বাগদাদ: ইরাকের নাসিরিয়ায় হাসপাতালের কোভিড ওয়ার্ডে আগুন। ৫৪ জন করোনা রোগীর মৃত্যু হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, আল-হুসেন হাসপাতালের অক্সিজেন ট্যাঙ্কে বিস্ফোরণের জেরে কোভিড ওয়ার্ডে আগুন লেগে যায়। আটকে পড়েন করোনা রোগীরা। অগ্নিদগ্ধ ও শ্বাসরুদ্ধ হয়ে ৫৪ জনের মৃত্যু হয়। মৃতের সংখ্যা বাড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।


হাসপাতাল সূত্রে খবর, দমকল বিভাগের দীর্ঘক্ষণের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। ঠিক কী কারণে আগুন লাগে, সেটা জানার চেষ্টা চলছে। তবে প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে, অক্সিজেন ট্যাঙ্কে বিস্ফোরণের জেরেই আগুন ধরে যায়।


ইরাকের প্রধানমন্ত্রী মুস্তাফা আল-কাদেমি ওই হাসপাতালের ম্যানেজারকে গ্রেফতার করার নির্দেশ দিয়েছেন। পাশাপাশি নাসিরিয়ার স্বাস্থ্য বিভাগ এবং প্রতিরক্ষা বিভাগের ম্যানেজারকেও অবিলম্বে সাসপেন্ড এবং গ্রেফতার করার নির্দেশ দিয়েছেন ইরাকের প্রধানমন্ত্রী। তাঁর দফতর থেকে এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, উদ্ধারকার্যের বিষয়ে জরুরি বৈঠক হয়েছে। আগুন নিভে যাওয়ার পরেও চলছে উদ্ধারকার্য।


দমকল ও জরুরি বিভাগের কর্মীরা অবশ্য উদ্ধারকার্য চালাতে গিয়ে সমস্যায় পড়েছেন। আইসোলেশন ওয়ার্ডের বেশ কয়েকটি অংশে এখনও ধোঁয়া রয়েছে। ফলে সেখানে যেতে বাধা পাচ্ছেন জরুরি বিভাগের কর্মীরা। এখনও অনেকে নিখোঁজ। তাঁদের মধ্যে দুই স্বাস্থ্যকর্মীও আছেন। ফলে মৃতের সংখ্যা বাড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।


ওই হাসপাতালের একজন স্বাস্থ্যকর্মী জানিয়েছেন, ‘আগুনে অনেক রোগীই করোনা ওয়ার্ডের মধ্যে আটকে পড়েন। তাঁদের উদ্ধার করতে গিয়ে সমস্যায় পড়ছেন জরুরি বিভাগের কর্মীরা।’


হাসপাতালের এক রক্ষী আলি মহসিন জানিয়েছেন, ‘করোনাভাইরাস ওয়ার্ডের মধ্যে থেকে আমি জোরে বিস্ফোরণের শব্দ পাই। তারপরেই দেখি আগুন ধরে গিয়েছে।’


ইরাকে এখনও পর্যন্ত করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১৪ লক্ষেরও বেশি। মৃতের সংখ্যা ১৭,৫৯২। এরই মধ্যে করোনা ওয়ার্ডে আগুন লেগে এতজনের মৃত্যু স্বাস্থ্যব্যবস্থাকে কঠিন চ্যালেঞ্জের মধ্যে ফেলে দিয়েছে।


ইরাকের পার্লামেন্টের স্পিকার মহামেদ আল-হালবুসি ট্যুইট করে স্বাস্থ্য বিভাগের কড়া সমালোচনা করেছেন। তিনি লিখেছেন, ‘আল-হুসেন হাসপাতালের বিপর্যয় প্রমাণ করে দিয়েছে, ইরাকের মানুষের জীবন রক্ষায় আমরা ব্যর্থ। এই ব্যবস্থা চলতে পারে না।’