হেরাত: আশঙ্কাই শেষপর্যন্ত সত্যি হল। ফের আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখল করার পর তালিবানের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছিল, দু’দশক আগের মতো নৃশংসতার পথ অবলম্বন করা হবে না। কিন্তু সেটা যে শুধু মুখের কথাই, বাস্তবে কোনও সারবত্তা নেই, সেটা যত দিন যাচ্ছে ততই স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে। প্রকাশ্যে চারজনকে গুলি করে মারার পর ক্রেনে তাদের দেহ ঝুলিয়ে দিল তালিবান।
এই নৃশংস দৃশ্য দেখা গিয়েছে পশ্চিম আফগানিস্তানের হেরাত শহরে। তালিবানের দাবি, যাদের গুলি করে মারা হয়েছে, তারা অপহরণকারী। অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক সাজা দেওয়ার জন্যই এই ব্যবস্থা করা হয়েছে। হেরাত প্রদেশের ডেপুটি গভর্নর মাওলাওয়ালি শির আহমেদ মুহাজির বলেছেন, ‘বিভিন্ন জায়গায় চারটি মৃতদেহ প্রদর্শন করা হচ্ছে। অপহরণের মতো অপরাধ সহ্য করা হবে না, এই বার্তা দেওয়ার জন্যই হত্যা করা হয়েছে।’
সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া ভিডিও, ছবিতে দেখা গিয়েছে, পিক-আপ ট্রাকে করে দেহগুলি নিয়ে এসে ক্রেনে ঝুলিয়ে দেওয়া হচ্ছে। একটি ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, হেরাতের একটি জনবহুল জায়গায় ক্রেন থেকে একটি মৃতদেহ ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। দেহটির বুকে লিখে দেওয়া হয়েছে, ‘অপহরণকারীদের এভাবেই শাস্তি দেওয়া হবে।’
এ বছরের অগাস্টে তালিবান আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখল করার পর এই প্রথম প্রকাশ্যে এভাবে হত্যা করে মৃতদেহ প্রদর্শন করা হল। এর আগে যখন তালিবানের দখলে আফগানিস্তান ছিল, তখন প্রায়ই প্রকাশ্যে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হত। সেই জমানা ফিরে আসছে বলে ইঙ্গিত দিয়েছে তালিবান।
হেরাতের ডেপুটি গভর্নরের দাবি, ‘নিরাপত্তারক্ষীদের কাছে খবর আসে, শনিবার সকালে এক ব্যবসায়ী ও তাঁর দুই ছেলেকে অপহরণ করা হয়েছে। সব রাস্তা বন্ধ করে দেয় পুলিশ। একটি চেকপয়েন্টে অপরহণকারীদের আটকায় তালিবান। সেখানে গুলির লড়াইয়ে চারজন অপহরণকারীকেই মারা হয়। আমাদের একজন মুজাহিদিন আহত হন।’
শুক্রবার তালিবান নেতা মোল্লা নুরউদ্দিন তুরাবি দাবি করেন, আফগানিস্তানে কঠোর শাস্তি ফিরবে তবে প্রকাশ্যে নয়। কিন্তু তারপরেই প্রকাশ্যে হত্যার পর দেহ ঝুলিয়ে দেওয়া হল।