জাকার্তা: ৪০ বছরের চাকরি জীবনে কখনও ঘুষ নেননি। প্রলোভন এলেও প্রত্যাখ্যান করেছেন। পরিবারের জন্য বাড়তি পরিশ্রম করে আয় করেন। সেজন্য তাদের এক কর্মীকে দেশের জাতীয় পুলিশ দিবসে সম্মান জানাতে চলেছে ইন্দোনেশিয়া পুলিশ কর্তৃপক্ষ।


 

সাধারণ মানুষের কাছ থেকে তোলা আদায়, মাদক চোরাচালানে সরাসরি জড়িত থাকার অভিযোগ, একাধিক হাই প্রোফাইল দুর্নীতি মামলায় জড়িয়ে দেশবাসীর কাছে ধিক্কার, বদনামই কুড়িয়ে থাকে তারা। দেশের সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত প্রতিষ্ঠানগুলির একটি বলে দেখা হয় তাদের। কিন্তু ব্যতিক্রম সেলাদি নামে ৫৭ বছর বয়সি ওই পুলিশকর্মী। তাঁর এক পয়সাও ঘুষ না নেওয়ার পণের কথা মিডিয়ায় ফলাও হওয়ায় তাঁকে নিয়ে হইচই শুরু হয়েছে। দুনিয়ায় অনেক দেশই সাহসিকতার জন্য পুলিশ কর্মীদের পুরস্কৃত করে। কিন্তু ইন্দোনেশিয়া পুলিশ কর্তৃপক্ষ সেলাদির মতো সামান্য এক পুলিশকর্মীকে সম্মান জানিয়ে তাঁর সততাকে স্বীকৃতি দিচ্ছে।

 

৩ সন্তানের বাবা সেলাদি জানিয়েছেন, তিনি কাজ করেন জাভা দ্বীপের মালাং শহরের ড্রাইভিং লাইসেন্স অনুমোদন দপ্তরে। সেখানে ঘুষ নিয়ে লাইসেন্স দেওয়াটাই দস্তুর। কিন্তু মাসে মাত্র ৪০০ ডলার বেতন সত্ত্বেও তাঁর কখনও উপরি আয়ের বাসনা হয়নি। তিনি বলেছেন, অনেকেই ড্রাইভিং টেস্টে পাশ করিয়ে দিতে ঘুষ বা উপহার দিতে চায়। কিন্তু সবসময় তা প্রত্যাখ্যান করেছি। এটা বাবা-মায়ের শিক্ষা।

 

আর্থিক টানাটানিতে নিজের বাড়ি করা হয়নি। স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে থাকেন শ্বশুরবাড়িতে। ২০০৪ সালে সেলাদি আবর্জনার স্তূপ ঘেঁটে পুনর্ব্যবহারযোগ্য সামগ্রী খুঁজে বের করে সেসব বিক্রি করা শুরু করেন। তা থেকে দৈনিক ৫ ডলার বাড়তি রোজগার হয়। তাতেই খুশি তিনি।

 

প্রসঙ্গত, এনজিও ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের দূর্নীতি সূচকে ১৬৮টি দেশের মধ্যে ইন্দেনেশিয়ার স্থান ৮৮।