প্যারিস: চিনের তৈরি করোনাভ্যাক ভ্যাকসিন করোনাভাইরাসের নতুন স্ট্রেইন গামা প্রতিরোধে খুব একটা কার্যকর নয়। দু’টি আলাদা গবেষণায় এমনই তথ্য উঠে এসেছে। গবেষকরা জানিয়েছেন, যাঁরা করোনাভ্যাকের দু’টি ডোজ নিয়েছেন, তাঁদের শরীরেও গামা ভ্যারিয়্যান্ট মোকাবিলা করার জন্য প্রয়োজনীয় প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হয়নি। যাঁরা একটি ডোজ নিয়েছেন, তাঁদের তো আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা আরও বেশি।
একটি বিজ্ঞান বিষয়ক পত্রিকায় চিনের ভ্যাকসিন নিয়ে দু’টি গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে। গবেষকরা জানিয়েছেন, করোনাভাইরাস প্রতিরোধে ৮৩.৫ শতাংশ সফল এই ভ্যাকসিন। কিন্তু এই ভ্যাকসিন যাঁরা নিচ্ছেন, তাঁদের শরীরে যে অ্যান্টিবডি তৈরি হচ্ছে, তা গামা ভ্যারিয়্যান্ট প্রতিরোধ করতে পারছে না। করোনাভ্যাকের দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার ১৭ থেকে ৩৮ দিন পরেও এই ব্যক্তিদের প্লাজমার অ্যান্টিবডিতে গামা ভ্যারিয়্যান্ট পাওয়া গিয়েছে।
এ বছরের জানুয়ারিতে ব্রাজিলের মানাউসে প্রথম গামা ভ্যারিয়্যান্টে কোনও ব্যক্তির আক্রান্ত হওয়ার কথা জানা যায়। এরপর বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়েছে করোনার এই ভ্যারিয়্যান্ট।
ব্রাজিলের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক হোসে লুইজ প্রনেকা-মডেনা জানিয়েছেন, ‘করোনা মোকাবিলায় অ্যান্টিবডি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। কিন্তু অনেকের শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি হওয়ার পরেও তাঁরা গামা ভ্যারিয়্যান্টে আক্রান্ত হয়েছেন। যে অঞ্চলগুলিতে বেশিরভাগ মানুষই ভ্যাকসিনের দু’টি ডোজ নিয়েছেন, সেখানেও গামা ভ্যাকসিন ছড়িয়ে পড়েছে। ফলে আমাদের মনে হচ্ছে, গামা ভ্যারিয়্যান্ট মোকাবিলায় শুধু অ্যান্টিবডিই একমাত্র গুরুত্বপূর্ণ নয়, টি-সেলও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।’
তুরস্কের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা আবার বলছেন, করোনাভ্যাকের দু’টি ডোজ নিয়ে করোনা মোকাবিলায় শরীরে ৯০ শতাংশ অ্যান্টিবডি তৈরি হচ্ছে। কিন্তু বয়স্ক পুরুষ ও মহিলাদের শরীরে অ্যান্টিবডির পরিমাণ কমে যাচ্ছে।
এখনও পর্যন্ত ২২টি দেশ জরুরি ভিত্তিতে করোনাভ্যাক ব্যবহারে ছাড়পত্র দিয়েছে। করোনা মোকাবিলায় এই ভ্যাকসিন কার্যকর বলেই জানিয়েছেন গবেষকরা। এই ভ্যাকসিন ২ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় রাখা যায়। এটা অনেক দেশের পক্ষেই সুবিধাজনক বলে মনে করছেন গবেষকরা। তবে একইসঙ্গে তাঁরা জানিয়েছেন, দীর্ঘমেয়াদী ভিত্তিতে করোনাভ্যাক কতটা কার্যকর, সে বিষয়ে নিশ্চিত হওয়ার জন্য আরও গবেষণা প্রয়োজন।