বেজিং: পাকিস্তানকে একটি শক্তিশালী ট্র্যাকিং সিস্টেম বিক্রি করেছে চিন, যা তাদের সবসময়ের মিত্রের একাধিক অস্ত্রবাহী ক্ষেপণাস্ত্র নির্মাণ ও তার ক্ষমতা বৃদ্ধির প্রক্রিয়ার গতি বাড়াতে পারে। চিনের সিচুয়ান প্রদেশের চেংডুতে সরকারি সংস্থা সিএএস ইনস্টিটিউট অব অপটিক্স অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্সের গবেষক ঝেং মেঙ্গউই জানিয়েছেন এ কথা।
হংকঙের সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টকে তিনি জানিয়েছেন, পাকিস্তান অতি উচ্চমানের, বড় মাপের অপটিক্যাল ট্র্যাকিং ও সিস্টেম কিনেছে চিন থেকে। তিনি বলেছেন, আমরা স্রেফ ওদের একজোড়া চোখ দিয়েছি, ওরা যা দিয়ে যেখানে খুশি, এমনকী চাঁদে পর্যন্ত, নজর দিতে পারে। ঝেং বলেন, তাঁর দেশের প্রতিরক্ষা স্বার্থ জড়িয়ে থাকার ফলে ওই প্রযুক্তি সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য এবং পাকিস্তানের কোথায় তার প্রয়োগ করা হচ্ছে, তা জানাতে পারছেন না। যদিও তিনি জানান, পাক সামরিক বাহিনী সম্প্রতি নতুন ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করে দেখতে, আরও উন্নত করে তুলতে একটি ফায়ারিং রেঞ্জে বসায় ওই সিস্টেম।
পাকিস্তান কত খরচ করেছে এজন্য, জানা যায়নি।
চিনই পাকিস্তানকে প্রথম এ ধরনের গুরুত্বপূর্ণ সিস্টেম সরবরাহ করল বলে জানিয়েছে চিনা গবেষণা সংস্থাটি।
হংকঙের সংবাদপত্রের রিপোর্টে বলা হয়েছে, ভারত যেহেতু সবচেয়ে উন্নত পরমাণু অস্ত্র বহনে তৈরি ইন্টারকন্টিনেন্টাল ব্যালিস্টিক মিসাইল (আইসিবিএম) অগ্নি-৫ পরীক্ষা করছে, সেজন্যই পাকিস্তানকে এই সিস্টেম সরবরাহ করছে চিন। অগ্নি-৫ এর বেজিং বা সাংহাই পর্যন্ত আঘাত হানার ক্ষমতা আছে।
ভারতের একটি পরমাণু অস্ত্রবাহী ক্ষেপণাস্ত্রের তাদের চেয়ে অনেক বেশি দূরত্ব পেরনোর ক্ষমতা আছে বলে পাকিস্তান একসঙ্গে অনেকগুলি নিশানায় আঘাত হানতে পারে রিএন্ট্রি ভেহিকল (এমআইআরভি) তৈরির ওপর জোর দিয়েছে। এ ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র একাধিক পরমাণু অস্ত্র বহনে সক্ষম যেগুলি বিভিন্ন নিশানায় ছুটে যেতে পারে।
মার্কিন প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা এজেন্সি সরকারি ভাবে গত মার্চে জানায়, পাকিস্তান গত জানুয়ারি মাসে তাদের পরমাণু অস্ত্র বহনক্ষম আবাদিল মিসাইলের প্রথম পরীক্ষামূলক উত্ক্ষেপণ করে। কিন্তু পাকিস্তানের বাইরের প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের ধারণা, আবাদিল ক্ষেপণাস্ত্র যুদ্ধে ব্যবহারের জন্য তৈরি করতে হলে আরও সময় লাগবে। এখনও তা প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে, তাকে আরও ভাল করে তুলতে হবে।
চিন পাকিস্তানের সবচেয়ে বড় অস্ত্র সরবরাহকারী দেশ। জাহাজ, সাবমেরিন, যুদ্ধবিমান সহ নানা সরঞ্জাম তারা পাকিস্তানকে দেয়।
যে চিনা টিম ওই সিস্টেম পাকিস্তানে নিয়ে গিয়েছিল, তাদের সেগুলি জোড়া দেওয়ার জন্য প্রায় তিন মাস সেখানে থাকতে হয়েছিল। ভিআইপি আতিথ্য দেওয়া হয় তাদের।