ঢাকা: গুলশনের কাফেতে ভয়াবহ নৃশংসতার সাক্ষ্য বহনকারী সন্ত্রাসবাদী হামলার ব্যাপারে সন্ত্রাস দমন আইনে একাধিক ব্যক্তির বিরুদ্ধে চার্জ দাখিল করা হল। গুলশন থানায় গতকাল মধ্যরাতে চার্জ দাখিল করা হয় বলে জানিয়েছেন পুলিশের ইনসপেক্টর জেনারেল একেএম শহিদুল হক। তদন্তে নেমে বাংলাদেশের ইতিহাসে হিংস্রতম জঙ্গি হামলার মূল চক্রীকে খুঁজছে পুলিশ। সেদিন যে পণবন্দিরা শেষ পর্যন্ত বেঁচে গিয়েছেন, তাঁদের সঙ্গে কথা বলে হামলার উত্স জানার ব্যাপারে তথ্য জানার চেষ্টা করা হচ্ছে।


গুলশন থানার ডিউটি অফিসার বলেছেন, আমরা সন্ত্রাস দমন আইনে চার্জ পেশ করেছি। ৫ জনকে নাম ধরে ধরে অভিযুক্ত করা হয়েছে। এছাড়া আরও অনেক অজ্ঞাতপরিচয়কে অভিযুক্ত করা হয়েছে।

হামলার ব্যাপারে দুজনকে ইতিমধ্যেই হেফাজতে নেওয়ার কথা গতকাল জানায় পুলিশ। তারা সুস্থ নয় বলে পরে তাদের জেরা করা হবে বলে জানা গিয়েছে।

ইসলামিক স্টেট গোষ্ঠী ২০ পণবন্দি, দুজন পুলিশকর্মীকে খুনের দায় নিলেও তারা নয়, তাদের দেশের মাটিতে বেড়ে ওঠা জঙ্গিরাই সেদিনের হত্যালীলায় যুক্ত বলে দাবি বাংলাদেশের। এদিকে রবিবারই বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলি ঢাকায় নিযুক্ত বিদেশি কূটনীতিকদের বর্তমান পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ সরকার কী করছে, সে ব্যাপারে অবহিত করেছেন।

শনিবার রাতে পুলিশ ৫ জঙ্গির ছবি প্রকাশ করে তাদের নাম যথাক্রমে আকাশ, বিকাশ, ডন, বন্ধন ও রিপন বলে জানায়। কিন্তু আইএস হামলার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ৫ বন্দুকধারীর ছবি প্রকাশ করে তাদের চিহ্নিত করে আবু উমের, আবু সালমা, আবু রাহিক, আবু মুসলিম ও আবু মুহারিব বলে।

নামের এহেন ফারাক প্রসঙ্গে পুলিশ প্রধানের বক্তব্য, ছদ্মনাম ব্যবহার করা অভ্যাস জঙ্গিদের। বাকি ৩ জঙ্গি সম্পন্ন পরিবারের ছেলে, ঢাকার সেরা ইংরেজি স্কুলের পড়ুয়া।

তবে পুলিশের প্রকাশ করা ছবিগুলির মধ্যে একজনকে সইফুল ইসলাম চৌকিদার বলে শনাক্ত করা হয়েছে। সে আক্রান্ত হোলি আর্টিজেন বেকারির শেফ।

এদিকে ইতালির বিদেশমন্ত্রক তাদের এক ভ্রমণ সংক্রান্ত পরামর্শে বাংলাদেশে ফের সন্ত্রাসবাদী হামলার শঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না বলে জানিয়েছে। তাদের দেশের নাগরিকদের বাংলাদেশ যাওয়ার ভাবনা গভীর ভাবে বিচার করে দেখতে বলেছে রোম। বলেছে, বাংলাদেশ গেলেও প্রয়োজনের বাইরে ঘোরাঘুরি না করাই ভাল।