নয়াদিল্লি: গ্রহাণু (Asteroid) আছড়ে পড়ে পৃথিবী থেকে নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছিল ডায়নোসর (Dinosaur Extinction)। চাঁদেও (Moon) তেমনই একটি গ্রহাণু আছড়ে পড়়েছিল বলে এ বার সামনে এল তথ্য়। চিনের চেঞ্জ’ই-ফাইভ মহাকাশ যান চাঁদের মাটি থেকে যে নমুনা পৃথিবীতে বয়ে এনেছে, তা পরীক্ষা করেই এমন তথ্য় হাতে পেলেন বিজ্ঞানীরা।
চাঁদেও আছড়ে পড়েছিল গ্রহাণু!
চাঁদের বুকে ছোট-বড় কমপক্ষে ৯ হাজারের বেশি গহ্বর রয়েছে। তার নেপথ্য কারণ জানতে বহু বছর ধরে গবেষণা করছেন বিজ্ঞানীরা। চিনা মহাকাশযানের বয়ে আনা নমুনা সেই রহস্য সমাধানের পথ সুগম করল বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা। মহাকাশ গবেষণার কাজেও এই তথ্য সাহায্য করবে বলে বিশ্বাস তাঁদের।
২০২০ সালে চাঁদের মাটি থেকে ওই নমুনা সংগ্রহ করে এনেছিল চিনা মহাকাশযান। তা শুধু নিজেদের হাতে না রেখে, গোটা বিশ্বের মহাকাশ বিজ্ঞানীদের সঙ্গেই ভাগ করে নিয়েছিল চিন, যাতে বিশদ গবেষণা চালিয়ে রহস্য উদঘাটন করা যায়। এতদিন পর তার সুফল মিলল।
আরও পড়ুন: 5G Network: অক্টোবরেই ভারতে আসছে ৫জি পরিষেবা, জেনে নিন এই টেলিকমিউনিকেশন সার্ভিসের খুঁটিনাটি
গবেষকরা জানিয়েছেন, অতি সূক্ষ্ম, কাচের মতো দানাগুলি আসলে অত্যধিক তাপমাত্রা এবং মহাজাগতিক বস্তুর চাপে তৈরি হয়েছে। জ্যোতির্বিজ্ঞান সম্পর্কিত জার্নাল ‘সায়েন্স অ্যাডভান্সেস’-এ প্রকাশিত বিশদ রিপোর্টে বলা হয়েছে, অতি সূক্ষ্ম ওই দানাগুলি আয়তনে কয়েক মাইক্রোমিটার থেকে কয়েক মিলিমিটার পর্যন্ত। সেগুলির কোনওটি গোলাকার, কোনওটি ডিম্বাকার, কোনওটি আবার ডাম্বেলের মতো দেখতে।
অনুবীক্ষণ যন্ত্রের নিচে সেগুলি ধরে, ক্রামানুসারে সাজিয়ে, বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে তার গঠন এবং বয়স নির্ধারণের চেষ্টা করেন বিজ্ঞানীরা। তাতে এখনও পর্যন্ত যে তথ্য সামনে এসেছে, তাতে দেখা যাচ্ছে, অধুনা মেক্সিকোর অন্তর্গত ইউকাতান উপদ্বীপের নিচে থাকা চিক্সুলুপ গহ্বর যে সময় তৈরি হয়েছিল, সেই সময়ই এই চাঁদের মাটি থেকে সংগৃহীত নমুনাগুলিরও সৃষ্টি।
আজ থেকে প্রায় ৬ কোটি ৬০ লক্ষ বছর আগে চিক্সুলুব গহ্বরের ওই জায়গাতেই আছড়ে পড়েছিল ১০ কিলোমিটার আয়তনের একটি গ্রহাণু। তার প্রভাবেই পৃথিবী থেকে নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছিল ডায়নোসর। তাই পৃথিবীর পাশাপাশি চাঁদ-সহ সংলগ্ন গ্রহ,, উপগ্রহগুলিতেও একই ধরনের মহাজাগতিক বিপর্যয় ঘটে থাকতে পারে বলেও মনে করছেন বিজ্ঞানীরা।
মহাকাশ গবেষণা নতুন গতি পাবে!
আপাতত, চিনা মহাকাশযান আহরিত চাঁদের মাটির ওই নমুনা অন্য দেশের মহাকাশযানের বয়ে আনা নমুনার সঙ্গে মিলিয়ে দেখার প্রক্রিয়া শুরু হতে চলেছে। এতে আগামী দিনে এমন ঘনা ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে কি না, ঘটলে কোন সময় নাগাদ ঘটতে পারে, সেই সম্পর্কেও ধারা তৈরি হবে বলে আশাবাদী বিজ্ঞানীরা।