কলকাতা : ইস্কনের হিন্দু সন্ন্যাসী কৃষ্ণদাস প্রভু ওরফে চিন্ময় কৃষ্ণদাস ব্রহ্মচারীকে গ্রেফতার করার পর থেকেই হিন্দুদের বিক্ষোভে উত্তাল   বাংলাদেশ। সোমবার ঢাকা বিমানবন্দর থেকে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। তারপর তাঁকে কোথায় নিয়ে চলে যাওয়া হয় , কেউ জানেন না। এমনটাই প্রকাশ সংবাদমাধ্যমে। বাংলাদেশ সরকার জানিয়ে দিয়েছে দেশ ছাড়তে পারবেন না চিন্ময় কৃষ্ণদাস ব্রহ্মচারী। তাই হয়ত তাঁকে এমন কোথাও আটকে রাখা হয়েছে যে, সেখান থেকে তিনি দেশের বাইরে যেতে পারবেন না। 


হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকেই পড়শি দেশে সংখ্যালঘু হিন্দুদের উপর অত্যাচার নিপীড়ন ভয়ঙ্কর হয়েছে বলে , একাধিক অভিযোগ এসেছে। সমানাধিকারের দাবিতে ও অত্যাচারের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই বহুবার পথে বসে বিক্ষোভ জানিয়েছে সে-দেশের হিন্দুরা। এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দুদের মধ্যে মানসিক দৃঢ়তা সঞ্চার করতে বিশেষ ভূমিকা নিয়েছিলেন চিন্ময় কৃষ্ণদাস ব্রহ্মচারী। বিভিন্ন সময় তাঁর মন্তব্য ভাইরাল হয়েছে। সে-দেশের হিন্দুদের কাছে তিনি গুরুপ্রতিম। তাই চিন্ময় কৃষ্ণদাস ব্রহ্মচারীকে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার গ্রেফতার করার পর থেকেই ছড়িয়ে পড়েছে বিক্ষোভ। 


সোমবার ঢাকায় হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষরা শাহবাগ এলাকায় বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। নেটমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া বিভিন্ন ভিডিওয় দেখা গিয়েছে, রাজধানী ঢাকার পথে পথে প্রভুর অবিলম্বে মুক্তির দাবিতে  অবরোধ চলছে। ঢাকা ট্রিবিউনের এক প্রতিবেদনে দাবি, ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি ফর কৃষ্ণ কনসায়ন্স বা  ইসকন-এর সদস্যরাও চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে পথে নেমেছেন। বিক্ষোভ চলাকালীন অজ্ঞাত ব্যক্তিদের হামলায় বেশ কয়েকজন আহতও হয়েছেন।  


প্রভুর গ্রেফতারের প্রতিবাদে বাংলাদেশের চট্টগ্রামেও মানুষ বিক্ষোভ করেছে। সংখ্যালঘু হিন্দুরা  সন্ন্যাসীর গ্রেফতারির প্রতিবাদে মোবাইলের ফ্ল্যাশলাইট জ্বেলে স্লোগান তুলেছে। Voice Of Bangladesh Hindus নামে এক সংস্থা সোশ্যাল মিডিয়ায় জানিয়েছে, 'বাংলাদেশের অবস্থা খুবই খারাপ। ঢাকায় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা চালিয়েছে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জামায়াতে ইসলামীর সদস্যরা। আমরা সংখ্যালঘুরা মার্কিন হস্তক্ষেপ চাইছি, আমরা আমেরিকান সেনাদের সাহায্য চাইছি।'


বাংলাদেশের এই ঘটনার কঠোর সমালোচনা করেছে বঙ্গ বিজেপি।  সাংসদ সুকান্ত মজুমদার চিন্ময় কৃষ্ণ প্রভুর গ্রেফতারের নিন্দা করে বিদেশ মন্ত্রী এস জয়শঙ্করের হস্তক্ষেপের আবেদন জানিয়েছেন। তিনি বলেন, "বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা জরুরি"। সুকান্ত বলেন, " শ্রী চিন্ময় কৃষ্ণ দাস বাংলাদেশের একজন সনাতনী হিন্দু নেতা, ইসকন মন্দিরের একজন সন্ন্যাসী এবং বাংলাদেশের হিন্দু সংখ্যালঘুদের কণ্ঠস্বর। সোমবার শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ করার জন্য ঢাকা পুলিশ তাকে গ্রেফতার করেছে। কিছু গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, সোমবার বিকেলে সন্ন্যাসী চিন্ময় প্রভুকে ঢাকা বিমানবন্দর থেকে ঢাকা পুলিশ তুলে নিয়ে যায় এবং তাঁকে ঢাকার গোয়েন্দা বিভাগে নিয়ে গিয়েছে মেট্রোপলিটন পুলিশ”  


অন্যদিকে শুভেন্দু অধিকারীও বৃহত্তর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। 'সংখ্যালঘুদের জন্য লড়াই করছিলেন চিন্ময়কৃষ্ণ দাস প্রভু। অবিলম্বে চিন্ময়কৃষ্ণকে মুক্তি না দিলে সীমান্তে অবরোধ হবে। কলকাতায় বাংলাদেশ হাইকমিশনের সামনেও বিক্ষোভ দেখানো হবে। অবিলম্বে হস্তক্ষপ করুন বিদেশমন্ত্রী' আবেদন শুভেন্দু অধিকারীর। 


আরও পড়ুন : 


মাকে পুজো দিয়ে নামা ভোটের ময়দানে, নৈহাটিতে জয়ী তৃণমূল, আজ বড়-মা দর্শনে মুখ্যমন্ত্রী