কাঠমান্ডু: রবিবারের আস্থাভোটে নেপালে পড়ে যেতে পারে সরকার। ক্ষমতাসীন জোটের দুটি দল এদিনই সরকারের ওপর থেকে সমর্থন তুলে নিয়েছে। এরা হল রাষ্ট্রীয় প্রজাতন্ত্র পার্টি ও সংখ্যালঘু মধেশি জনগোষ্ঠীর মধেশি জনাধিকার ফোরাম নেপাল (গণতান্ত্রিক)। দুদলই জানিয়ে দিয়েছে, আস্থাভোটে সরকারের বিরুদ্ধে ভোট দেবে তারা। ফলে ৫৯৫ সদস্যের নেপালি পার্লামেন্টে কে পি শর্মা ওলি সরকারের পতন একরকম নিশ্চিত।


অক্টোবরে মাওবাদীদের সমর্থনে ক্ষমতায় আসেন ওলি। কিন্তু তখন থেকেই তাঁর ওপর খুশি ছিল না মাওবাদীরা। প্রথমত, মাও সর্বাধিনায়ক প্রচণ্ডকে আশ্বাস দেওয়া সত্ত্বেও তিনি মাওবাদীদের ওপর থেকে পুলিশ কেস তুলে নেননি, তারপর মধেশিদের সঙ্গে তিনি যে চুক্তি করেছেন তাও ভাল চোখে দেখেননি প্রচণ্ড। অন্যান্য সহযোগী দলগুলির মধ্যেও ভালরকম গোঁত্তা খেয়েছে ওলির জনপ্রিয়তা। সহযোগীদেরও অভিযোগ, ক্ষমতায় আসার পর থেকে তিনি প্রচণ্ড উদ্ধত ও আত্মকেন্দ্রিক হয়ে পড়েছেন। প্রতিশ্রুতি সত্ত্বেও গত বছর ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সহায়তা করেনি তাঁর সরকার। ওলি অবশ্য এ সব অভিযোগের জবাব দেননি, জানা গেছে, পার্লামেন্টেই যা বলার বলবেন তিনি।

সেপ্টেম্বরে নয়া সংবিধান চালু হওয়ার পর থেকেই একের পর এক সমস্যায় পড়েছে এই ছোট্ট প্রতিবেশী পাহাড়ি রাষ্ট্র। এখানকার প্রাচীন অধিবাসী মধেশি জনগোষ্ঠী সংবিধান মানতে অস্বীকার করে, অভিযোগ করে, তাদের অধিকার খর্ব করে জমিজিরেত কেড়ে নেওয়া হয়েছে, সরকারেও তাদের কোনও ভূমিকা নেই। সমস্যা মেটানোর দাবিতে ভারতের সঙ্গে নেপালের বাণিজ্যপথ টানা ৪ মাস অবরোধ করে রাখে তারা। এ নিয়ে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে ৫০জনেরও বেশি মৃত্যু হলে ও নেপালের লাইফলাইন পুরোপুরি স্তব্ধ হয়ে পড়লে তারা অবরোধ তুলে নেয়।

ওলিকে সরিয়ে মাওবাদী নেতা প্রচণ্ডই সম্ভবত নেপালের প্রধানমন্ত্রী হতে চলেছেন। তবে নেপালে প্রভাব বাড়াতে মরিয়া চিন চায়, যেনতেনপ্রকারেণ ওলিই ক্ষমতায় থাকুন। চিনের সঙ্গে সখ্যতা বাড়িয়ে ও ভারতের বিরোধিতা করে বেজিংয়ের গুডবুকে নাম লিখিয়েছিলেন ওলি। নেপালে ভারতবিরোধী মানসিকতা উসকে দেওয়াতেও তাঁর ভূমিকা নেহাত কম নয়।