ইসলামাবাদ: আল-কায়দা প্রধান ওসামা বিন লাদেনের বিষয়ে পাকিস্তান সরকারের এতদিনের দাবি নস্যাত্ করে দিলেন এক মার্কিন সাংবাদিক। তাঁর দাবি, অ্যাবোটাবাদে লাদেনের উপস্থিতির বিষয়ে পাক সরকার শুধু অবগতই ছিল না, এই বিশ্বত্রাস জঙ্গিকে বন্দি করে রেখেছিল তারাই। মার্কিন সরকারের সঙ্গে সমঝোতা হওয়ার পরেই ২০১১-র ২ মে হত্যা করা হয় লাদেনকে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে না জানিয়ে লাদেনকে আটকে রাখার জন্যই নেভি সিলকে অভিযান চালানোর অনুমতি দেয় পাক সরকার।

 

পাক সংবাদপত্র ডনকে দেওয়া এক সাক্ষাত্কারে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কিংবদন্তি তদন্তমূলক সাংবাদিক সেইম্যুর হার্শ বলেছেন, তিনি প্রথম থেকেই সন্দেহ করছিলেন পাকিস্তান লাদেনের বিষয়ে মিথ্যা বলছে। গত বছর এ বিষয়ে প্রমাণ পেয়েছেন তিনি। ২০০৬-এ সৌদি আরবের সাহায্যে  হিন্দুকুশ অঞ্চল থেকে লাদেনকে আটক করে পাক সরকার। এরপর অ্যাবোটাবাদে ওই বাড়ি তৈরি করে লাদেনকে সেখানে রাখা হয়। সৌদি আরব চায়নি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র লাদেনকে জেরা করুক। সেই কারণেই এই বন্দোবস্ত।

 

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র লাদেনকে হত্যা করার ক্ষেত্রে পাক সেনাবাহিনীর পূর্ণ মদত পেয়েছিল বলেও দাবি সেইম্যুরের। তিনি বলছেন, পাক সেনাবাহিনীর অজ্ঞাতে মার্কিন হেলিকপ্টারের পক্ষে অ্যাবোটাবাদে ঢোকা সম্ভব ছিল না। কারণ, ভারতীয় সেনাবাহিনীর কথা মাথায় রেখে পাকিস্তান সবসময় সতর্ক থাকে। রাডার সবসময় সীমান্তের গতিবিধির উপর নজর রাখে, এফ-১৬ বিমান তৈরি থাকে। ফলে পাকিস্তান কিছু জানত না, এটা ডাহা মিথ্যা কথা। পাক বিমানবাহিনীর তত্কালীন প্রধান এই ঘটনায় অত্যন্ত ক্ষুব্ধ হন। তিনি গোটা ঘটনা ফাঁস করার হুমকিও দিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর মুখ বন্ধ রাখার জন্য পিআইএ চেয়ারম্যান করে দেওয়া হয়।

 

লাদেন নিয়ে পাক-মার্কিন যোগাযোগের দাবির সমর্থনে সেইম্যুর বলেছেন, ২০১০-এর আগস্টে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর এক কর্নেল মার্কিন দূতাবাসে গিয়ে সিআইএ-র তত্কালীন স্টেশন চিফ জোনাথন ব্যাঙ্কের সঙ্গে দেখা করে বলেন, চার বছর ধরে লাদেন তাঁদের হাতে বন্দি। এরপর ওই কর্নেল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান।

 

গত বছর এক প্রতিবেদনে প্রথমবার লাদেনের বিষয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও পাকিস্তান সরকারের দাবিকে মিথ্যা বলেন সেইম্যুর। এ বিষয়ে তিনি একটি বইও লিখেছেন।