নয়াদিল্লি: সমালোচনা, নিন্দা, সতর্কবার্তা, কাজ হচ্ছেনা কিছুতেই। গাজায় এবার স্কুলে হামলার অভিযোগ ইজরায়েলের বিরুদ্ধে, তাতে ৩০ জনের বেশি মানুষের মৃত্যুর খবর মিলছে। নিহতদের মধ্যে ২৩ জন মহিলা এবং বাকিরা শিশু বলে জানা গিয়েছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমসূত্রে। হামলা থেকে বাঁচতে সকলে স্কুলে আশ্রয় নিয়েছিলেন। (Israel-Hamas War)


সেন্ট্রাল গাজার নুসেইরতে ওই স্কুলটি চলত রাষ্ট্রপুঞ্জের আর্থিক সহায়তায়। বৃহস্পতিবার ভোরবেলা ওই স্কুলটিতে আঘাত হানে ইজরায়েল। রকেট ছোড়ে পর পর, তাতেই ৩০ জনের বেশি প্যালেস্তিনীয় নাগরিক মারা গিয়েছেন বলে খবর। ইজরায়েলের দাবি, ওই স্কুলে হামাসের কম্যান্ট পোস্ট ছিল বলে খবর পৌঁছয় তাদের কাছে। যদিও গাজার স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, যুদ্ধে আশ্রয়হীন হয়ে ওই স্কুলে আশ্রয় নিয়েছিলেন সকলে। সেখানেই হামলা চালানো হয়। (Gaza Death Toll)


গাজার আল-বালা এলাকার আল আকসা শহিদ হাসপাতালে এদিন কমপক্ষে ৩০টি দেহ পৌঁছয়, যাঁরা ওই স্কুলে ছিলেন। পাশাপাশি, রকেটের আঘাতে মারা যাওয়া একটি বাড়ির ছয় বাসিন্দার দেহও পৌঁছয় হাসপাতালে। ওই স্কুল থেকে ৩০টি দেহ উদ্ধার করা গেলেও, বাস্তবে হতাহতের সংখ্যা অনেক বেশি বলে দাবি হামাসের। 


আরও পড়ুন: Share Market Manipulation Allegations: মোদি-শাহের বার্তা, সন্দেহজনক লেনদেন, বাজারের ধসে কাদের লাভ? ক্রোনোলজি বোঝালেন রাহুল


ইজরায়েলের দাবি, প্যালেস্তিনীয় শরণার্থীদের জন্য ওই স্কুলটি চালাচ্ছিল রাষ্ট্রপুঞ্জ। কিন্তু ওই স্কুলেই আশ্রয় নিয়েছিল হামাস এবং ইসলামিক জিহাদিরা।সেখানে নিরাপদ আশ্রয়ে থেকে ষড়যন্ত্র কষছিল তারা। কিন্তু ইজরায়েল এই দাবি করলেও, স্কুলে হামাসের ঘাঁটি ছিল বলে কোনও প্রমাণ দেখাতে পারেনি তারা।  বরং তাদের দিকে আঙুল তুলতে শুরু করেছে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা। কারণ যুদ্ধের শুরু থেকেই রাষ্ট্রপুঞ্জের স্কুলগুলি গৃহহীনদের আশ্রয় হয়ে উঠেছে। তাই জেনেশুনেই ইজরায়েল হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ। 


এই হামলার তীব্র নিন্দা করেছেন প্যালেস্তিনী শরণার্থীদের জন্য় রাষ্ট্রপুঞ্জের যে বিশেষ শাখা, তার প্রধান ফিরিপ ল্যাজারিনি। তিনি জানিয়েছেন, হামলার আগে কোনও রকম সতর্কবার্তা দেয়নি ইজরায়েল। নুসেইরতে ৬ হাজার মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েছেন। স্কুলে যেহেতু হামলা চালানোর বিধান নেই, তাই সেখানেই নিশ্চিন্ত আশ্রয় খুঁজছেন তাঁরা। স্কুলে হামাস বা ইসলামিক জঙ্গিদের আস্তানা ছিল বলে যে অভিযোগ করেছেন ইজরায়েল, তা উড়িয়ে দিয়েছেন ফিলিপ। রাষ্ট্রপুঞ্জের স্কুলে হামলা চালিয়ে ইজরায়েল আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন লঙ্ঘন করেছে বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। দোষীদের কড়া শাস্তির দাবি তুলেছেন।


গত বছর অক্টোবর মাসে ইজরায়েল এবং হামাসের মধ্যে যুদ্ধের সূচনা ঘটে। হামাস অনেক আগেই কোণঠাসা হয়ে পড়েছে। কিন্তু লাগাতার আগ্রাসন বাড়িয়ে চলেছে ইজরায়েল। গাজা এবং ওয়েস্ট ব্যাঙ্ক, ইজরায়েলি হানায় লাগাতার মৃত্য়ু বেড়ে চলেছে বলে দাবি আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য সংগঠনের। তাদের দাবি, নতুন করে গাজা খুঁড়ে ফেলতে উদ্যোগী হয়েছে ইজরায়েল। আকাশপথে যেমন হামলা চলছে, তেমনই বসতি এলাকায় নির্বিচারে রকেট, গোলা-গুলি বর্ষণ চলছে।


সবমিলিয়ে এখনও পর্যন্ত যুদ্ধে গাজায় ৩৬ হাজার ৬৫৪ জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে, যার মধ্যে ১৫ হাজারেরও বেশি শিশু রয়েছে। আহতের সংখ্য়া প্রায় ১ লক্ষ। এখনও নিখোঁজ ১০ হাজারের বেশি মানুষ। ওয়েস্ট ব্যাঙ্কে ৫২৮ জন মারা গিয়েছেন বলে খবর, যার মধ্যে ১৩২ শিশুও রয়েছে। সেখানে আহতের সংখ্যা ৫০০০-এর বেশি। ইজরায়েলে এখনও পর্যন্ত ১ হাজার১৩৯ মানুষের প্রাণহানি হয়েছে। আহতের সংখ্যা ৮ হাজার ৭৩০।