ইসলামাবাদ:  দুদিন আগে লাহৌরে পাকিস্তান গৃহবন্দী করেছে রাষ্ট্রপুঞ্জ কর্তৃক ঘোষিত  জঙ্গি হাফিজ সঈদকে। এবার গতকাল পাক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক জামাত-উদ-দাওয়া প্রধানের দেশের বাইরে যাওয়া নিষিদ্ধ করল। এ ব্যাপারে মন্ত্রক সমস্ত প্রাদেশিক সরকার ও কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার কাছে চিঠি পাঠিয়েছে বলে জানা গেছে। চিঠিতে সঈদ ছাড়াও আরও ৩৮ জনের নাম এক্সিট কন্ট্রোল তালিকায় রাখা হয়েছে। নিষিদ্ধদের প্রত্যেকেই জঙ্গি সংগঠন জামাত-উদ-দাওয়া বা লস্কর-ই-তৈবার সঙ্গে যুক্ত বলে জানা গিয়েছে।
গত সোমবার লাহৌরে সঈদ ছাড়াও আবদুল্লা উবেইদ, জাফর ইকবাল, আব্দুল রেহমান আবিদ এবং কাজি কাশিফ নিয়াজ নামে তিন ব্যক্তিকে গৃহবন্দী করা হয়।
গতকাল সঈদের মুক্তির দাবিতে জামাত-উদ-দাওয়া পন্থীদের বিক্ষোভ ছড়িয়েছে পাকিস্তানে।
হিজবুল মুজাহিদিনের প্রধান সৈয়দ সালাহউদ্দিন সঈদকে গৃহবন্দী করে রাখার সিদ্ধান্তকে পাক সরকারের কাপুরুষোচিত আচরণ বলে তোপ দেগেছেন। ইউনাইটেড জিহাদ কাউন্সিলেন চেয়ারম্যান সালাহউদ্দিন আরও বলেছেন, সঈদ কাশ্মীরে ভারতের ভূমিকা নিয়ে সরব।
লাহৌরে গতকাল মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কুশপুতুল পুড়িয়ে বিক্ষোভ দেখানো হয়। বিক্ষোভে মুম্বই হামলার মূল চক্রী সঈদের সমর্থনে স্লোগান দেওয়া হয়। সঈদকে অবিলম্বে ছাড়া না হলে বিক্ষোভ আন্দোলনের হুমকি দিয়েছে জামাত-উদ-দাওয়ার নেতারা। সঈদকে গৃহবন্দী করায় কাশ্মীরের আন্দোলনে প্রভাব পড়লে বা দুর্বল হয়ে পড়লে তার দায় নওয়াজ শরিফ সরকারকে নিতে হবে বলে বিক্ষোভকারীরা হুঁশিয়ারি দেয়। আগামী ৫ ফেব্রুয়ারি সঈদের নির্দেশে দেশব্যাপী মিছিল করা হবে বলেও জামাত-উদ-দাওয়ার পক্ষ থেকে জানানো হয়।

গত মঙ্গলবার পাক সেনার মুখপাত্র মেজর জেনারেল আসিফ গফুর বলেন, সঈদের ওপর নিষেধাজ্ঞা নীতিগত সিদ্ধান্ত অনুযায়ীই নেওয়া হয়েছে। তিনি আরও বলেন, দেশের স্বার্থেই সঈদ ও তাঁর সাঙ্গোপাঙ্গোদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে বিদেশি কোনও চাপ নেই।
উল্লেখ্য, দীর্ঘদিন ধরেই ভারত, আমেরিকা ও রাষ্ট্রপুঞ্জ সঈদের বিচারের জন্য পাকিস্তানের ওপর চাপ তৈরি করে আসছে। হাফিজকে গৃহবন্দী করার ঘটনা নিয়ে সতর্ক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ভারত। নয়াদিল্লি বলেছে, হাফিজের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিয়ে পাকিস্তানের উচিত নিজেদের সদিচ্ছার প্রমাণ দেওয়া। শুধু হাফিজ নয়,  ভারতের বিরুদ্ধে বিভিন্ন নাশকতামূলক কার্যকলাপে অভিযুক্ত জঙ্গি সংগঠনগুলির বিরুদ্ধেও একই ব্যবস্থা নিতে হবে ইসলামাবাদকে।