কায়রো: মিশরের দুটি শহরের গির্জায় জোড়া বিস্ফোরণে অন্তত ৪৫ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। আহতের সংখ্যা ১২০ ছাড়িয়েছে। হামলার দায় স্বীকার করেছে ইসলামিক স্টেট বা আইএস।


খবরে প্রকাশ, প্রথম বিস্ফোরণ ঘটে রাজধানী কায়রো থেকে প্রায় ১২০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত মিশরের নীলনদের পার্শ্ববর্তী তান্তা শহরের মার গির্গিস কপটিক চার্চে, যা সেন্ট জর্জ নামেও পরিচিত। বিস্ফোরণে অন্তত ২৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন ৭৮ জন।


ঘর্বিয়া প্রদেশের স্বাস্থ দফতরের সহকারী সচিব জানান, আহতদের চিকিৎসা করার জন্য সামরিক হাসপাতালগুলিকে নির্দেশ দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট আব্দেল ফাতাহ এল-সিসি।


তিনি জানান, প্রায় ২৬টি অ্যাম্বুলেন্স ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে। আহতদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। ফলে, মৃতের সংখ্যা বাড়তে পারে বলে অনুমান।


প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, পাম সানডে উপলক্ষে বহু মানুষ প্রার্থনার জন্য ওই চার্চে জমায়েত হয়েছিলেন। সেই সময় কোনও ব্যক্তি প্রার্থনাস্থলে বিস্ফোরক রেখে দেয়। অপর সূত্র জানিয়েছে, বিস্ফোরণ ঘটায় এক আত্মঘাতী জঙ্গি।



এক কয়েক ঘণ্টার মধ্যে দ্বিতীয় বিস্ফোরণটি ঘটে আলেকজান্দ্রিয়া শহরের মানশিয়া জেলার সেন্ট মার্ক চার্চে। এখানেও পাম সানডে উপলক্ষে সমবেত হয়েছিলেন মানুষজন।বিস্ফোরণে অন্তত ১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। প্রায় ৪৫ জন আহত হয়েছেন।


হামলার পরই নিজেদের নিউজ এজেন্সি আমাক-এর মাধ্যমে হামলার দায় স্বীকার করে নেয় আইএস। এছাড়া, তান্তা শহরে সিদি আব্দেল রহিম মসজিদে ২টি বোমা নিষ্ক্রিয় করে নিরাপত্তাবাহিনী।


জোড়া বিস্ফোরণের পর বৈঠকে বসে সেদেশের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদ। হামলার তীব্র নিন্দা করেছে মিশরের সুন্নি মুসলিমদের সর্বোচ্চ সংগঠন আল-আজহার।


এর আগেও, দেশের সংখ্যালঘু ক্রিশ্চানদের ওপর হামলা চালিয়েছে জঙ্গিরা। ২০১৩ সালে মুসলিম ব্রাদারহুডের নেতা তথা প্রেসিডেন্ট মহম্মদ মোরসিকে উৎখাত করে সেদেশের সেনাবাহিনী।


তার পর থেকেই দেশে দেশে একাধিক জঙ্গি হামলা ঘটিয়েছে ইসলামিক জঙ্গি সংগঠনগুলি। এখানে বলে রাখা প্রয়োজন, মিশরে কপ্টিক ক্রিশ্চানদের সংখ্যা দেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় ১০ শতাংশ।


চলতি মাসের শেষেই মিশর সফরে আসার কথা পোপ ফ্রান্সিসের। তার আগেই এদিনের জোড়া বিস্ফোরণ দেশের নিরাপত্তায় বড় প্রশ্নচিহ্ন তুলল।