নয়াদিল্লি: ফেসবুক কর্তৃপক্ষ তাঁর অ্যাকাউন্টটি নিষিদ্ধ করে দিয়েছে বলে ওয়াল স্ট্রিট জার্নালে বেরনো খবরের প্রতিক্রিয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করে তেলঙ্গানার বিজেপি বিধায়ক টি রাজা সিংহ দাবি করলেন, তাহলে অন্য দলগুলির যে নেতারা উসকানিমূলক ভাষণ দেন, তাঁদের সোস্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টেও নিষেধাজ্ঞা জারি হওয়া উচিত। তিনি বলেছেন, আমি খবর পেয়েছি, ফেসবুক আমার নামে সব পেজ, অ্য়াকাউন্ট সরিয়ে দিয়েছে। আর সব দলেরও অনেক নেতা প্ররোচনামূলক বক্তৃতা দেন। ফেসবুকের তাঁদের অ্যাকাউন্টগুলিও নিষিদ্ধ করা উচিত। আমি আমার অফিসিয়াল ফেসবুক অ্যাকাউন্ট খোলার জন্য ফেসবুককে লিখিত ভাবে জানাব।
ফেসবুকের এক মুখপাত্র বলেছেন, যাঁরা হিংসা, ঘৃণা ছড়ান বা তার প্রচার করেন, তাঁদের আমাদের মঞ্চে জায়গা না দেওয়ার পলিসি মেনে আমরা রাজা সিংহকে ফেসবুকে নিষিদ্ধ করেছি। সম্ভাব্য নীতি লঙ্ঘনকারীদের মূল্য়ায়নের প্রক্রিয়াটি অত্যন্ত ব্যাপক, আমাদের তাঁর অ্যাকাউন্টটি সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত সেটা থেকেই।
গত ১৪ আগস্ট ওয়াল স্ট্রিট জার্নালে প্রকাশিত এক রিপোর্টে দাবি করা হয়, ফেসবুক বিজেপি নেতা-মন্ত্রীদের ঘৃণাবিদ্বেষ, প্ররোচনামূলক বক্তব্য়ের ক্ষেত্রে নরম মনোভাব দেখাচ্ছে। এ নিয়ে জোর বিতর্ক মাথাচাড়া দেয়। রিপোর্টে অজ্ঞাতপরিচয় ফেসবুকেরই ভিতরের লোকজনের সাক্ষাত্কারের উল্লেখ করে দাবি করা হয়, কোম্পানির ভারত সংক্রান্ত সিনিয়র পলিসি এক্সিকিউটিভ আঁখি দাশ রাজা সিংয়ের ওপর যাতে নিষেধাজ্ঞা না জারি হয়, সেজন্য সংস্থার অভ্যন্তরীণ কনটেন্ট রিভিউ প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ করেছেন। রাজার একাধিক পোস্টের নিশানা ছিল মুসলিম সম্প্রদায়। কিন্তু আঁখি নাকি সংস্থার কর্মীদের বোঝান, বিজেপি নেতাদের বিরুদ্ধে এমন কারণে শাস্তিমূলক পদক্ষেপ করা হলে ভারতে কোম্পানির ব্যবসায়িক স্বার্থ মার খাবে।
এদিকে বিজেপির আইটি সেলের প্রধান অমিত মালব্য সরাসরি রাজাকে ফেসবুকে নিষিদ্ধ করা নিয়ে কিছু না বললেও দেশের নীতি-নিয়ম মেনেই ঘৃণা, বিদ্বেষমূলক ভাষণের সংজ্ঞা স্থির করা উচিত বলে অভিমত জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ভারতে ঘৃণা, বিদ্বেষমূলক ভাষণ কোনটা, সেটা ঠিক হবে আমাদের সাংবিধানিক ফ্রেমওয়ার্ক ও বিদ্যমান নিয়ম-নীতির ওপর। রাজনৈতিক আনুগত্য নির্বিশেষে সবার ক্ষেত্রে সমান ভাবে তা প্রয়োগ করা উচিত। সনিয়া গাঁধীর বিভেদকামী ভাষণ ফেসবুকে লাইভ সম্প্রচারিত হয়েছে, তার জেরে দিল্লিতে ব্যাপক দাঙ্গা-হাঙ্গামা, মৃত্যু, ধ্বংসলীলা চলেছে। তিনিও অন্য় যে কারও মতোই সমান দোষী। দ্বিচারিতা চলতে পারে না।