তাসখন্দ: পরমাণু সরবরাহ রাষ্ট্রগোষ্ঠী বা এনএসজি-তে প্রবেশের চেষ্টা ব্যর্থ হওয়ার পরই নাম না করে চিনকে তীব্র আক্রমণ করল ভারত। যদিও চিনের দাবি, নিয়ম মেনেই ভারতের বিরোধিতা করা হয়েছে।


এনএসজি-তে ভারতের অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে যে ভাবে ধারাবাহিকভাবে বিরোধিতা করে এসেছে চিন, তাতে দৃশ্যত ক্ষুব্ধ ভারত। বৈঠক অমীমাংসিতভাবে শেষ হওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই নিজেদের ক্ষোভ উগরে দেয় নয়াদিল্লি।

এদিন বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র বিকাশ স্বরূপ নাম না করেই চিনকে একহাত নেন। বলেন, আমরা বুঝি একটি দেশ কীভাবে লাগাতার প্রক্রিয়াগত বাধা দিয়ে এসেছে। তা সত্ত্বেও প্লেনারিতে ভারতকে নিয়ে তিন-ঘণ্টার দীর্ঘ বৈঠক হয়। এখানেই ভারতের গুরুত্ব প্রমাণিত।

স্বরূপ যোগ করেন, এনএসজি-তে ভারত প্রতিনিধিত্ব করতে পারলে আখেরে বিশ্বব্যাপী পরমাণু অস্ত্রপ্রসার রোধ এবং পরমাণু পদার্থের বাণিজ্য আরও নিরাপদ হত। গতকাল বৈঠকে একাধিক রাষ্ট্র ভারতের সদস্যপদের সমর্থন করেছে। ভারত তাদের ধন্যবাদ জানায়।

প্রসঙ্গত, আবেদন প্রত্যাখ্যান হওয়ার নেপথ্যে এনএসজি-র তরফে যে যুক্তি দেখানো হয়েছে, তা হল, পরমাণু অস্ত্র প্রসার রোধ চুক্তি বা এনপিটি স্বাক্ষর করেনি ভারত।  এই প্রসঙ্গে স্বরূপ বলেন, এনপিটি নিয়ে ভারতের অবস্থান নতুন নয়। এমনকী, ২০০৮ সালে এনএসজি-র প্লেনারি তা উঠেওছিল। তখন বলা হয়েছিল, এনপিটি-র সদস্য না হয়েও ভারত তার সব শর্ত মেনে চলছে।

তবে, চিন দাবি করেছে, তারা যা করেছে সবটাই নিয়ম মেনে। চিনা বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র হুয়া চুনউইং জানিয়েছেন, চিন দুটি বিষয় বোঝে। এক, সকলকে নিয়মের মধ্যে থাকতে হবে। দুই, ঐকমত্যে পৌঁছতে হলে বিকল্প চিন্তাভাবনা করতে হবে।

৪৮ সদস্য বিশিষ্ট এনএসজি-র প্লেনারি বৈঠকের আগে চিন বারবারই বলেছে যে, ভারতের সদস্যপদের বিষয়টি আলোচ্যসূচিতে নেই। ভারতের আর্জি নিয়ে কোনওরকম আলোচনার সম্ভাবনা ঠেকাতে মরিয়া ছিল চিন।

যদিও চিনের এই প্রচেষ্টা ভেস্তে যায়। সোলে প্লেনারির সকালের বৈঠকে জাপান ভারতের প্রসঙ্গটি উত্থাপন করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে বিশেষ নৈশভোজ-পরবর্তী বৈঠকে ভারতের আর্জির বিষয়টি নিয়ে আলোচনায় রাজি হয় সদস্য দেশগুলি। যদিও, রাতের বিশেষ বৈঠকে ঐকমত্য না হওয়ায় ভারতের অন্তর্ভুক্তি অধরা থেকে যায়।

যদিও, এদিন চিন দাবি করেছে যে, ভারতের মতো নন-এনপিটি দেশ যাতে এনএসজি-তে প্রবেশ করতে পারে, তার জন্য তারা আরও কয়েকটি দেশের সঙ্গে ‘বিকল্প’ আলোচনা চালিয়েছে!

যদিও, চিনের দাবিকে খারিজ করেছে ভারত। কারণ, বৃহস্পতিবার তাসখন্দে সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশন (এসসিও) সম্মেলনের পার্শ্ববৈঠকে চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠক করে এনএসজি-তে ভারতকে সমর্থনের বিষয়টি উত্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সূত্রের খবর, সেখানে এমন কোনও প্রয়াস সম্পর্কে ভারতকে অবগত করেনি চিন।