ইসলামাবাদ: বিপাকে নওয়াজ শরিফ। দুর্নীতি ইস্যুতে তাঁর ইস্তফা চেয়ে প্রবল চাপ সৃষ্টি করেছেন পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ নেতা ইমরান খান। তার মধ্যেই মঙ্গলবার শরিফের পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ সংক্রান্ত পানামা পেপার্স কেলেঙ্কারির তদন্তে বিচারবিভাগীয় কমিশন গড়ার নির্দেশ দিল পাকিস্তান সুপ্রিম কোর্ট।

চলতি বছরের গোড়ায় ফাঁস হওয়া পানামা পেপার্সে শরিফের পরিবারের বিদেশে সম্পত্তি ও কোম্পানি আছে, এহেন তথ্য-নথি সামনে আসার পর তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগের তদন্তের দাবিতে পেশ হওয়া একাধিক পিটিশনের শুনানি হয় শীর্ষ আদালতে। প্রধান বিচারপতি আনোয়ার জাহির জামালির নেতৃত্বে পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ এদিন একাধিক মন্ত্রী, আইনজীবী, ইমরানের দল, মিডিয়ার প্রতিনিধিদের সামনে শুনানি পর্বে জানায়, একজন বিচারকের নেতৃত্বে  কমিশন হবে। সুপ্রিম কোর্টের সমান ক্ষমতা থাকবে তার। কমিশন রিপোর্ট দেবে সুপ্রিম কোর্টকে। কমিশনের সিদ্ধান্ত শীর্ষ আদালতের রায় বলে ধার্য হবে, সব পক্ষকেই তা মেনে নিতে হবে। সুপ্রিম কোর্ট সরকার ও পিটিশনারদের কমিশনের জন্য তাদের টার্মস অব রেফারেন্স পেশ করতে নির্দেশ দিয়েছে। এক্ষেত্রে সব পক্ষ সহমতের ভিত্তিতে টার্মস অব রেফারেন্স দিতে না পারলে শীর্ষ আদালতই তা ঠিক করে দেবে।

আগামীকাল শরিফের পদত্যাগ চেয়ে দলীয় সদস্য, সমর্থকদের নিয়ে এসে রাজধানী অচল করে দেওয়ার যে কর্মসূচি ইমরান ঘোষণা করেছিলেন, তার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেনি সুপ্রিম কোর্ট। তবে সরকার, বিরোধী পক্ষ, দু পক্ষকেই সংযত হতে বলেছে।

এদিকে সুপ্রিম কোর্টের আজকের নির্দেশের পর আগামীকালের ইসলামাবাদে সরকার-বিরোধী পূর্বঘোষিত সমাবেশে ধন্যবাদজ্ঞাপন সভা হবে বলে জানিয়েছেন ইমরান। তাঁর সভা ঘিরে পাকিস্তানের নানা শহরে ব্যাপক ধরপাকড় চলছে গত কয়েকদিন ধরে যাতে ইমরানের সমর্থকরা রাজধানীর দিকে এগতে না পারেন। রাজধানীতে ঢোকার সব পয়েন্টে চলছে কঠোর নজরদারি। তবে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পর  ইমরান  বিক্ষোভ সমাবেশ কর্মসূচি বাতিল করে বিজয়োত্সব পালনের সিদ্ধান্ত নেওয়ায় নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হতে পারে।

প্রসঙ্গত, পানামা পেপার্সের নথি অনুসারে শরিফের চার সন্তানের তিনজন-মরিয়ম, হাসান ও হুসেন বিদেশে কোম্পানির মালিক। তাঁদের একাধিক কোম্পানির হয়ে লেনদেন করার আইনি অধিকার আছে। যদিও বিদেশ কোম্পানি, সম্পত্তি মালিক হওয়া, বেআইনি আর্থিক লেনদেনের অভিযোগ অস্বীকার করেছে শরিফ পরিবার।