মুম্বই: মুসলিম হতে বাধ্য় করেছিল ওয়াজিদ খানের পরিবার। এমনই অভিযোগ প্রয়াত মিউজিক কম্পোজারের স্ত্রীর। নিজের ইনস্টাগ্রাম হ্য়ান্ডেলে সেই কথা তুলে ধরেছেন তিনি। জানিয়েছেন, বিয়ের পর কতটা পাল্টে গিয়েছিল জীবন। ভিন্ন ধর্মে বিয়ে করে নিজের অভিজ্ঞতার কথাও জানিয়েছেন তিনি।

ওয়াজিদ খানের স্ত্রী কমলরুখ খান জানিয়েছেন, বিয়ের আগে ১০ বছর সম্পর্ক ছিল তাঁদের। তিনি লিখেছেন,ধর্ম বদল রুখতে যে আইন আনা হয়েছে তা নিয়ে আমি খুব আগ্রহী। আমি পার্সি ছিলাম। ওয়াজিদ ছিল মুসলিম। কলেজ সুইটহার্ট বলা হত আমাদের। বিশেষ বিবাহ আইনে বিয়ে হয় আমাদের। যে আইনের জেরে বিয়ের পরেও নিজের ধর্মেও থাকা যায়। কিন্তু ধর্মের নামে যেভাবে একজন মহিলাকে অত্য়াচারিত হতে হয় তা অত্য়ন্ত লজ্জার।

পার্সি পরিবারে বড় হয়ে ওঠা ছিল একদম অন্য়রকম অভিজ্ঞতা। পরিবারের প্রত্য়েকের মতামতের যথেষ্ট গুরুত্ব ছিল। স্বাধীনচেতা মনোভাবকে প্রাধান্য় দেওয়া হত। শিক্ষাকে উৎসাহ দেওয়া হত। কিন্তু বিয়ের পরে জীবন পুরো পাল্টে যায়। স্বাধীনতা, শিক্ষা, মতামত আমার স্বামীর পরিবারে সবথেকে বড় সমস্য়া হয়ে দাঁড়ায়। স্বাধীনচেতা মনোভাব, মতামতকে গুরুত্ব দেওয়া হত না। আমাকে ধর্ম পরিবর্তনের জন্য় জোর করা হত। আমাদের স্বামী-স্ত্রীর মধ্য়ে সম্পর্ককে তিক্ত করে তুলেছিল। কিন্তু আমার আত্মসম্মান ওঁর সামনে এবং ওঁর পরিবারের সামনে নিচু হতে শেখায়নি।



দেশের প্রথম রাজ্য় হিসেবে লাভ জিহাদ বিরোধী অর্ডিন্য়ান্স জারি করেছে উত্তরপ্রদেশ। ধর্ম পরিবর্তন রুখতে আইন আনতে চলেছে হরিয়ানা সরকারও। এই আবহে ধর্ম পরিবর্তন নিয়ে নিজের অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিলেন কমলরুখ খান। তিনি বলেছেন, ব্য়ক্তিগতভাবে আমি মনে করি ধর্ম পরিবর্তন কোনও গর্বের বিষয় নয়। এমনকি পুরুষতন্ত্রের উদাহরণও হতে পারে না। আমার বিবাহিত জীবনে এই নিয়ে আমি লড়াই করেছি। ভয়ে দেখিয়ে ধর্ম পরিবর্তন করাতে চেয়েছিল ওঁরা। ওঁরা চেয়েছিল আমাদের বিয়েটা ভেঙে যাক। মনে হত আমাকে ঠকানো হয়েছে। মানসাকভাবে খুব ভেঙে পড়েছিলাম। আমি আমার ১৬ বছরের মেয়ে আর্শি এবং ৯ বছরের ছেলে রিহানের জন্য় সুন্দর জগৎ তৈরি করে যেতে চাই।

বলিউডের মিউজিক কম্পোজার সাজিদ-ওয়াজিদের অন্য়তম ওয়াজিদ খান। গত কয়েক বছরে বেশ কিছু ভাল গান উপহার দিয়েছেন বলিউডকে। ১ জুন করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্য়ু হয় তাঁর। মাত্র ৪২ বছর বয়সে গানের দুনিয়া ছেড়ে চল যান তিনি।