ইতালির বিখ্যাত সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ মেটিও বাশেট্টি বলেছেন, তাঁদের দেশের রোগীদের শারীরিক অবস্থাই প্রমাণ দিচ্ছে, করোনার মারণ ক্ষমতা আগের থেকে কমেছে। এমনকী যে বয়স্ক রোগীরা করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন তাঁরাও এখন সেরে উঠছেন। অথচ কয়েক মাস আগেও বয়স্করা করোনার শিকার হলে বেঁচে থাকার আশা প্রায় ছিল না।আসলে এই ভাইরাস দ্রুত পরিবর্তিত হচ্ছে। মানুষের শরীরে ঢুকে তৈরি হচ্ছে জেনোমের প্রতিকৃতি। আরএনএ ভাইরাস অনেক সময় নিজের পুরো জেনোমের কপি করতে পারে না, কিছুটা বাদ যায়। এই ভাইরাসেরই ঘটে মিউটেশন। মিউটেশনে ভাইরাসনিজের গতি বাড়ায় ঠিকই কিন্তু বেশি মিউটেশনের ফলে দুর্বল হয়ে পড়ে ও সংক্রমণ ছড়ানোর ক্ষমতা কমে যায়।
বাশেট্টি বলেছেন, মার্চ-এপ্রিলে করোনা জীবাণু ছিল জঙ্গলে একা বাঘের মত। কিন্তু এখন তা পুরোপুরি বেড়াল হয়ে গিয়েছে। ৮০-৯০ বছরের বৃদ্ধরাও ভেন্টিলেটর ছাড়াই সুস্থ হয়ে উঠছেন। আগে এঁরাই ২–৩ দিনের বেশি বাঁচতেন না। মিউটেশনের ফলে ফুসফুসের আর তেমন ক্ষতি করতে পারছে না করোনা জীবাণু।
দিল্লির সঞ্জয় গাঁধী আয়ুর্বিজ্ঞান সংস্থানের মলিকিউলার মেডিসিন অ্যান্ড বায়োটেকনোলজি বিভাগের প্রাক্তন অধ্যারক মদন মোহন গোডবোলেও বলেছেন, করোনা জীবাণু দুর্বল হয়ে পড়ছে। ফলে সংক্রমিতের সংখ্যা বাড়লেও মৃতের সংখ্যা কমছে। তিনি বলেছেন, জীবাণু ২ রকম। একটি অত্যন্ত বিপজ্জনক, অন্যটি দুর্বল। বিপজ্জনক ভাইরাস ছড়ায় কম লোকের মধ্যে, দুর্বলটি ছড়ায় দ্রুত। এভাবে ২ ভাইরাসের মধ্যে শুরু হয় অস্তিত্বের লড়াই, তাতে জিতে যায় দুর্বল ভাইরাস। এরপর শুধু সেই টিকে থাকে, তাতে সংক্রমিত বেশি হলেও মৃত্যু হয় কম লোকের। কিছুদিন পর মানুষের শরীরই এই ভাইরাসের সঙ্গে লড়াইয়ের জন্য তৈরি হয়ে যায়। ফলে তাঁর সিদ্ধান্ত, করোনা সংক্রমণের সংখ্যা এখন দেশে দ্রুত বাড়বে ঠিকই কিন্তু আগের মত মৃত্যু হবে না তাতে।
ভারতে করোনায় ৪৭,০০০-এর বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। ১৬,৯৫,৯৮২ জন এই রোগ থেকে সেরে উঠেছেন। মৃত্যুর হার কমে হয়েছে ১.৯৬ শতাংশ।