ওয়াশিংটন: সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে পাকিস্তানকে দীর্ঘস্থায়ী, যাচাইসাপেক্ষ ও অপরির্তনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলল আমেরিকা। সেই সঙ্গে ওয়াশিংটন হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, ভারতে আর কোনও সন্ত্রাসবাদী হামলা হলে পরিস্থিতি পাকিস্তানের পক্ষে ‘চূড়ান্ত সমস্যাসঙ্কুল’ হয়ে উঠবে।
হোয়াইট হাউসে মার্কিন প্রশাসনের এক পদস্থ আধিকারিক বলেছেন, ওই অঞ্চলে জইশ-ই-মহম্মদ ও লস্কর-ই-তৈবার মতো জঙ্গি গোষ্ঠীগুলির বিরুদ্ধে পাকিস্তানের যথার্থ ও দীর্ঘস্থায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের প্রয়োজন রয়েছে। ওই অঞ্চলে উত্তেজনার পারদ যাতে আর না বাড়ে তা নিশ্চিত করেই পাকিস্তানের ওই ব্যবস্থা গ্রহণের প্রয়োজন।
ওই আধিকারিক বলেছেন, ওই গোষ্ঠীগুলির বিরুদ্ধে পাকিস্তান দীর্ঘস্থায়ী ও যযার্থ পদক্ষেপ গ্রহণ না করলে আর কোনও সন্ত্রাসবাদী হামলা হলে তা পাকিস্তানের পক্ষে চূড়ান্ত সমস্যাসঙ্কুল হয়ে পড়বে এবং তা উত্তেজনার মাত্রা বৃদ্ধি করবে, যা উভয় দেশের কাছেই বিপজ্জনক।
বালাকোটে ভারতীয় বায়ুসেনার প্রত্যাঘাতের পর পাকিস্তান কী ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে, সে সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে ওই আধিকারিক বলেছেন, আমেরিকা ও আন্তর্জাতিক মহলের জঙ্গি গোষ্ঠীগুলির বিরুদ্ধে পাকিস্তানের অপরিবর্তনীয় ও দীর্ঘস্থায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্ব দিয়েছে। এখনই এ ব্যাপারে পূর্ণাঙ্গ পর্যালোচনার সময় আসেনি।
ওই আধিকারিক বলেছে, সাম্প্রতিক দিনগুলিতে পাকিস্তান কিছু ‘প্রাথমিক’ ব্যবস্থা নিয়েছে। তারা কয়েকটি জঙ্গি গোষ্ঠীর সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করেছ এবং কয়েকজনকে গ্রেফতারও করেছে। জইশের কয়েকটি ঘাঁটির প্রশাসনিক দখলও নিয়েছে তারা।
তিনি বলেছেন, এটাই যথেষ্ট নয়। আরও ব্যবস্থা গ্রহণের প্রয়োজন রয়েছে। এক্ষেত্রে অপরিবর্তনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের প্রয়োজন রয়েছে। কেননা, অতীতে দেখা গিয়েছে যে, পাকিস্তান কয়েকজনকে গ্রেফতার করলেও কয়েকমাস পর তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। সন্ত্রাসবাদী নেতাদের সারা দেশ ঘুরে সভা সমাবেশ করারও অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
ওই আধিকারিক বলেছেন, জঙ্গি গোষ্ঠীগুলির বিরুদ্ধে ধারাবাহিক ব্যবস্থা গ্রহণে পাকিস্তানের ওপর চাপ বাড়াতে আমেরিকা তার আন্তর্জাতিক সহযোগীদের সঙ্গে মিলে কাজ করছে।
ওই মার্কিন আধিকারিক আরও বলেছেন, আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে দায়িত্বপূর্ণ দেশ হয়ে ওঠে সমস্ত আর্থিক ব্যবস্থা সংক্রান্ত সুবিধা গ্রহণের সুযোগ পাকিস্তান নেবে বা জঙ্গি গোষ্ঠীগুলির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণে ব্যর্থতার জন্য আন্তর্জাতিক মহল থেকে আরও বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত পাকিস্তানকেই নিতে হবে।
উল্লেখ্য, গত ১৪ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানের জঙ্গি সংগঠন জইশের সন্ত্রাসবাদী হামলায় কাশ্মীরের পুলওয়ামায় ৪০ জন সিআরপিএফ জওয়ানের মৃত্যু হয়। এই ঘটনার পর ভারত পাল্টা আঘাত করে। বালাকোটে জইশের ঘাঁটি ধ্বংস করে দেয় ভারতীয় বায়ুসেনা। এর জেরে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনার পারদ বেড়ে যায়।