লন্ডন: প্রেমে পড়ার কত জ্বালা! রোগিনীকে দেখে মুগ্ধ ডাক্তার। প্রেমপত্র পাঠিয়ে হৃদয়ের উথালপাথাল দশার কথা জানিয়েওছিলেন। কিন্তু রোগিনী সেই চিঠি নিয়ে সটান পুলিশের কাছে হাজির হলেন। শেষপর্যন্ত নিষিদ্ধ হতে হল ব্রিটেনের ভারতীয় বংশোদ্ভূত ওই সার্জন ডাক্তার সচিন্দ্র অমরাগিরিকে।  ব্রিটেনের মেডিক্যাল ট্রাইব্যুনাল তাঁর চিকিত্সা সংক্রান্ত পেশা চালিয়ে যাওয়া থেকে নিষিদ্ধ করেছে।

পেশাগত পদের অপব্যবহারের জন্য তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করে মেডিক্যাল প্র্যাকটিশনার্শ ট্রাইব্যুনাল সার্ভিস অমরাগিরির নাম চিকিত্সকদের নথিভুক্ত তালিকা থেকেই বাদ দিয়েছে।

রীতিমতো কাব্যিক ভাষায় প্রেমাস্পদর কাছে চিঠি লিখেছিলেন ওই ডাক্তার। চিঠিতে লেখেন, ‘আমার হৃদয়ের গভীরের সুপ্ত তন্ত্রীতে টান দিয়েছ তুমি। আমার ক্লিনিকে যখন প্রথম এলে তখন চমকে গিয়েছিলাম। তোমাকে দেখে অদ্ভূত শিহরণে ভেসে যেতে বসেছিলাম’।

চিঠিতে কফিপানের আমন্ত্রণও ওই মহিলাকে জানিয়েছিলেন অমরাগিরি।

কিন্তু পেটের সমস্যার চিকিত্সা করাতে গিয়ে এভাবে প্রেমপত্র ধেয়ে আসবে বলে ভাবতে পারেননি রোগিনী। ট্রাইব্যুনালের শুনানিতে তিনি বলেছেন, ‘আমি ভাবলাম, উনি আমার ঠিকানা জানেন, কোথায় থাকি তাও জানেন। এমনকি আমার ফোন নম্বরও তাঁর কাছে রয়েছে’।

ট্রাইব্যুনালের শুনানিতে বলা হয়, অমরাগিরি যে তাঁর পেশাগত বিধি ভাঙছেন তা তাঁর চিঠিতেই স্পষ্ট। তিনি লিখেছিলেন, ‘এই চিঠি লিখতে গিয়ে আমার মনে হচ্ছে যে, তোমার সম্পর্কে যে তথ্য আমার কাছে রয়েছে, তার সুযোগ নিচ্ছি আমি’।

ট্রাইব্যুনালের শুনানিতে ছিলেন না অমরাগিরি। তিনি তাঁর বিরুদ্ধে সুযোগের অপব্যবহারের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁর দাবি, ওটা ছিল ‘মুহুর্তের পাগলামি’।

ব্রিটেনের মেডিক্যাল কাউন্সিলে লেখা চিঠিতে অমরাগিরি দাবি করেছেন, ওই মহিলার প্রতি তিনি কোনওভাবেই শারীরিকভাবে আকৃষ্ট হননি। এটা ছিল ক্ষণিকের ভাবাবেগ মাত্র। তিনি কাউকে কোনওভাবে আঘাত করতে চাননি বলে মন্তব্য করেছেন অমরাগিরি। তবে কফিপানের জন্য আমন্ত্রণ জানানোটা ভুল হয়ে গিয়েছিল বলে মেনে নিয়েছেন তিনি।

ওই ডাক্তার ওই মহিলা ও ওয়েস্ট মিডল্যান্ডের ডুডলে-র রাসেল হল হাসপাতালের সহ চিকিত্সকদের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিয়েছেন। ট্রাইব্যুনালের নির্দেশের বিরুদ্ধে আর্জি জানানোরও সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।