বেজিং : শ্রীলঙ্কার (Sri Lanka) গভীর সঙ্কটে পাশে দাঁড়িয়েছে ভারত। আর্থিক দেউলিয়া অবস্থা থেকে এই দ্বীপরাষ্ট্র যাতে বেরিয়ে আসতে পারে তার জন্য আর্থিক সাহায্য পাঠিয়েছে। ভারতের এই পদক্ষেপের প্রশংসা করল চিন (China)।
১৯৪৮ সালে ব্রিটেনের থেকে স্বাধীনতা লাভের পর সবথেকে চরম আর্থিক সঙ্কটে শ্রীলঙ্কা। আর এই আর্থিক সঙ্কটের জেরে সে দেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। বিক্ষোভকারীরা প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষের পদত্যাগ দাবি করেছেন।
আরও পড়ুন ; ইউরিয়ার পর ডিজেল, ফের শ্রীলঙ্কার পাশে ভারত
এই পরিস্থিতিতে চিনের বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র ঝাও লিজিয়ান বেজিংয়ে এক সাংবাদিক বৈঠকে প্রশ্ন করা হয়, শ্রীলঙ্কায় বিশাল বিনিয়োগকারী চিন কি এই সঙ্কটজনক পরিস্থিতিতে দ্বীপরাষ্ট্রকে সাহায্য করতে দ্বিধা করছে ? এর উত্তরে মুখপাত্র বলেন, আমরা দেখেছি ভারত সরকার এই পরিপ্রেক্ষিতে দারুণ চেষ্টা করেছে। আমরা তার স্বীকৃতি দিই। আমরাও ভারতের এবং আন্তর্জাতিক গোষ্ঠীর অন্য দেশগুলির সঙ্গে একযোগে শ্রীলঙ্কাকে সাহায্য কাজ করতে চাই। সমস্যায় থাকা অন্য দেশগুলিকেও তাদের পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসতে সাহায্য করতে চাই।
শ্রীলঙ্কা আর্থিকভাবে কার্যত দেউলিয়া ঘোষণা করেছে নিজেদের। চিনের মোট $৫১ বিলিয়ন সহ সমস্ত বিদেশি ঋণে খেলাপি হয়েছে। এই অবস্থায় লাইন ক্রেডিট এবং অন্য মাধ্যমে শ্রীলঙ্কাকে ৩ বিলিয়ন ডলার আর্থিক সাহায্য পাঠিয়েছে ভারত।
শ্রীলঙ্কায় আর্থিক সঙ্কটের কারণ-
প্রবল অর্থনৈতিক সঙ্কটে ভুগছে শ্রীলঙ্কা। কোভিডের (Covid) সময় থেকেই শুরু হয়েছে সমস্যা। দ্বীপরাষ্ট্রটির আয়ের একটি বড় অংশ আসে পর্যটন থেকে। কিন্তু, কোভিডের কারণে শূন্যে নেমেছিল পর্যটন (Tourism) থেকে আয়। তারপরেই সেদেশে চাষ নিয়ে একটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ১০০ শতাংশ জৈব চাষের কাজ শুরু হয়। কিন্তু পর্যাপ্ত পরিকাঠামো ছাড়াই এমন কাজ শুরু হওয়ায় মুখ থুবড়ে পড়ে গোটা বিষয়টি। শ্রীলঙ্কায় চরমে পৌঁছয় খাদ্য সঙ্কট। এই সময়েই শ্রীলঙ্কার বৈদেশিক মুদ্রার ভান্ডারও তলানিতে চলে যায়। সব মিলিয়ে চরম অর্থনৈতিক সঙ্কটে পড়ে শ্রীলঙ্কা। এই কারণেই দেশ জুড়ে শুরু হয় সরকার বিরোধী আন্দোলন। যার ফলে কীভাবে রাজনৈতিক সঙ্কট সামলে শ্রীলঙ্কার অর্থনৈতিক স্বাস্থ্য ফেরানো যাবে তা নিয়ে প্রবল চিন্তায় দ্বীপরাষ্ট্রের সরকার। এই পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে মাহিন্দ্রা রাজাপক্ষের পদত্যাগের পর থেকে রাজনৈতিক ডামাডোল (Political Turmoil) শুরু হয়েছে শ্রীলঙ্কায়।