় প্রকাশিত হয়েছে। কী বলা হচ্ছে তাতে? জন্মের আদিলগ্নে পৃথিবী আদৌ সুজলা-সুফলা-শস্যশ্যামলা
ছিল না। বরং গলে যাওয়া ম্যাগমার এক বিশাল পিণ্ডের চেহারায় ছিল এই গ্রহ। তার পর...'বৃহৎ অর্থে বলাই যায় যে ছোট ছোট মহাজাগতিক বস্তুই এখানে এমন কিছু নিয়ে আসে যেখান থেকে জল ও জীবনের সূত্রপাত', বলেছেন Japan Agency for Marine-Earth Science and Technology-র বর্ষীয়ান গবেষক মটু আইটো। ভূপদার্থ নিয়ে গবেষণাই তাঁর একমাত্র ধ্যানজ্ঞান। 


কী ভাবে জানা গেল?
ডিসেম্বর, ২০২০। মোট ছ'বছরের জন্য 'হায়াবুসা টু'-তে একটি ক্যাপসুল পাঠায় জাপান অ্যারোস্পেস এক্সপ্লোরেশন এজেন্সি। সেই ক্যাপসুলই Ryugu নামে একটি গ্রহাণুর প্রায় ৫.৪ গ্রাম 'মাটি' পাঠিয়েছে। সেই 'মাটির' গঠন বিশ্লেষণ করে জাপানের বিজ্ঞানীদের দাবি, জলের সঙ্গে লক্ষণীয় মিল রয়েছে। তবে দুটো পুরোপুরি এক রকম নয়। তাই একই সঙ্গে তাঁরা জানাচ্ছেন,পৃথিবীতে জলের উৎপত্তি-রহস্য হয়তো গ্রহাণু ছাড়াও অন্য কোথাও লুকিয়ে থাকতে পারে। তবে আপাতত গ্রহাণুর ভূমিকাই বোঝার চেষ্টা করেছেন তাঁরা। সে জন্য আটটি উপাদান বিশ্লেষণ করা হয়েছে। দেখা যায়, প্রত্যেকটিই জৈব পদার্থ। শুধু তাই নয়। 'হাইড্রক্সিল গ্রুপ'-র চেহারায় জলেরও খোঁজ মেলে এতে। এই রূপে অক্সিজেনের একটি পরমাণুর সঙ্গে হাইড্রোজেনের একটি পরমাণু জুড়ে থাকে। মহাজাগতিক ধুলো ও ধুমকেতুর মধ্যে বহু সময়ই এই ভাবে জলের হদিশ পাওয়া যায়। সেখান থেকে কী ভাবে পৃথিবীতে জল এসে থাকতে পারে তার একটা জোরালো আভাস পাওয়া গিয়েছে, দাবি জাপানের। 


মহাকাশে ভারত...
চলতি বছরের শুরুতেই মহাকাশে কৃত্রিম উপগ্রহ পাঠিয়েছিল ভারত। এর মধ্যে ছিল, পৃথিবীর উপর নজরদারি চালানোর পোলার স্যাটেলাইট লঞ্চ ভেহিকল (PSLV) ইওএস-০৪ (EOS-04)। পাশাপাশি ‘ইনস্পায়ারস্যাট-১’(INSPIRE-1) এবং ভারত-ভুটান যৌথ উদ্যোগে তৈরি টেকনোলজি ডেমনস্ট্রেটর স্যাটেলাইট আইএনএস-২বি (INS-2B) নামের দু’টি অপেক্ষাকৃত ছোট কৃত্রিম উপগ্রহও পাঠানো হয়েছে। আয়নমণ্ডলের গতিশীলতা এবং সৌরমুকুটের তাপমাত্রা নিয়ে গবেষণা চালাবে ওই দুই কৃত্রিম উপগ্রহ। পূর্ব ঘোষণা মতোই ফেব্রুয়ারি মাসে অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীহরিকোটা থেকে কৃত্রিম উপগ্রহগুলির উৎক্ষেপণ করে ইসরো। লঞ্চ ভেহিকলটিক পৃথিবীর উপর নজরদারি চালানো কৃত্রিম উপগ্রহ ইওএস-০৪-কে প্রদক্ষিণ করার কথা। এর ওজন ১ হাজার ৭১০ কেজি। ইওএস একটি রেডার ইমেজিং উপগ্রহ। কৃষি, সবুজায়ন, বৃক্ষরোপণ, মাটির আর্দ্রতা, জলের অনুসন্ধান এবং বন্যার রূপরেখা নিয়ন্ত্রণে বিজ্ঞানীদের সাহায্য করতে মহাকাশ থেকে ছবি তুলে পাঠানোর কথা সেটির।     


আরও পড়ুন:কলকাতার ১৩টি ওয়ার্ডকে ‘অতি ডেঙ্গি প্রবণ’ বলে চিহ্নিত করা হয়েছে, আপনার ওয়ার্ড আছে এর মধ্যে ?