নিউইয়র্ক: এই প্রথম নয়। হাজার হাজার বছর আগেও এই পৃথিবীর বুকে মারণ আকার ধারণ করেছিল করোনার মতো ভাইরাস । এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে এক গবেষণায়। 


মানব জিনোম সম্পর্কিত একটি গবেষণায় উঠে এসেছে, প্রায় ২০ হাজার বছর আগে পূর্ব এশিয়ায় অতিমারীর আকার ধারণ করেছিল মারণ ভাইরাস। সেই সময়ও, সার্বিক চরিত্র ও বৈশিষ্ট্য অনেকটাই এখনকার নব্য করোনাভাইরাসের মতোই ছিল।


গবেষণায় দাবি করা হয়েছে, পূর্ব এশিয়ার মানুষের জিনোমে আজও ওই মহামারীর চিহ্ন রয়ে গিয়েছে। আজ যেখানে চিন, জাপান, মঙ্গোলিয়া, উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়া এবং তাইওয়ান রয়েছে, মূলত সেই অঞ্চলে এই মহামারীর প্রকোপ ছিল।


যৌথ উদ্যোগে এই গবেষণা করেছে কুইন্সল্যান্ড ইউনিভার্সিটি অফ টেকনোলজি, ইউনিভার্সিটি অফ অ্যাডিলেড, ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফর্নিয়া স্যান ফ্রান্সিসকো এবং ইউনিভার্সিটি অফ অ্যারিজোনা। 


গবেষকরা জানান, হাজার-হাজার বছর আগের বিবর্তনের তথ্য মানব জিনোমের মধ্যে সংগ্রহিত থাকে। যেমন, গাছের গুড়ির চক্রগুলির গবেষণায় উঠে আসে সেই গাছের তথ্য, ঠিক তেমনই মানব কোষের জিনোমের থেকে বিবর্তনের ইতিহাস জানা সম্ভব। 


গত ২০ বছরে করোনাভাইরাসের ফলে, তিনটি বড় অতিমারী ঘটেছে। একটি সার্স-সিওভি যা ২০০২ সালে চিনে উৎপত্তি ঘটেছিল। ৮০০ জনের বেশি মারা গিয়েছিলেন। দ্বিতীয় মার্স-সিওভি যার ফলে মধ্যপ্রাচ্যে ৮৫০-র বেশি মানুষ মারা যান এবং তৃতীয় হল সার্স-সিওভি ২ বা কোভিড-১৯ যার জেরে বিশ্ব প্রায় ৪০ লক্ষ মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে। 


মানব জিনে একটি বিশেষ ধরনের প্রোটিনকে চিহ্নিত করেন গবেষকরা। নাম ভাইরাস-ইন্টার‌্যাক্টিভ প্রোটিন (ভিআইপি)। শরীরে কোনও ভাইরাস প্রবেশ করলেই, এই প্রোটিনটি সবার আগে যোগাযোগ স্থাপন করে। গবেষকরা দেখেন, পূর্ব এশিয়ার ৫ জনগোষ্ঠীর মানুষের মধ্যে এই প্রোটিনের সিগন্যাল সর্বাধিক। তাঁদের দাবি, ২০ হাজার বছর আগে, এই অঞ্চলের বাসিন্দারা প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন। 


এই গবেষণা সম্পর্কিত তথ্য কারেন্ট বায়োলজি নামক জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, গবেষকরা বিশ্বব্যাপী প্রায় আড়াই হাজার মানুষের জিনোমের পরীক্ষা করেন। সেখান থেকে জানার চেষ্টা করা হয়, কী করে ওই মহামারী কাটিয়ে উঠেছিল সেসময়ের সভ্যতা।