বেজিং: দুদিন আগেই পিপলস লিবারেশন আর্মি (পিএলএ)-র ৯০ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর সূচনা অনুষ্ঠানে ঘুরিয়ে হুমকি দিয়ে চিনের প্রেসিডেন্ট জি জিনপিং হুমকির সুরে বলেছিলেন, তাঁদের সেনাবাহিনী অনুপ্রবেশকারী শত্রুদের পরাস্ত করতে সক্ষম। ভারত সহ অন্যান্য প্রতিবেশী দেশগুলির সঙ্গে সীমান্ত সংক্রান্ত বিরোধের মধ্যে ফের হুঁশিয়ারি জিনপিংয়ের গলায়। তাঁর দাবি, চিনের মানুষ শান্তিপ্রিয়। চিন ‘আগ্রাসন’ বা ‘সম্প্রসারণ’ কখনওই চায়নি। কিন্তু চিনকে ‘টুকরো করার’ সুযোগ কাউকে দেওয়া হবে না। কোনও ব্যক্তি, সংগঠন বা রাজনৈতিক দলকে চিনের এক টুকরো জমিও কেড়ে নিতে দেওয়া হবে না।


জি ফের বলেছেন, সমস্ত অনুপ্রবেশকে দমন করতে সক্ষম চিনের সেনাবাহিনী।

পিএলএ-র প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষ্যে ভাষণে চিনের সামরিক কমিশনের সর্বেসর্বা জি তাঁর ভাষণে ডোকলাম সংক্রান্ত প্রসঙ্গ অবশ্য উল্লেখ করেননি।

গত জুন মাসের মাঝামাঝি থেকে ডোকলামে ভারত-চিন-ভুটানের সীমান্তের সংযোগস্থলে অচলাবস্থা চলছে। ওই অঞ্চলে রাস্তা নির্মাণ করার চেষ্টা করেছিল চিনের সেনা। ভারতীয় সেনাবাহিনী ওই চেষ্টায় বাধা দেয়। তারপর থেকে মুখোমুখি দাঁড়িয়ে রয়েছে ভারত ও চিনের সেনাবাহিনী। চিনের সরকারি সংবাদমাধ্যম ও সরকারি আধিকারিকরা নাগাড়ে ভারতকে হুমকি দিয়ে চলেছে। তাদের দাবি, ডোকলামে তাদের ভূখণ্ডে অনধিকার প্রবেশ করেছে ভারত। এরইমধ্যে চিনের প্রেসিডেন্টের বক্তব্য খুবই তাত্পর্য্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।

জি বলেছেন, দেশের সার্বভৌমত্ব, নিরাপত্তা ও উন্নয়নসংক্রান্ত স্বার্থ ক্ষুন্নকারী কোনও কিছু চিন গ্রহণ করবে, এমন আশা পোষণ করা কারুর উচিত নয়।

পিএলএ-র যুদ্ধপ্রস্তুতির ওপর গুরুত্ব আরোপ করে বাহিনীকে অপরাজেয় করে তোলার কথা বলেছেন জি। তিনি বলেছেন, এমন একটি এলিট ও শক্তিশালী বাহিনী গড়ে তুলতে হবে যা সর্বদা যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত থাকবে এবং নিশ্চিতভাবে জয়ী হবে।

জি বলেছেন, শান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষা এবং যুদ্ধ প্রতিহত করার অনেক উপায় ও বিকল্প রয়েছে। কিন্তু শান্তিরক্ষার চূড়ান্ত নিশ্চয়তা রয়েছে সামরিক বাহিনীর হাতেই।

ডোকলাম বিতর্কের মধ্যেই ব্রিকস সম্মেলনে অংশ নিতে গত ২৭ ও ২৮ জুলাই বেজিংয়ে ছিলেন ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল। তিনি চিনের স্টেট কাউন্সিলর ইয়াং জেইচির সঙ্গে পৃথক বৈঠকও করেন। বৈঠকের ফলাফল সম্পর্কে দুই দেশই নীরব।

ভারতের সঙ্গে ডোকলাম অচলাবস্থার পাশাপাশি জাপান, ফিলিপিন্স ও ভিয়েতনামের সঙ্গে সমুদ্র সীমা সংক্রান্ত  বিবাদ রয়েছে চিনের। তাইওয়ানের চিনের সঙ্গে সংযুক্তি নিয়ে আলোচনা ব্যর্থ হলে শক্তি প্রয়োগের হুমকি দিয়ে রেখেছে চিন।