ইসলামাবাদ: নওয়াজ শরিফের ভাই শেহবাজ পার্লামেন্টের সদস্য নির্বাচিত না হওয়া পর্যন্ত পাকিস্তানের অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী থাকবেন শাহিদ খাকান আব্বাসি। শনিবার শরিফের নেতৃত্বে এক বৈঠকে শাসক দল পিএমএল-এন প্রাক্তন পেট্রোলিয়াম মন্ত্রীকে অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বেছে নিয়েছে। শরিফের প্রধানমন্ত্রী পদে থাকার যোগ্যতা খারিজ করে দেওয়ার রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে রিভিউ পিটিশন দাখিল করারও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে এই বৈঠকে।

গতকাল পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট এক রায়ে বলেছে, পার্লামেন্ট ও বিভিন্ন আদালতের সঙ্গে অসৎ আচরণ করেছেন শরিফ। তাই তিনি প্রধানমন্ত্রী পদে থাকার যোগ্যতা হারিয়েছেন। পানামা গেট দুর্নীতি কেলেঙ্কারিতে তাঁর বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলার বিচারের জন্য সেটি দুর্নীতি দমন আদালতে পাঠিয়েছে শীর্ষ আদালত। সর্বসম্মতির ভিত্তিতে দেওয়া রায়ে আদালত এও নির্দেশ দিয়েছে, শরিফের বিরুদ্ধে একটি মামলা রুজু করতে হবে, তাঁর ও তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে রেফারেন্স পাঠাতে হবে অ্যাকাউন্টেবিলিটি কোর্টে। ৬ সপ্তাহের মধ্যে পাক প্রধানমন্ত্রী বিরুদ্ধে মামলার নিষ্পত্তি করে ফেলতেও ন্যাশনাল অ্যাকাউন্টেবিলিটি ব্যুরোকে নির্দেশ দিয়েছে সর্বোচ্চ আদালত।

আদালতের এই রায়ের পর প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিতে বাধ্য হন শরিফ। এরপর থেকেই তাঁর উত্তরসূরি বাছা নিয়ে আলোচনা শুরু করে দেয় পিএমএল-এন। দৌড়ে ছিলেন শেহবাজ ও আব্বাসি। শরিফের আস্থাভাজন হিসেবে পরিচিত আব্বাসিকেই ৪৫ দিনের জন্য প্রধানমন্ত্রী বেছে নেওয়া হল। এই সময়ের মধ্যে শেহবাজ পার্লামেন্টের সদস্য নির্বাচিত হয়ে গেলে পদত্যাগ করবেন আব্বাসি।

অতীতেও পাকিস্তানে এই ধরনের ঘটনা দেখা গিয়েছে। পারভেজ মুশারফের সময় তাঁর মনোনীত শওকত আজিজকে তাঁর দল ক্ষমতাসীন পাকিস্তান মুসলিম লিগ-কিউ তাঁকে জিতিয়ে নিয়ে আসা পর্যন্ত চৌধুরি সুজ্জাত হুসেইনকে অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী করা হয়েছিল। এবারও সেভাবেই অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী হলেন আব্বাসি।

শরিফের ভাই লাহৌরে তাঁরই নির্বাচনী কেন্দ্র থেকে লড়াই করবেন বলে জানা গিয়েছে। অন্যতম বিরোধী দল তেহরিক-ই-ইনসাফ আগেই শরিফের কেন্দ্রে প্রার্থী হিসেবে ড. ইয়াসমিন রশিদের নাম ঘোষণা করেছে। ২০১৩ সালের সাধারণ নির্বাচনে শরিফের কাছে হেরে গিয়েছিলেন ইয়াসমিন। তিনি ফের লড়াই করবেন।

শেহবাজকে প্রধানমন্ত্রী করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও, সবচেয়ে বড় সমস্যা হল, পঞ্জাবে সরকার চালানোয় তাঁর বিকল্প কেউ নেই। পাকিস্তানের শাসন ক্ষমতায় থাকতে গেলে পঞ্জাবের নিয়ন্ত্রণ হাতে রাখা যে কোনও দলের কাছেই অত্যন্ত জরুরি। সূত্রের খবর, শেহবাজের ছেলে হামজা সম্ভাব্য মুখ্যমন্ত্রীদের দৌড়ে থাকতে পারেন।