সৌরভ বন্দ্যোপাধ্যায়, হুগলি: যে রাস্তা নিয়ে বেসুরো মন্তব্যের পর তৃণমূল ত্যাগ। সেই রাস্তা ইস্যুতেই পথে নামলেন সদ্য বিজেপিতে যোগ দেওয়া প্রবীর ঘোষাল। পাশাপাশি নিজের খাস তালুকে জল প্রকল্প নিয়েও তৃণমূলকে নিশানা করলেন উত্তরপাড়ার বিধায়ক। পাল্টা খোঁচা দিয়েছেন তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়।


যে রাস্তা নিয়ে তৃণমূলের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়ে দলত্যাগ, বিজেপি যোগদান করেই সেই রাস্তা নিয়েই আন্দোলন শুরু করলেন! মঙ্গলবার সকালে কোন্নগরের কানাইপুর পঞ্চায়েতের সামনে বিক্ষোভ শুরু করেন বিজেপি কর্মী-সমর্থকরা। নেতৃত্বে ছিলেন সম্প্রতি ঘাস-ফুল ছেড়ে পদ্ম শিবিরে যোগ দেওয়া উত্তরপাড়ার বিধায়ক প্রবীর ঘোষাল।


দীর্ঘদিন ধরে বেহাল অবস্থায় রয়েছে কোন্নগর স্টেশন থেকে দিল্লি রোড সংযোগকারী ৫ কিলোমিটার দীর্ঘ নৈটি রোড। গত মাসে তৃণমূল ত্যাগের আগে এই নিয়ে মুখ খোলেন প্রবীর ঘোষাল। তিনি তখন বলেছিলেন, ‘‘আমার কাছে দলের লোকেরা এসেই বলছে যে, আপনাকে ভোটে হারিয়ে দেওয়া হবে বলে এই কাজটা ফেলে রাখা হয়েছে।’’


এরপরই দলবিরোধী কাজের অভিযোগ তাঁকে শোকজ করে তৃণমূল। অন্যদিকে দলের সমস্ত পদ ছেড়ে দেন প্রবীর ঘোষাল।  গত মাসের ৩০ তারিখ চার্টার্ড ফ্লাইটে দিল্লিতে গিয়ে বিজেপিতে যোগ দেন প্রবীর ঘোষাল। নতুন দলে যোগদানের পরই সেই রাস্তা ইস্যুতেই পথে নামলেন উত্তরপাড়ার বিধায়ক। প্রবীরবাবুর মতে, ‘‘এই রাস্তা নিয়ে উদাসীন রাজ্য সরকার। রাস্তা নিয়ে রাজনীতি করা হচ্ছে ৷’’


হুগলির কানাইপুরের তৃণমূল নেতা ও পঞ্চায়েত প্রধান আচ্ছালাল যাদব বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীকে ভুল বুঝিয়েই বিধায়কের পদ পেয়েছিলেন। বিজেপি গিয়েও মানুষকে ভুল বোঝাচ্ছেন। এতে প্রভাব পড়বে না ৷’’


এর পাশাপাশি এদিন উত্তরপাড়া জল প্রকল্প নিয়েও পুরনো দল তৃণমূলকে নিশানা করেন প্রবীর ঘোষাল। সোমবার এই প্রকল্পের উদ্বোধন করেন পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। প্রবীর ঘোষালের দাবি, ‘‘একই প্রকল্প দু’বার উদ্বোধন করা হল। ধাপ্পাবাজি চলছে। প্রকল্পের মোট খরচ ১৭৬৩ কোটি। এর মধ্যে কেন্দ্র দিয়েছে দেড়শ কোটি। এশিয়ান ডেভলপমেন্ট ব্যাঙ্ক দিয়েছে ৪০০ কোটি। এখানে বাকি জলের পাইপ আর আসবে না। কারণ ঠিকাদাররা টাকা পাননি। কেন্দ্র-রাজ্যে একই দলের সরকার হলেই প্রকল্প হবে৷’’


তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় পাল্টা বলেন, ‘‘ফিরহাদ হাকিম জল প্রকল্পের উদ্বোধন করেছেন। ৭০% কাজ হয়ে গিয়েছে। প্রকল্পতো এবার শুরু হবে। কার কী অসুবিধা হচ্ছে  গা খুব জ্বলছে। ওঁর গায়ে ফোসকা পড়েছে। প্রবীর ঘোষাল কোনও কাজ করেননি। প্রবীর নিজেই ঠিকাদারদের সঙ্গে ঘুরতেন ৷’’


বিধানসভা ভোটের মুখে একগুচ্ছ রাস্তা ও উড়ালপুলের জন্য রাজ্য বাজেটে বরাদ্দ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই আবহে বেহাল রাস্তা নিয়ে এবার আন্দোলন নামল বিজেপি।