নয়াদিল্লি: হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে রয়েছেন সলমন রুশদি (Salman Rushdie)। সেই আবেহই এ বার ‘হ্যারি পটার’ স্রষ্টা জেকে রাওলিংকে (JK Rowling) খুনের হুমকি। রুশদিকে কোপানো নিয়ে ট্যুইটারে নিজের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিলেন রাওলিং। তার পরই তাঁকে খুনের হুমকি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ তাঁর। হুমকি-বার্তার স্ক্রিনশটও সোশ্যল মিডিয়ায় তুেল ধরেছেন তিনি।
জেকে রাওলিংকে খুনের হুমকি
মেসেজে তাঁকে হুমকি দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন রাওলিং। তিনি যে স্ক্রিনশট তুলে ধরেছেন, তাতে লেখা রয়েছে, ‘চিন্তা কোরো না। এ বার তোমার পালা।’’ ‘ট্যুইটার সাপোর্ট’ নামাঙ্কিত একটি হ্যান্ডল থেকে তিনি ওই হুমকি পান। সেই স্ক্রিনশট তুলে ধরে তাই রাওলিং লেখেন, ‘আমার সাপোর্ট পাওয়ার কোনও সম্ভাবনা আছে কি’! তার পর থেকে রাওলিংয়ের নিরাপত্তা নিয়েও আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
তাঁকে নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশের জন্য সকলেক ধন্যবাদ জানিয়েছেন রাওলিং। তিনি লেখেন, ‘‘আমার সমর্থনে এগিয়ে আসার জন্য ধন্যবাদ। পুলিশ বিষয়টি খতিয়ে দেখছে’। এর আগেও এমন হুমকি এসেছে তাঁর কাছে, তাই পুলিশে আগাগোড়াই বিষয়টি দেখছে বলে জানিয়েছেন রাওলিং।
নিউ ইয়র্ক সিটিতে রুশদির উপর হামলায় স্তম্ভিত গোটা দুনিয়া। তাই নিয়ে নিজের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিলেন রাওলিংও। জানিয়েছিলেন, এমন কিছু ঘটতে পারে, বিশ্বাস করতে পারছেন না তিনি। অসুস্থ বোধ করছেন।
আরও পড়ুন: US-India Relations: লুকিয়ে রাশিয়ার তেল বইছে ভারত! অভিযোগ তুলল আমেরিকা, বাড়ছে উদ্বেগ
ভারতীয় বংশোদ্ভূত, ব্রিটিশ লেখক রুশদি বহু বছর ধরেই খুনের হুমকি পাচ্ছিলেন। ‘দ্য সেটানিক ভার্সেস’ বইটি প্রকাশিত হওয়ার পর তাঁর বিরুদ্ধে ফতোয়া জারি করেছিল ইরান। তাঁর মাথার দামও ঘোষণা করা হয়েছিল। একাধিক দেশে নিষিদ্ধ হয়ে যায় তাঁর লেখা বইটি। তার জেরে জীবনের একটা বড় সময় লুকিয়ে বেড়ালেও, বিগত কয়েক বছরে নিরাপত্তা নিয়ে বিশেষ ভাবিত ছিলেন না রুশদি। বরং স্বাভাবিক জীবন যাপনই করতেন তিনি।
কিন্তু সম্প্রতি নিউ ইয়র্ক সিটিতে একটি অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করতে মঞ্চ উঠলে তাঁর উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে হাদি মাতার নামের ২৪ বছরের এক যুবক। সোশ্যাস মিডিয়ায় নিজেকে ‘ইরান সমব্যাথী’ বলে উল্লেখ করেছেন হাদি। নিজেকে ‘শিয়া চরমপন্থা’র সমর্থক বলেও দাবি করেছেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ছুরি নিয়ে মঞ্চে উঠে এলোপাথাড়ি রুশদিকে কোপাতে থাকেন হাদি। তাঁকে হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ।
অত্য়ন্ত সঙ্কটজনক অবস্থায় হাসপাতালে সলমন রুশদি
লেবানন থেকে আমেরিকায় চলে এসেছিল হাদির পরিবার। আমেরিকাতেই জন্ম তাঁর। তবে ইরান সমর্থিত লেবাননের সশস্ত্র সংগঠন হেজবুল্লা রুশদির উপর আক্রমণ থেকে দূরত্ব বাড়িয়েছে। এই হামলার সঙ্গে তাদের কোনও সংযোগ নেই বলে জানিয়েছে তারা। তবে ইরানের সংবাদপত্রে রুশদির উপর হামলায় সন্তুষ্টি প্রকাশ করা হয়েছে বলে খবর।
এই মুহূর্তে হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে রয়েছেন রুশদি। একটি চোখে তিনি দৃষ্টি শক্তি হারাতে পারেন বলে জানা গিয়েছে। তাঁর অবস্থা অত্যন্ত সঙ্কটজনক।