রাওয়ালপিন্ডি: শেষ পর্যন্ত পাকিস্তানে ভারতীয় গুপ্তচর সন্দেহে গ্রেফতার কূলভূষণ যাদবকে মৃত্যুদণ্ড দিল সে দেশের ফিল্ড জেনারেল কোর্ট মার্শাল। পাকিস্তান আর্মি আইনে দেওয়া মৃত্যুদণ্ডের সাজায় সিলমোহর দিয়েছেন পাক সেনাপ্রধান চিফ অব আর্মি স্টাফ জেনারেল কামার জাভেদ বাজওয়া।


যাদবের ঘটনাটি পাকিস্তানের মাটিতে ভারতের নাশকতা ও অন্তর্ঘাতমূলক কার্যকলাপের প্রমাণ বলে দাবি করেছেন সরতাজ আজিজ। পাক সেনার মিডিয়া শাখা ইন্টার-সার্ভিসেস পাবলিক রিলেশনস (আইএসপিআর)-এর বিবৃতিতে বলা হয়েছে, পাকিস্তানের বিরুদ্ধে চরবৃত্তি ও অন্তর্ঘাতে যুক্ত থাকায় মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে কূলভূষণকে। পাকিস্তান আর্মি আইনে ফিল্ড জেনারেল কোর্ট মার্শালের মাধ্যমে বিচার করে মৃত্যুদণ্ড হয়েছে ওই চরের। বালুচিস্তান, করাচিতে শান্তি ফেরাতে আইন রূপায়ণকারী সংস্থাগুলির প্রয়াস ভেস্তে দিয়ে পাকিস্তানকে অস্থির করে তোলা, তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করার লক্ষ্যে তাকে নাশকতা, অন্তর্ঘাতের ছক তৈরির দায়িত্ব দিয়েছিল ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্তা র। এ কথা ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে স্বীকার করেছে সে।

গত বছরের ৩ মার্চ কূলভূষণকে ইরান থেকে প্রবেশের পর বালুচিস্তানে 'গ্রেফতার করে' পাক নিরাপত্তা বাহিনী।  তাঁর বিরুদ্ধে পাকিস্তানে নাশকতার ছক তৈরির অভিযোগ আনা হয়।

কূলভূষণ ভারতীয় নৌবাহিনীর অবসর নেওয়া অফিসার, এটা মেনে নিয়েও তাঁর সঙ্গে ভারত সরকারের সঙ্গে কোনওরকম যোগসাজশ থাকার কথা অস্বীকার করেছে নয়াদিল্লি। পাকিস্তানের দাবি, কূলভূষণ ভারতীয় নৌবাহিনীর অন ডিউটি অফিসার। তাঁকে পাঠানো হয়েছিল রিসার্চ অ্যান্ড অ্য়ানালিসিস উইং (র)-এর হয়ে চরবৃত্তি করতে। কূলভূষণকে গ্রেফতারের পর তাঁর অভিযোগ 'স্বীকার করে' দেওয়া বিবৃতির ভিডিও ছেড়েছিল পাকিস্তান।

পাকিস্তানে  ভারতীয় দূতাবাস কর্তৃপক্ষ কূলভূষণের সঙ্গে দেখা করার অনূমতি চাইলেও তা খারিজ হয়ে  যায়। অবশ্য কূলভূষণ ওরফে হুসেন মুবারক পটেলকে আইনি বিধি মেনে উকিল দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করে পাকিস্তান।  সন্ত্রাস, সীমান্তে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের পরিপ্রেক্ষিতে অনাস্থার বাতাবরণের মধ্যেই কূলভূষণের সাজার নির্দেশ ভারত, পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা বাড়িয়ে তুলবে বলে অভিমত পর্যবেক্ষকদের। পাকিস্তানি বিশেষজ্ঞরা অবশ্য বলছেন, মৃত্যুদণ্ডের মাধ্যমে পাকিস্তান এই বার্তাই দিতে চাইছে যে, দেশের ভিতরে অন্তর্ঘাতে জড়িতদের এরকম কঠোর সাজাই হবে।