ওয়াশিংটন: চাঁদের দক্ষিণ মেরুর কাছে যে জ্বালামুখী রয়েছে, তাতে বেশ কিছু উজ্জ্বল বস্তুর অস্তিত্ব খুঁজে পেয়েছে প্রদক্ষিণকারী নাসার মহাকাশযান। যা দেখে বিজ্ঞানীদের অনুমান, সেখানে হিম বা তুষার জমে থাকতে পারে। চন্দ্রপৃষ্ঠের তাপমাত্রার হেরফেরের সঙ্গে চাঁদের পৃষ্ঠ থেকে কতটা আলো বিচ্ছুরিত হয় তার পর্যালোচনা ও বিশ্লেষণ করে বিজ্ঞানীরা এই ধারনা তৈরি করেছেন।


সম্প্রতি, বিজ্ঞানসম্বন্ধীয় ইকারাস পত্রিকার প্রধান লেখিকা এলিজাবেথ ফিশার জানান, চাঁদের কুমেরু অঞ্চলের নিকটবর্তী যে জায়গাগুলি সবচেয়ে উজ্জ্বল, সেগুলিইঅ আবার সবচেয়ে ঠান্ডাও বটে। তিনি বলেন, এতটা পরিমাণ ঠান্ডা সচরাচর চন্দ্রপৃষ্ঠে আশা করা যায় না। ফলে, হতে পারে সেখানে হিম বা তুষার রয়েছে।


নাসার লুনার অর্বিটারের পাঠানো ছবি ও তথ্যের ভিত্তিতে বিজ্ঞানীদের মনে এই ধারনা তৈরি হয়েছে যে, বরফের স্তরটি অত্যন্ত পাতলা এবং তা বিক্ষিপ্তভাবে ছড়িয়ে ছিটেয়ে রয়েছে। বিজ্ঞানীদের মতে, ওই বরফের সঙ্গে মাটি, ধূলিকণা ও ছোট পাথরও মিশে থাকতে পারে।


গবেষকদের দাবি, পুকুর বা জলাশয়ে জল জমে যেমনটা হয়, চন্দ্রপৃষ্ঠে দৃশ্য হিম বা তুষার তেমনটা নয়। অনেকটা, পাথরের ওপর হাল্কা বরফ জমাট বাঁধলে যেমনটা দেখায়, এক্ষেত্রেও তাই।


বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, চাঁদের বুকে অনেক ‘কোল্ড ট্র্যাপ’ রয়েছে। সাধারণত, এগুলি হল সেই চিরস্থায়ী অন্ধকারে ঘেরা জায়গা, যেখানে কোনওভাবেই সূর্যের আলো পৌঁছয় না।


সাধারণত, এই জায়গাগুলি জ্বালামুখীর পাদদেশে অথবা ভিতরের দেওয়ালে অবস্থিত। এখানকার তাপমাত্রা হীমাঙ্কের ১৬৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস নীচে ঘোরাফেরা করে। এই পরিবেশে ‘ওয়াটার আইস’ বা জল থেকে তৈরি বরফ কয়েক কোটি বছর থাকতে পারে। যদিও, চাঁদের উত্তর মেরুতে এধরনের বরফের কোনও অস্তিত্ব মেলেনি।


চাঁদের মেরু অঞ্চলে এই বরফের ধরন ও উৎসের খোঁজ করাই নাসার লুনার রিকনিস্যান্স অর্বিটার (এলআরও)-র প্রধান দায়িত্ব। যা সে ২০০৯ সাল থেকে পালন করে চলেছে। অর্বিটারে লাগানো লুনার অর্বিটার লেসার অল্টিমিটার (লোলা)-র মাধ্যমে এই তথ্য নাসার হাতে আসছে।