নয়াদিল্লি: যুদ্ধের ক্ষত আজও বয়ে চলেছে পৃথিবী। তা সত্ত্বেও থেমে নেই হানাহানি, চোখরাঙানি (World War 2)। সেই আবহেই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের দগদগে স্মৃতি আরও একবার তাজা হয়ে উঠল। আট দশক আগে তলিয়ে যাওয়া জাহাজের হদিশ মিলল জলের নিচে। যুদ্ধকালীন বন্দি, সৈনিক এবং সাধারণ নাগরিকদের নিয়ে দক্ষিণ চিন সাগরে তলিয়ে গিয়েছিল জাহাজটি (Japanese Ship)।  


অলাভজনক একটি সংস্থা গভীর সমুদ্রে জাহাজটির হদিশ পেল


অস্ট্রেলিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রিচার্ড মার্লস শনিবার জাহাজটির হদিশ মেলার খবর জানান। সামুদ্রিক প্রত্নতত্ত্ব বিষয়ক অলাভজনক একটি সংস্থা গভীর সমুদ্রে জাহাজটির হদিশ পেয়েছে। তাদের সঙ্গে তল্লাশিতে সহযোগিতা করছিল অস্ট্রেলিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রকও। সমুদ্রের নিচে, ১৩ হাজার ১২৩ ফুট গভীরে জাহাজটির ধ্বংসাবশেষের হদিশ মিলেছে বলে জানা গিয়েছে (History)। 


ফিলিপিন্স উপকূলের কাছে, উত্তর-পশ্চিমের লুজন দ্বীপপুঞ্জের কাছে, জলের নিচে জাহাজটির হদিশ মিলেছে। জাহাজটির নাম SS Montevideo Maru. দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে অক্ষশক্তির অংশ ছিল জাপান। সে দেশের বাণিজ্য জাহাজ ছিল SS Montevideo Maru. যুদ্ধের সময় সেটি পণ্য সরবরাহ থেকে বন্দি পারাপার করানোর কাজে ব্যবহৃত হচ্ছিল। 


আরও পড়ুন: Visva Bharati: ‘বিশ্ববরেণ্য অমর্ত্যকে হেনস্থা, ভারতের লজ্জা’, বিশ্বভারতীর নিন্দা বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদের


১৯৪২ সালের জুলাই মাসে, যুদ্ধ চলাকালীন, পাপুয়া নিউ গিনি থেকে চিনের হাইনান যাচ্ছিল জাহাজটি। জাহাজ উপরে থাকলেও, জলের তলায় থাকা ডুবোজাহাজের সঙ্গে সংযুক্ত ছিল সেটি। সেই সময়ই ক্ষেপণাস্ত্র আছড়ে পড়ে। তাতেই জলের নিচে তলিয়ে যায় জাহাজটি। সেই সময় একাধিক দেশের বন্দি, সৈনিক এবং সাধারণ নাগরিক মিলিয়ে হাজারের বেশি মানুষ ছিলেন। অস্ট্রেলীয় সৈনিকের সংখ্যাই ছিল ৮৬৪। তবে তা সকলের অগোচরে ছিল। রকেট আছড়ে পড়তেই ১০ মিনিটের মধ্যে তলিয়ে যায় জাহাজটি। সকলের সলিল সমাধি ঘটে। অস্ট্রেলিয়ার নৌবাহিনীর ইতিহাসে এত বড় বিপর্যয়ের নজির নেই। 


জাহাজে অস্ট্রেলিয়ার ৮৬৪ জন সৈনিক ছিলেন


এত বছর পর তাই জাহাজটির খোঁজ মেলায় আবেগঘন হয়ে পড়েছেন সকলে। অস্ট্রেলিয়া সরকার জানিয়েছে, এত বছর ধরে প্রিয়জনকে চোখের দেখা না দেখতে পাওয়ার যন্ত্রণা বয়ে বেড়াচ্ছিলেন মৃত সৈনিকদের পরিবারের সদস্যরা। তাই একটা সমাপ্তির প্রয়োজন ছিল। তবে জাহাজটি তুলে আনা, বা সেখান থেকে কোনও রকমের নমুনা সংগ্রহের তেমন ইচ্ছা নেই সে দেশের সরকারের। এতে যন্ত্রণা আরও বাড়বে বলে মত তাদের।