নয়াদিল্লি: পাকিস্তানকে কোণঠাসা করার কৌশল হিসাবে সুইজারল্যান্ডে প্রবাসে থাকা বালুচ শীর্ষনেতা ব্রাহুমদাগ বুগতিকে ভারতের নাগরিকত্ব দেওয়ার তোড়জোড় চালাচ্ছে নয়াদিল্লি। এ খবর পাকিস্তানের জিও নিউজ-এর। পাকিস্তানের নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন বালুচ রিপাবলিকান পার্টি (বিআরপি)-র প্রতিষ্ঠাতা ব্রাহুমদাগ ছাড়াও সুইজারল্যান্ডে তাঁর দুই বিশ্বস্ত সহচর শের মহম্মদ বুগতি ও আজিজুল্লাহ বুগতি সহ আরও বেশ কয়েকজনকে নাগরিকত্ব দিতে চলেছে ভারত।

বালুচ নেতাদের এ দেশের নাগরিক হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়ার ব্যাপারে আলোচনা চলছে বেশ কিছুদিন ধরেই। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বালুচিস্তানের জনগণের ওপর পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর অত্যাচার, তাঁদের মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে সরব হওয়ার বেশ কিছুদিন আগে থেকেই এ নিয়ে ব্রাহুমদাগ কথাবার্তা চালাচ্ছিলেন ভারতীয় অফিসারদের সঙ্গে। পাক সংবাদ চ্যানেলটিকে এমনটাই জানিয়েছে বিআরপি-র একটি সূত্র। তাদের উদ্ধৃত করে জিও নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতীয় নথিপত্র ব্যবহার করে আমাদের জনগোষ্ঠীর ওপর পাকিস্তানের নির্মম, নৃশংস অত্যাচারের কাহিনি তুলে ধরে প্রচার চালাব আমরা। চেষ্টা করব বিশ্ববাসীর সমর্থন জোগাড়ের। আমাদের পাশে দাঁড়ানোয় ইতিমধ্যেই নরেন্দ্র মোদীকে ধন্যবাদ জানিয়েছি আমরা। এর মধ্যে কোনও লুকোছাপার ব্যাপার নেই। মোদীকে আমাদের সমর্থন, তাঁর আমাদের পাশে থাকা নিয়ে আমাদের বিরোধীরা যা-ই ভাবুক, বলুক, তাকে থোড়াই কেয়ার করি। এ ছাড়া কোনও পথ নেই আমাদের সামনে।

প্রসঙ্গত, যাতে তাঁকে সে দেশের নাগরিকত্ব দেওয়া না হয়, সেজন্য সুইস সরকারকে পাকিস্তান চাপ দিচ্ছে বলে এর আগে অভিযোগ করেছিলেন ব্রাহুমদাগষ। এ বছরের শুরুতেই তাঁর কাছে এটা দিনের আলোর মতো স্পষ্ট হয়ে যায় যে, খুব শীগগিরই নাগরিকত্ব পাবেন না, এদিকে তাঁকে সুইজারল্যান্ডেই আটকা পড়ে থাকতে হবে। কতদিন, তার ঠিক-ঠিকানা নেই।

দাদু আকবর বুগতির হত্যার পর ২০১২ সালে বালুচিস্তানে নিজের শহর ডেরা বুগতি থেকে পালিয়ে প্রথমে আফগানিস্তানে সরকারি আতিথ্য গ্রহণ করেন, সেখান থেকে ২০১০-এর অক্টোবরে সুইজারল্যান্ড চলে যান ব্রাহুমদাগ। সেই থেকে সেখানেই পরিবারকে নিয়ে রাজনৈতিক আশ্রয়ে রয়েছেন তিনি।

১৮-১৯ সেপ্টেম্বর দলের কর্মকর্তাদের বৈঠকের পর আনুষ্ঠানিক ভাবে জেনিভায় ভারতের নাগরিকত্বের জন্য আবেদন জানাবেন ব্রাহুমদাগ। বৈঠকে বিভিন্ন দেশ থেকে আসা বালুচ নেতারা তাঁর ভারতের সমর্থন চাওয়ার সিদ্ধান্ত অনুমোদন করবেন বলে শোনা যাচ্ছে।

বিআরপি সূত্রটি বলেছে, চিনের মতো ক্ষমতাধর দেশের চাপ অগ্রাহ্য করে দলাই লামাকে আশ্রয় দিয়েছে ভারত। শেখ মুজিবর রহমানকে সাহায্য করেছে। ব্রাহুমদাগ, তাঁর সঙ্গীসাথীদেরও সাহায্য করবে। ব্রাহুমদাগ তাঁর নিজের ও বাকি সব সহযোগীর জন্য ভারতীয় নাগরিকত্ব চেয়েছেন।