চট্টগ্রাম : বাংলাদেশে ফের পথে সংখ্যালঘুরা। বাংলাদেশ ইউনূস সরকার মুখে ধর্মনিরপেক্ষতার কথা বললেও , বাস্তব পরিস্থিতি এক্কেবারে আলাদা, দাবি স্থানীয় হিন্দুদের। ইতিমধ্যেই সে-দেশে হিন্দু ধর্মগুরুদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা দায়ের করা হয়েছে ৷ সংখ্যালঘুদের উপর একের পর এক হামলা, অত্যাচারের অভিযোগ আসছে সামনে ৷ এই আবহে ৩০ হাজার হিন্দু রাস্তায় নামছে স্বাধীকারের দাবিতে।
শুক্রবার বাংলাদেশে হিন্দু সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতনের বিরুদ্ধে বিরাট মিছিল আয়োজন করা হয় । চট্টগ্রামে বিরাট প্রতিবাদ মিছিল করে সংখ্যালঘু হিন্দুরা ৷ গত অগাস্টে হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকেই সংখ্যালঘু হিন্দুদের উপর অকথ্য অত্যাচার, নির্যাতনের অভিযোগ সামনে আসে। দেশের কোনা কোনা থেকে অভিযোগ আসতে শুরু করে, কেড়ে নেওয়া হয়েছে তাঁদের ধর্মীয় স্বাধীনতা ৷
হিন্দু গোষ্ঠীগুলির দাবি, অগাস্ট থেকেই নানাভাবে আক্রান্ত তাঁরা । শেখ হাসিনা দেশ ছাড়ার পর থেকেই তীব্র হয় অত্যাচার। প্রাণভয়ে বহু হিন্দু ভারতের সীমান্তে অপেক্ষা শুরু করেন। বাংলাদেশের হিন্দুদের বাঁচান বলে স্লোগান তোলেন, প্ল্যাকার্ড ধরেন। যদিও অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব নিয়ে নোবেল শান্তি বিজয়ী ইউনূস দাবি করেছে, সে দেশে সংখ্যালক্ষুরা সুরক্ষিত। কিন্তু বিক্ষোভরত হিন্দু জনগোষ্ঠী অভিজ্ঞতা কিন্তু তেমনটা নয়। হিন্দুস্তান টাইমসে প্রকাশিত পরিসংখ্যান বলছে, বাংলাদেশে প্রায় ১৭০ মিলিয়ন জনসংখ্যার মধ্যে হিন্দুরা প্রায় ৮%, আর মুসলমান সম্প্রদায়ের মানুষ ৯১ শতাংশ। বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের দাবি গত ৪ অগাস্ট থেকে হিন্দুদের উপর ২০০০ টিরও টিরও বেশি হামলা হয়েছে।
নিরাপত্তার দাবিতে আগেও একাধিকবার জমায়েত করেছেন হিন্দুরা। অতি সম্প্রতি চট্টগ্রামের পুণ্ডরীক ধামের অধ্যক্ষ চিন্ময় দাস-সহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে দেশদ্রোহিতার মামলা করা হয়েছে। সেই মামলা প্রত্যাহার ও হিন্দুদের সুরক্ষার দাবিতেই শুক্রবারের এই মিছিল।
চট্টগ্রামে গেরুয়া ধ্বজ উত্তোলন করায় ২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে । এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই পুলিশ ধরপাকড় শুরু করেছে। সেই সঙ্গ রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা করা হয়েছে ইসকনের চট্টগ্রাম শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক সহ ১৯ জনের নামে। এই নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রতিবাদ জানিয়েছেন তসলিমা নাসরিন। তিনি লেখেন, 'সনাতন জাগরণ মঞ্চ গত ২৫ অক্টোবর চট্টগ্রামের ঐতিহাসিক লালদীঘি ময়দানে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের অধিকার ও নিরাপত্তার আহ্বান জানিয়ে এক বিশাল সমাবেশের আয়োজন করে। হিন্দু সম্প্রদায়কে হয়রানি করার জন্য সমাবেশের আয়োজন করা। সেখানে গেরুয়া পতাকাটি একটি পৃথক বাঁশে আটকানো ছিল, এটি জাতীয় পতাকার অবমাননার জন্য মোটেই নয়। ইসলাম ধর্মান্ধরা সর্বদা জাতীয় পতাকার অবমাননা করে, তাদের অপরাধের জন্য তাদের কখনো গ্রেফতার করা হয়নি।'
দীপাবলির আগে বাংলাদেশের হিন্দুদের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগপ্রকাশ করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। তাঁর দাবি, 'বাংলাদেশে চূড়ান্ত অশান্তির পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। আমার নজরে থাকলে এমনটা কখনই হতে পারত না।' সেই সঙ্গে বাইডেন ও কমলা হ্যারিসের সমালোচনা করে তিনি লেখেন, 'আমেরিকা ও বিশ্বজুড়ে হিন্দুদের প্রতি অবহেলা করছেন তাঁরা। '
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে