বেজিং:  ব্রিকস সম্মলনে অংশ নিতে ভারতে আসছেন চিনের প্রেসিডেন্ট জি জিনপিং। তার আগে চিন জানাল যে, পরমাণু সরবরাহকারী গোষ্ঠী (এনএসজি)-তে ভারতের অন্তর্ভূক্তি নিয়ে তারা আলোচনায় রাজি। কিন্তু  পাকিস্তানের জঙ্গি সংগঠন জইশ-ই-মহম্মদের পাণ্ডা আজহার মাসুদ ওপর রাষ্ট্রপুঞ্জে ভারতের  নিষেধাজ্ঞা জারির প্রস্তাবের বিরোধিতায় অনড় চিন। এ ব্যাপারে চিনের সাফাই, সন্ত্রাস মোকাবিলার নামে  ‘রাজনৈতিক ফায়দা তোলা’র চেষ্টার বিরোধিতা করবে তারা।
জি-র ভারত সফরের আগে চিনের উপ বিদেশমন্ত্রী লি বাওডোং সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে ৪৮ সদস্য বিশিষ্ট এনএসজি-তে নতুন সদস্য নেওয়ার ব্যাপারে ফের ঐক্যমত গড়ে তোলার কথা বলেছেন।
ব্রিকস সম্মেলনের অবকাশে জি ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বৈঠকে এনএসজি নিয়ে কোনও রফাসুত্র পাওয়া যেতে পারে কিনা, এই প্রশ্নের উত্তরে লি বলেছেন, এনএসজিতে কোনও নতুন সদস্যকে নেওয়ার জন্য সদস্য দেশগুলিকে সহমত হতে হবে। এটাই এনএসজি-র আইন। এ ব্যাপারে চিন একা সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। ভারত ও চিনের সঙ্গে ভালো যোগাযোগ রয়েছে এবং ঐক্যমত গড়ে তোলার ব্যাপারে চিন ভারতের সঙ্গে আলোচনায় বসতে প্রস্তুত। একইসঙ্গে লি বলেছেন, এনএসজি-র অন্য সদস্য দেশগুলির সঙ্গেও বসতে হবে ভারতকে।
উল্লেখ্য, আগামী ১৫-১৬ অক্টোবর গোয়ায় ভারত-ব্রাজিল-চিন-দক্ষিণ আফ্রিকা-রাশিয়াকে নিয়ে গঠিত সংগঠন ব্রিকসের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। ওই সম্মেলনে যোগ দেবেন চিনের প্রেসিডেন্ট।
উল্লেখ্য, এনএসজি-তে সদস্যপদ না পাওয়ায় ভারত চিনের দিকে আঙুল তুলেছে। যদিও এরপর এ বিষয়ে মতপার্থক্য মেটাতে সম্প্রতি আলোচনায় বসেছে ভারত ও চিন। ভারতের সঙ্গে বৈঠকের পর পাকিস্তানের সঙ্গেও এ সংক্রান্ত বিষয়ে বৈঠক করেছে চিন। উল্লেখ্য, পাকিস্তানও এনএসজি সদস্যপদের আর্জি জানিয়েছে।
রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদে জইশের প্রধান পঠানকোটে বায়ুসেনা ঘাঁটিতে জঙ্গি হামলার চক্রী মাসুদ আজহারকে নিষিদ্ধ করার প্রস্তাব পেশ করেছে ভারত। কিন্তু চিনের আপত্তিতে দুবার সেই প্রস্তাব আটকে গিয়েছে। উল্লেখ্য, নিরাপত্তা পরিষদের একমাত্র দেশ হিসেবে মাসুদের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারির বিরোধিতা করেছে চিন। এ ব্যাপারে নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য হিসেবে চিনের টেকনিক্যাল হোল্ড-এর সাফাই দিতে গিয়ে উপ বিদেশমন্ত্রী বলেছেন, চিন সব ধরনের সন্ত্রাসবাদেরই বিরোধী। সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলার ক্ষেত্রে কোনও দুমুখো নীতি থাকতে পারে না। একইসঙ্গে সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলার নামে কেউ তার নিজস্ব রাজনৈতিক ফায়দাও তুলতে পারে না।
চিনের এই বক্তব্যে কার্যত ভারতের দিকেই আঙুল তোলা হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।