ভুবনেশ্বর : করোনা আবহে করুণ দৃশ্যের পাশাপাশি অনেক মানবিক চিত্রও দেখেছে দেশ। সেরকমই কাহিনি ওড়িশার মধুস্মিতা প্রুশ্তির। ভুবনেশ্বরে করোনায় মৃত ও বেওয়ারিস লাশের সৎকারে এগিয়ে এসেছেন তিনি। এইসব দেহের সৎকারে স্বামীকে সাহায্য করার জন্য মধুস্মিতা ছেড়েছেন মোটা বেতনের নার্সের চাকরিও।
সংবাদ সংস্থা ANI-কে তিনি বলেন, "আমি কলকাতার ফর্টিস হাসপাতালের শিশু বিভাগে নার্সের কাজ করতাম। ২০১১-২০১৯ সাল পর্যন্ত অর্থাৎ ৯ বছর সেখানে কাজ করেছি। পরে আমি ওড়িশায় ফিরে আসার সিদ্ধান্ত নিই। কারণ, আমার স্বামী পায়ে আঘাত পেয়েছেন। তাই সৎকারের কাজ করতে পারছিলেন না। তাঁকে সাহায্য করার জন্য এই সিদ্ধান্ত নিতে হয়।"
তিনি আরও বলেন, "২০১৯ সালে আমি ওড়িশায় ফিরে আসি। তারপর থেকে রেললাইনে পাওয়া বেওয়ারিস লাশ, আত্মহত্যার ঘটনা এবং হাসপাতালের মৃতদেহ সৎকার করতে স্বামীকে সাহায্য করি। গত বছর করোনায় মৃত ৩০০-র বেশি দেহের সৎকার করেছি। আর ভুবনেশ্বরে গত আড়াই বছরে ৫০০ মৃতদেহের সৎকার করেছি। একজন মহিলা হিসাবে মৃতদেহ শনাক্তকরণের কাজ করায় আমাকে অনেক সমালোচনা শুনতে হয়েছে। কিন্তু, প্রদীপ সেবা ট্রাস্টের অধীনে আমি কাজ চালিয়ে গিয়েছি। এই ট্রাস্টটি আমার স্বামীর নামে চলে।"
প্রুশ্তি জানান, "কোভিড হাসপাতাল থেকে করোনায় মৃতদের দেহ নিয়ে এসে তা সৎকারের জন্য আমরা ভুবনেশ্বর পুর নিগমের সঙ্গে একটি চুক্তি সই করেছি।"
মধুস্মিতার স্বামী প্রদীপ কুমার প্রুশ্তি বলেন, "আমি ভুবনেশ্বরে গত ১১ বছর ধরে মৃতদেহ সৎকারের কাজ করছি। আমার স্ত্রীও একাজে গত আড়াই বছর ধরে হাত লাগাচ্ছেন। এই কাজের পাশাপাশি আমি এবং আমার স্ত্রী শাক-সব্জি বিক্রি করি।"
প্রসঙ্গত, দেশের অন্যান্য রাজ্যের মতোই ওড়িশার করোনা পরিস্থিতিও উদ্বেগজনক। দুই সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে লকডাউনের আওতায় থাকার পরও শেষ বুলেটিন অনুযায়ী, সেখানে একদিনে সর্বোচ্চ সংক্রমণ দেখা গিয়েছে। নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ১২ হাজার ৮৫২ জন। এক স্বাস্থ্য আধিকারিক একথা জানিয়েছেন। নতুন করে মৃত্যু হয়েছে ২৮ জনের।