সৌমিক সাহা, লন্ডন: টেমসের পাড়ে উমার আরাধনা। লন্ডনে মুখোপাধ্যায় দম্পতির বনেদি বাড়ির পুজোয় উত্‍সবের উদযাপন। পুজো করেন বাড়ির কর্তা।  ৪৩ বছর ধরে যে পুজো করে আসছেন তিনি। ক্যাসেটে বাজে ঢাক। দেশের পুজোর নস্টালজিয়া কোথাও যেন উঁকি দিয়ে যায় মুখোপাধ্যায় পরিবারের পুজোয়।


পুজো মানেই বাঙালির কাছে পুরনো গানের নস্টালজিয়া। সেই রোদ্দুরে দেওয়া ক্যাসেটের স্তুপ, টেপরেকর্ডার আজ অতীত। তারই একটুকরো ধরা দিল পুজোর সকালে। তবে গঙ্গাপাড়ের কলকাতায় নয়। টেমসের পাড়ে, লন্ডনে।


এক-দু’দশক নয়, চার দশকেরও বেশি সময় ধরে লন্ডনের মুখোপাধ্যায়-বাড়িতে পূজিত হয়ে আসছেন উমা। চিরন্তন সেই ঐহিত্যের উত্তরাধিকার, প্রবাসেও এতদিন ধরে বজায় রাখা বড় সহজ কথা নয়। নির্মল ও কুমকুম মুখোপাধ্যায়ের বাড়িতে গেলেই যেন গুপি-বাঘার জাদুজুতো পরে, এক লহমায় পৌঁছে যাওয়া যায় কলকাতায়। আজও এখানে পুরনো টেপ রেকর্ডারে বেজে ওঠে ঢাকের মিষ্টি বোল।


প্রবাসী বাঙালি কুমকুম মুখোপাধ্যায় বলছেন, দেশের মতো পুজো করলেও দেশের টাইমে করতে পারি না। এখানকার চন্দ্র সূর্য অনুযায়ী পুজো করি। দেশ থেকে আগে জল নিয়ে আসতাম। শ্যামবাজারের দশকর্মা ভাণ্ডার থেকে দশকর্মা।


এখানে এলেই পাওয়া যায় সেই সনাতনী বাঙালি আন্তরিকতার ছোঁয়া। বাড়ির পুজো হলেও এতদিন তা আয়োজিত হয় স্থানীয় হলে। কিন্তু কোভিড বিধির কড়াকড়িতে গত দু’বছর ধরে বাড়িতেই হচ্ছে মায়ের পুজো। গৃহকর্তা নির্মল মুখোপাধ্যায়ই বাড়ির পুজো করেন। লন্ডনের বাড়িতে প্রথম পুজোর কথা মনে পড়লে আজও স্মৃতিভারাক্রান্ত হয়ে পড়েন তাঁরা।  


কুমকুম মুখোপাধ্যায় আরও বলছেন, 'তখন বাড়িতে দুটো ঘর ছিল, কলাগাছ পাওয়া যেত না। ব্রিটিশ ওয়ারওয়েজের এক বন্ধু কলাগাছ এনে দিয়েছিল। প্রথমে ইলিন রোডে পুজো করি।  তারপর লন্ডন রোড। ২০১১-য় চলে আসে এখানে। দু-বছর ঘরে আটকে গেছিট


মা দুর্গা তার ছেলেপুলে নিয়ে ফি বছর হাজির হন লন্ডনে এক বাঙালির বাড়িতে।  আর সেই বাড়িতে দেবীর আপ্যায়নের সঙ্গে মিশে থাকে আন্তরিকতাও।