কাবুল: ২০ বছরের যুদ্ধের আনুষ্ঠানিক অবসান। নির্ধারিত সময়ের একদিন আগেই আফগানিস্তানের মাটি ছাড়ল মার্কিন সেনা। আমেরিকার সব সেনা আফগানভূম ছাড়তেই "সম্পূর্ণ স্বাধীনতার" ঘোষণা করল তালিবান। আতশবাজি, গোলাবর্ষণ করেই তার উদযাপনও চলে।
নির্ধারিত সময়ের একদিন আগেই শেষ মার্কিন সেনা আফগানিস্তানের মাটি ছাড়ায় উল্লাসে ফেটে পড়েছে তালিবান। শূন্য গুলি ছুড়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করতে দেখা যায় অনেককে। কেউ কেউ আবার রকেট ছুড়তে শুরু করে। কাবুলে ঘনঘন শোনা যায় রকেট ও গুলির শব্দ। তালিবানরা রাস্তায় বেরিয়ে আনন্দ করতে থাকে। তালিবানের তরফে জানানো হয়েছে, আফগানিস্তানের সময় রাত ৯টা নাগাদ শেষ মার্কিন সেনা কাবুল ছেড়ে গেছে। ফলে আফগানিস্তান এখন সম্পূর্ণ স্বাধীন।
তালিবান মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ মঙ্গলবার বলেন, "আমেরিকান সেনারা কাবুল বিমানবন্দর ছেড়ে চলে গিয়েছে। আমাদের দেশ এখন সম্পূর্ণ স্বাধীন।" পেন্টাগন জানিয়েছে, ৩০ অগস্ট, অর্থাত্ গতকালই সব মার্কিন সেনাকে ফিরিয়ে নেওয়া হয়েছে। শেষ সেনা হিসেবে C-17 বিমানে ওঠেন মেজর জেনারেল ক্রিস ডোনাহিউ।
সোমবার মধ্যরাতের দিকে শেষ মার্কিন বিমানগুলি রাতের আকাশে অদৃশ্য হতেই শূন্যে বন্দুক ছুঁড়ে উদযাপনে মেতে ওঠে তালিবরা। ২০ বছরের বিদ্রোহের শেষে বিজয় উদযাপনের চিত্র সামনে আসে। পেন্টাগনের তরফে জানানো হয়েছে, আফগানিস্তানে আমেরিকার আর কোনও কূটনৈতিক প্রতিনিধি নেই। ওই অফিস কাতারের দোহায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। পরবর্তী স্তরে দোহা থেকেই কাবুলের সঙ্গে কূটনৈতিক দৌত্য চালানো হবে।
আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন জানিয়েছেন, ১ লক্ষ ২০ হাজারের বেশি আমেরিকা, আফগানিস্তান ও অন্য দেশের নাগরিকদের কাবুল থেকে সরানো হয়েছে। তবে সূত্রের দাবি, প্রায় দুশো জন মার্কিন নাগরিক ও আফগানিস্তানের অসংখ্য মানুষ কাবুল ছাড়তে পারেননি।
আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের সময়সীমা আজই শেষ হচ্ছে। তার আগে গতকালও একাধিক রকেট হামলা চলল কাবুল বিমানবন্দর চত্বরে। তবে এয়ার ডিফেন্স সিস্টেমে সবকটি হামলাই রুখে দেওয়া গিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে সেখানে এখনও বেশ কয়েকজন ভারতীয় আটকে রয়েছেন। আটকে রয়েছেন ৩০০ জন মার্কিন নাগরিকও। একটি গাড়ি থেকে ছোড়া হল পরপর ৫টি রকেট। কাবুলে মার্কিন এয়ার স্ট্রাইকের সংখ্যা বেড়ে ১২, দাবি আল জাজিরার। মার্কিন হানায় মৃত্যু হয়েছে ৬ শিশুর, খবর সিএনএম সূত্রে। নাশকতা রুখতে ড্রোন হামলা চালায় মার্কিন বাহিনী।