সুনীত হালদার, হাওড়াঃ নেতাজি ইন্ডোর থেকে ভার্চুয়াল মাধ্যমে হাওড়ার ডুমুরজলা ইন্ডোর স্টেডিয়াম ও ক্যানিং বাস টার্মিনাসের উদ্বোধন করলেন মুখ্যমন্ত্রী। ডিসেম্বর পর্যন্ত কোয়ারেন্টিন সেন্টার থাকা ইন্ডোর স্টেডিয়াম কেন খুলে দেওয়া হল? অসমাপ্ত বাস টার্মিনাস কেন উদ্বোধন? প্রশ্ন তুলছে বিরোধীরা। পাল্টা জবাব দিয়েছে তৃণমূল।
আর কিছুদিনের মধ্যেই ঘোষণা হতে পারে বিধানসভা ভোটের নির্ঘণ্ট। তার আগে একের পর এক প্রকল্পের উদ্বোধন করছেন মুখ্যমন্ত্রী। যা নিয়ে নির্বাচনের আগে বিতর্ক পিছু ছাড়ল না রাজ্যের শাসক দলের।
সোমবার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়াম থেকে ভার্চুয়াল মাধ্যমে হাওড়ার ডুমুরজলা ইন্ডোর স্টেডিয়াম উদ্বোধন করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ডুমুরজলা ইন্ডোর স্টেডিয়ামের নতুন নামকরণ হয়েছে ‘সবুজ সাথী ক্রীড়াঙ্গন’। নতুন করে এই স্টেডিয়াম নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ২৮ কোটি টাকা। কিন্তু এই ইন্ডোর স্টেডিয়াম নির্মাণের সময়, গত বছরের এপ্রিলে কোভিড সংক্রমণকালে এখানে কোয়ারেন্টিন সেন্টার খোলা হয়। সেই কোয়ারেন্টিন সেন্টার চলেছে ডিসেম্বর পর্যন্ত। তারপরই তড়িঘড়ি স্টেডিয়ামের উদ্বোধন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিরোধীরা।
হাওড়া সদরের বিজেপি সভাপতি সুরজিৎ সাহা জানান, এখনও কোভিড পরিস্থিতি পুরোপুরি স্বাভাবিক নয়। সকলকে ভ্যাকসিন দেওয়া হয়নি। করোনার নতুন প্রজাতির সন্ধান মিলেছেষ সেক্ষেত্রে কীভাবে এই স্টেডিয়ামে খেলার জন্য খুলে দেওয়া হচ্ছে? এতে ঝুঁকি থেকে যাচ্ছে। ভোটের দিকে তাকিয়ে করা হচ্ছে ।
হাওড়া সদরের তৃণমূল কংগ্রেসের চেয়ারম্যান তথা সমবায় মন্ত্রী অরূপ রায় জানান, এই স্টেডিয়াম আগেই তৈরি হয়ে গিয়েছিল। উদ্বোধন করতে কোনও বাধা নেই। খেলার উন্নতির জন্য এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আগে কোয়ারেন্টিন সেন্টার তৈরি হলেও এখন স্যানিটাইজ করে উদ্বোধন করা হয়েছে ।
অন্যদিকে এদিন ক্যানিংয়ের বাস টার্মিনাস উদ্বোধনও করেন মুখ্যমন্ত্রী। এখনও তৈরি হয়নি বাস টার্মিনাসের চাল। নেই যাত্রীদের বসার জায়গা। স্থানীয় এক বাস চালকের কথায়, এখানে কোনও পরিকাঠামো নেই। সব কিছু তৈরি করে উদ্বোধন করলে ভাল হত। ক্যানিংয়ে বাস টার্মিনাস নির্মাণের জন্য ২০১৮-য় শিলান্যাস করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রাথমিকভাবে ৬ কোটি ৯৯ লক্ষ টাকা বরাদ্দ হয়। ৭০ শতাংশ কাজ হলেও ৩০ শতাংশ কাজ বাকি রয়েছে। কাজ সম্পূর্ণ করতে ৩ কোটি ৬৯ লক্ষ টাকা প্রয়োজন। কিন্তু মাত্র ৪৪ লক্ষ টাকা মঞ্জুর হওয়ায় কাজ শেষ হয়নি।
বিজেপি নেতা দক্ষিণ ২৪ পরগনা পূর্ব সাংগঠনিক জেলার বিজেপি নেতা সঞ্জয় নায়েক জানান, হাস্যকর ছাড়া আর কিছু নয়। একটা বাস টার্মিনাস করতে নূন্যতম যে ব্যবস্থা করতে হয় সেটাই এখানে নেই। ভোটের আগে মানুষকে বোকা বানাতে তড়িঘড়ি উদ্বোধন। বিধানসভা ভোটে মানুষ জবাব দেবে। ক্যানিং পশ্চিমের তৃণমূল বিধায়ক শ্যামল মণ্ডলের দাবি, ৭৫ শতাংশ কাজ হয়ে গিয়েছে। ২৫ শতাংশ কাজ টাকা এলে হবে। আপাতত বাস ছাড়া হবে না। সপ্তাহখানেকের মধ্যে বাস চালু হবে । এই পরিস্থিতিতে উদ্বোধনের হিড়িক নিয়ে প্রশ্ন তুলছে বিজেপি।