ঢাকা: পরিকাঠামো ও সামাজিক ক্ষেত্রে উন্নয়নের জন্য ভারতের থেকে ৪.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার (ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ২৯ হাজার ৫০০ কোটি টাকা) ঋণ নেবে বাংলাদেশ। এই প্রেক্ষিতে দুদেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত হল লাইন অফ ক্রেডিট।


বুধবার, কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি ও বাংলাদেশের অর্থমন্ত্রী এ এম এ মুহিতের মধ্যে এই প্রসঙ্গে দীর্ঘ আলোচনা হয়। তারপর দুই মন্ত্রীর উপস্থিতিতে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। বাংলাদেশের তরফে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব কাজি শোফিকুল আজম। অন্যদিকে, ভারতের তরফে স্বাক্ষর করেন ইম্পোর্ট-এক্সপোর্ট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া (এক্সিম)-এর এমডি ডেভিড রাসকিনহা।


জানা গিয়েছে, এই ঋণের টাকা বিদ্যুৎ, রেল, সড়ক, জাহাজ ও বন্দর সহ মোট ১৭টি বড় প্রকল্পে ব্যবহার করবে বাংলাদেশ প্রশাসন। চুক্তি মোতাবেক, ঋণের পরিবর্তে বাংলাদেশ ভারতকে বছরে ১ শতাংশ সুদ দেবে। ঋণ ফেরত দিতে বাংলাদেশকে ২০ বছর সময় দেওয়া হয়েছে। এই সময়সীমার মেয়াদ আরও ৫ বছর বাড়ানোর সংস্থান রয়েছে চুক্তিতে।


এদিন জেটলি বলেন, গত সাত বছরে আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে বাংলাদেশের বিস্তর উন্নতি হয়েছে। তিনি যোগ করেন, বাংলাদেশের উন্নয়নের সঙ্গী হিসেবে ভারত আগেও ছলি, ভবিষ্যতেও থাকবে বলে আশ্বাস দেন জেটলি। তাঁর মতে, এই চুক্তি সেই আশ্বাসের অঙ্গীকার। প্রসঙ্গত, গত এপ্রিল মাসে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরের সময় এই ঋণের বিষয়টি ঘোষণা করা হয়েছিল। এদিন সেই ঘোষণাকে চূড়ান্ত রূপ দিলেন জেটলি।


চুক্তি অনুযায়ী, বাংলাদেশকে ৬৫ থেকে ৭৫ শতাংশ পরিষেবা, পণ্য এবং কাজ ভারত থেকে কিনতে হবে। অতীতে, ভারতের সঙ্গে আরও দুটি লাইন অফ ক্রেডিট স্বাক্ষর করেছিল বাংলাদেশ। প্রথমটি স্বাক্ষর করা হয়েছিল ২০১০ সালে। দ্বিতীয়টি হয় ২০১৬ সালে। দুটি ঋণের মোট পরিমাণ ছিল ৩.০৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। যদিও, গত বছর পর্যন্ত, মাত্র ৫৭৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ফেরত দিতে সক্ষম হয়েছে বাংলাদেশ।


এর মধ্যে, ৮৬২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের প্রথম ঋণের আওতায় থাকা কিছু প্রকল্পের কাজ শুরু হতে বিলম্ব হয়। আবার ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মুল্যের দ্বিতীয় ঋণের আওতায় থাকা ১৪টি প্রকল্পের কাজ শুরু হয়নি।