লাহোর: হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেলেন পাকিস্তানের মানবাধিকার আন্দোলনের নেত্রী আইনজীবী ও সমাজকর্মী আসমা জাহাঙ্গির, যিনি সে দেশের শক্তিশালী সামরিক প্রতিষ্ঠানের কট্টর সমালোচনা করেছেন প্রকাশ্যেই। আসমার জীবনাবসানের কথা জানিয়েছেন তাঁর মেয়ে মুনিজে জাহাঙ্গির। ৬৬ বছর বয়সি আসমাকে সবাই চিনত তাঁর প্রতিবাদী চরিত্র, মানবাধিকার রক্ষায় তাঁর আপসহীন সংগ্রামের জন্য। তিনিই প্রথম মহিলা যিনি পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্টের বার অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট হয়েছেন।
ট্যুইটে মুনিজে লিখেছেন, মায়ের মৃত্যুতে আমি বিধ্বস্ত।
সিনিয়র আইনজীবী আদিল রাজা বলেছেন, আজ সকালে হার্ট অ্যাটাক হয় আসমার। তাঁকে লাহোরের হামিদ লতিফ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। ডাক্তাররা চেষ্টা করেছিলেন, তবে বাঁচাতে পারেননি।
তাঁর মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ পাকিস্তানের নানা মহলের মানুষজন। শোকবার্তা পাঠিয়েছেন পাক প্রেসিডেন্ট, প্রধানমন্ত্রী।
১৯৫২-র জানুয়ারি লাহোরে জন্ম আসমার। পাকিস্তানের মানবাধিকার কমিশনের সহ প্রতিষ্ঠাতা তিনি। তার শীর্ষ পদেও বসেছেন। ১৯৭৮ সালে পঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএলবি ডিগ্রি নিয়ে কেরিয়ার শুরু করেন তিনি। আসমা মানবাধিকার আন্দোলনে জড়িয়ে পড়েন, দেশে সেসময়কার প্রেসিডেন্ট জিয়াউল হকের জমানায় গণতন্ত্র ফেরানোর আন্দোলনে যোগ দেওয়ায় ১৯৮৩ সালে গ্রেফতার হয়ে জেলে যেতে হয় তাঁকে।
পাকিস্তানে নানা কারণে 'নিখোঁজ হওয়া লোকজনে'র ব্যাপারে, গোয়েন্দা এজেন্সির লোকজনকে ডেকে জেরা করার দাবিতেও তিনি সরব হন। সুপ্রিম কোর্টের 'বিচারবিভাগীয় অতি সক্রিয়তার' সমালোচনা করেন, গত বছর জুলাইয়ে সুপ্রিম কোর্ট নওয়াজ শরিফের প্রধানমন্ত্রী পদে থাকার যোগ্যতা খারিজ করে দেওয়ার পরও তার নিন্দা করেন।
আসমাকে ২০০৭ সালে গ্রেফতার করেছিল তত্কালীন সামরিক একনায়ক পারভেজ মুশারফ সরকার। ২০১২-য় আসমা বলেছিলেন, তিনি আশঙ্কা করছেন, তাঁকে মেরে ফেলবে আইএসআই।