ঢাকা: সপ্তাহখানেক আগে ঘটে যাওয়া বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে নৃশংস, ভয়াবহ হামলার ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই ফের সন্ত্রাসবাদের হুমকি।

গুলশনের কূটনৈতিক পাড়ার অভিজাত কাফেতে হামলা চালিয়ে ২০ পণবন্দি খতমেই শেষ নয়। বাংলাদেশে শরিয়ার শাসন চালু না হওয়া পর্যন্ত আরও রক্ত ঝরানোর হুমকি দিল ইসলামিক স্টেট (আইএস)। এবার ঘনঘন বাংলাদেশে সন্ত্রাসবাদী হামলা হবে, জানিয়েছে তারা। নতুন একটি ভিডিও ছেড়েছে বেনজির হিংসা, নৃশংসতায় হাত পাকানো আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদী সংগঠনটি। তবে শুধু বাংলাদেশ নয়, দুনিয়াজুড়েই তাদের তাণ্ডব চলবে বলে জানানো হয়েছে ভিডিওটিতে।

বাংলা ভাষায় ভিডিও বার্তাটি সম্ভবত সিরিয়ায় আইএসের শক্ত ঘাঁটি রাক্কা থেকে ছাড়া হয়েছে। সেটি প্রথম দেখা যায় আইএস-অনুমোদিত একটি ওয়েবসাইটে। তারপর সেটি পোস্ট করা হয় ইউটিউবে। গতকাল ভিডিওটি রিলিজ করা হয় ‘সাইট’ ইন্টেলিজেন্স সাইটে, যারা আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদীদের সোস্যাল মিডিয়া জগতে গতিবিধির ওপর নজর রাখে। ভিডিওতে একটি লোককে বলতে শোনা যাচ্ছে, বাংলাদেশে যা তোমরা দেখলে, সেটা একটা ঝলক মাত্র। নমুনা। তোমরা যতক্ষণ না হারছ, আমরা জিতছি, দুনিয়াজুড়ে শরিয়া কায়েম না হওয়া পর্যন্ত এর পুনরাবৃত্তি চলতেই থাকবে। বক্তাকে আবু ইসা আল-বেঙ্গলি বলে শনাক্ত করা হয়েছে।

বাংলাদেশ অবশ্য শুরু থেকেই গুলশনের ঘটনার পিছনে আইএসের হাত থাকার দাবি খারিজ করছে। এটা বাংলাদেশের মাটিতে বেড়ে ওঠা ঘরোয়া সন্ত্রাসবাদীদেরই কাজ বলে দাবি ঢাকার।

ভিডিওটি শুরু হয়েছে প্যারিস, ব্রাসেলস, আমেরিকার অরল্যান্ডোর সাম্প্রতিক হামলার দৃশ্য দিয়ে। এইসব হামলাগুলিরই দায় নিয়েছে আইএস। ভিডিও-র বক্তা ইংরেজি, বাংলা—দুটি ভাষাতেই কথা বলছে। তাকে বলতে শোনা যাচ্ছে, বাংলাদেশের জেনে রাখা ভাল, আইএস দেশ-জাতির সীমান্ত পেরিয়ে খলিফা শাসন প্রতিষ্ঠার যে ঘোষণা ২০১৪ সালে করেছে, সেই লক্ষ্যে বৃহত্তর যুদ্ধেরই অংশ হয়ে গিয়েছে তারা। রাক্কার ব্যস্ত রাস্তায় দাঁড়ানো মুখ ঢাকা লোকটি ভিডিওতে বলছে, বাংলাদেশের শাসকদের বলছি, তোমরা আজ জিহাদের যে চেহারা দেখছ, তা তোমরা যেমন জানতে, তেমনটি হবে না। আজকের জিহাদ চলছে খলিফাতন্ত্রের পরিচালনায়।

জানা গিয়েছে, ভিডিওটিতে বক্তাদের তিনজন বাংলাদেশেরেই। শরিয়া কায়েম করাই তাদের লক্ষ্য, ঘোষণা করে একজনকে বলতে শোনা যাচ্ছে, আমরা ততদিন বিধর্মীদের হত্যা করা বন্ধ করব না। নিজেদের ধর্মের জন্য আমরা হয় মারব, নয় শহিদের মতো মরব। কিছুই হারানোর নেই আমাদের।

বাংলাদেশে এখনকার গণতন্ত্রের শাসন ক্ষমাহীন অপরাধ, বলেছে সে। ঢাকা ট্রিবিউন-এর প্রতিবেদনে প্রকাশ, ভিডিওতে আরেকজন বলেছে, সরকার আল্লাহ-র নাম বদলে মানুষের তৈরি আইন চালু করেছে। তাই ওরা এখন কাফের। তার বিরুদ্ধে লড়াই করা আমাদের ধর্মীয় কাজ। বিধর্মীরা বিমান, বোমা হামলায় দুনিয়াজুড়ে নিরপরাধ মুসলিমদের মারছে। তারই বদলা নেওয়া হল হোলি আর্টিজানে।

এদিকে এই ভিডিওটি সামনে আসার পর সক্রিয় হয়ে ডেপুটি পুলিশ ইনসপেক্টর জেনারেল শহিদুর রহমান বলেছেন, আমরা গুরুত্ব দিয়েই দেখছি। সব ইউনিটকে সক্রিয় করা হয়েছে।