করুণাময় সিংহ, মালদা: মালদার রতুয়ার দাপুটে তৃণমূল নেতা বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। তাঁর দলত্যাগের পরই জেলা পরিষদ দখলের স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছে গেরুয়া শিবির। বিজেপির দাবি, ওই নেতা দল ভাঙিয়ে অধিকাংশ জেলা পরিষদ সদস্যকে তাদের দলে আনবে। তবে তৃণমূল পাল্টা দাবি করেছে, জেলা পরিষদ হাতছাড়া হবে না।
গত সপ্তাহে মালদায় গিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, আমি মালদায় প্রতিবার আসি। মুখ দেখে আনন্দ লাগে। দেখে মনে হয় গ্রহণ করেছেন। ফিরে দেখি লোকসভায় জিরো, বিধানসভায় নেই বললেই চলে। এবারের ভোটে মালদা দেবেন তো? ফজলি আম দেবেন তো? আম ও আমসত্ত্ব দু’টোই চাই ৷ মালদাবাসীর উদ্দেশে এই আহ্বান জানিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু, দশ দিনের মধ্যে সেই মালদাতেই ফের তৃণমূলে ভাঙন ধরাল বিজেপি। আর এই দলবদলে ভর করে, মালদা জেলা পরিষদ দখলের স্বপ্ন দেখছে গেরুয়া শিবির।
বুধবার তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন রতুয়ার দাপুটে নেতা মহম্মদ ইয়াসিন। মহম্মদ ইয়াসিনের স্ত্রী পায়েল খাতুন, তৃণমূল পরিচালিত মালদা জেলা পরিষদের জনস্বাস্থ্য কারিগরি কর্মাধ্যক্ষ। মালদা উত্তর লোকসভা কেন্দ্রে ইয়াসিনের যথেষ্ট প্রভাব রয়েছে বলে সূত্রের দাবি। বিজেপি নেতারা দাবি করছেন, জেলা পরিষদের অধিকাংশ সদস্যকে ভাঙিয়ে বিজেপিতে আনবেন ইয়াসিন। সেই তালিকায় রয়েছেন জেলা পরিষদের সভাধিপতিও। মালদার বিজেপি সভাপতি গোবিন্দচন্দ্র মণ্ডল জানান, ‘‘১৮-২২ জন তৃণমূল সদস্য বিজেপিতে আসবেন, সভাধিপতিও আসবেন, জেলা পরিষদ আমরা দখল করব৷’’
জেলা পরিষদের সভাধিপতি গৌর মণ্ডলকে নিয়ে জল্পনা শুরু হলেও, তিনি তৃণমূলেই রয়েছেন বলে দাবি করেছেন। মহম্মদ ইয়াসিনের দলত্যাগের পরই, বৃহস্পতিবার তড়িঘড়ি জেলা নেতৃত্বকে নিয়ে বৈঠকে বসেন তৃণমূলের জেলা সভানেত্রী। মালদার তৃণমূল কংগ্রেস সভানেত্রী মৌসম বেনজির নুর বলেন, ‘‘মালদা জেলা পরিষদ তৃণমূল কংগ্রেসের আছে থাকবে, যারা দল ত্যাগ করেছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে, রাজ্য নেতৃত্বকে জানানো হয়েছে ৷’’
গত পঞ্চায়েত ভোটে মালদা জেলা পরিষদের ৩৭টি আসনের মধ্যে ৩০টিতে জিতে জেলা পরিষদ দখল করে তৃণমূল। বিজেপি ৬টি ও ও কংগ্রেস ১টি আসন পায়। এই অবস্থায় তৃণমূল ভাঙিয়ে কি জেলা পরিষদ দখল করতে পারবে বিজেপি? তা নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে।