বেজিং: অরুণাচল প্রদেশকে ভারতের বলে মানতে বরাবরই নারাজ। চিনের দাবি, অরুণাচল, বিশেষত তাওয়াং তিব্বতের দক্ষিণ অংশ। সে কারণে দলাই লামার অরুণাচল সফরেরও বিরোধী বেজিং। এবার চিনের সরকার নিয়ন্ত্রিত দৈনিকের দাবি, অরুণাচলে ভারতের শাসন 'অবৈধ'। চায়না ডেইলি নামে ওই দৈনিকের বক্তব্য,  ভারতের বেআইনি শাসনে দক্ষিণ তিব্বতের লোকজন কঠিন পরিস্থিতিতে জীবনযাপন করছেন, নানা ধরনের বৈষম্যের শিকার তাঁরা। চিনে ফিরতে মুখিয়ে রয়েছেন তাঁরা।

যদিও তিব্বতে চিনা শাসনের বিরুদ্ধে মাঝেমধ্যেই যে বিক্ষোভ হয়ে থাকে, এপর্যন্ত ১২০ জনের বেশি তিব্বতী আত্মহত্যাও করেছেন, সে প্রসঙ্গে রা কাড়েনি দৈনিকটি।

ওই দৈনিকে প্রকাশিত নিবন্ধে কটাক্ষ করা হয়েছে, দলাই লামার সফর দেখাল, ভারত তাঁর বিচ্ছিন্নতাবাদী বাহিনীকে যে সমর্থন দিচ্ছে, তার বিনিময়ে তাওয়াং জেলা ওদের হাতে তুলে দিতে অপেক্ষা করতে পারছেন না উনি।

নিবন্ধে নোবেলজয়ী তিব্বতী ধর্মগুরু প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, চতুর্দশ দলাই লামার যে পরিচয় চিরকাল থেকে যাবে, তা হল, তিনি সমস্যা তৈরি করেন। দলাই লামার অরুণাচল সফর তাঁর 'নিজের, মানুষজন, দেশ ও আঞ্চলিক শান্তির প্রতি প্রতারণার সাক্ষ্য বহন করছে' বলেও মন্তব্য করা হয়েছে চিনা দৈনিকটিতে। তাঁকে আক্রমণ করা হয়েছে এই বলেও যে, অস্তিত্বের জন্য দলাই ভারতের ওপর নির্ভরশীল।  প্রভুকে খুশি করতে তাঁর এই ব্যাকুলতা বোধগম্য, তবে তিনি প্রভুর প্রশ্রয়ের বিনিময়ে দক্ষিণ তিব্বতকে বেচে দিয়ে বাড়াবাড়ি করে ফেলেছেন। সাম্প্রতিক বছরগুলিতে নিজেকে বার কুড়ির বেশি 'ভারতের সন্তান' বলেছেন উনি। এবারের সফরে ওই ভূখণ্ড ভারতকে বিক্রি করে দিয়ে উনি নিজের সেই পরিচিতি আরও পোক্ত করলেন বটে, তবে ভারত-চিন সীমান্ত বিরোধ মেটানো, আঞ্চলিক শান্তি, স্থিতিশীলতার পথে যে কাঁটা বিছিয়ে দিলেন, সেটা ভাবলেনই না।

সম্প্রতি ৯ দিন অরুণাচল ঘুরে গিয়েছেন দলাই লামা। সে প্রসঙ্গে দৈনিকটি বলেছে, আঞ্চলিক শান্তি জলাঞ্জলি দিয়েছেন উনি। শান্তিপূর্ণ ভাবে সীমান্ত বিরোধ মেটাতে গেলে ভারত ও চিন, দু দেশের জনগণেরই দৃঢ়তা, শুভবোধ প্রয়োজন। কিন্তু দলাইয়ের এই সফর এ ব্যাপারে কোনও সাহায্য করবে না।