নয়াদিল্লি: ‘পিএইচডি, মাস্টার্সের কোনও দাম নেই নতুন আফগানিস্তানে।’ এমনটাই মন্তব্য আফগানিস্তানের নতুন শিক্ষামন্ত্রী আব্দুল বাকি হাক্কানির। তাঁর দাবি, ‘মোল্লা ও তালিবানরা দেশ চালাচ্ছে, তাঁদের কোনও ডিগ্রি নেই।’
সোমবার খুলে গেছে আফগানিস্তানের বেশিরভাগ কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়। তবে তালিবানের নতুন নিয়মের কারণে প্রথমদিন পড়ুয়া ও শিক্ষকরা প্রায় কেউই আসেননি। প্রায় সেই একই ছবি ছিল মঙ্গলবারও। এদিকে অধিকারের দাবিতে তালিবানের বন্দুকের সামনে অকুতোভয় মহিলারা। মন্ত্রিসভায় প্রতিনিধিত্বের দাবিতে পথে আফগান মহিলারা। রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্টের সমর্থনে বাদাখশান প্রদেশেও বিক্ষোভ দেখান মহিলারা।
FBI-এর মোস্ট ওয়ান্টেড তালিকায় থাকা জঙ্গিই এবার আফগানিস্তানে তালিবান মন্ত্রিসভার সদস্য। হাক্কানি নেটওয়ার্কের প্রধান সিরাজউদ্দিন হাক্কানি নতুন সরকারের অভ্যন্তরীণ মন্ত্রী হয়েছেন। FBI-এর মোস্ট ওয়ান্টেড তালিকায় থাকা সিরাজউদ্দিনকে ধরতে আমেরিকা ৫০ লক্ষ ডলার পুরস্কারও ঘোষণা করেছিল। এছাড়াও, তালিবান মন্ত্রিসভায় ঠাঁই পেয়েছেন জঙ্গি তকমা পাওয়া একাধিক নেতা। ফলে ভারত, আমেরিকা-সহ একাধিক দেশের সঙ্গে নতুন আফগান সরকারের সম্পর্ক এখন বড়সড় প্রশ্নের মুখে। অন্যদিকে, ন্যাশনাল রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্টের নেতা আহমেদ মাসুদ তালিবানি শাসনের বিরুদ্ধে দেশব্যাপী বিদ্রোহের ডাক দিয়েছেন। রাষ্ট্রপুঞ্জ, ইউরোপিয় ইউনিয়ন, সার্ক গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলির কাছে তালিবান সরকারকে স্বীকৃতি না দেওয়ার আর্জি জানিয়েছে ন্যাশনাল রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট।
গতকাল সন্ধেয় আফগানিস্তানে সরকার গঠনের ঘোষণা করল তালিবান। তাদের সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারক কমিটির প্রধান মোল্লা মহম্মদ হাসান আখুন্দ হবে আফগানিস্তানের নতুন প্রধানমন্ত্রী। পাক সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, তালিবানের প্রধান নেতা হেবাতুল্লা আখুন্দজাদা এই ঘোষণা করেছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের দায়িত্ব যাচ্ছে সিরাজুদ্দিন হক্কানির হাতে। মোল্লা আব্দুল গনি বরাদরকে করা হয়েছে উপপ্রধানমন্ত্রী। প্রতিরক্ষামন্ত্রকের দায়িত্বে মোল্লা ইয়াকুব। বিদেশমন্ত্রী হচ্ছে আমির মুত্তাকি।
যে জায়গা থেকে আফগানিস্তানে তালিবান গড়ে উঠেছিল, সেই কন্দহরের বাসিন্দা মোল্লা হাসান। তালিবানের নেতৃত্বে যে হিংসাশ্রয়ী আন্দোলন তৈরি হয়েছিল, তার অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা মোল্লা হাসান। তালিবানের সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারক সংস্থা রেহবারি সুরা-র প্রধান পদে ২০ বছর কাজ করেছে মোল্লা হাসান এবং মোল্লা হেবতুল্লাহর ঘনিষ্ঠ হিসেবে মনে করা হয় তাকে। ১৯৯৬ থেকে ২০০১ পর্যন্ত আফগানিস্তানে তালিবান সরকারের বিদেশমন্ত্রী ও উপ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে কাজ করেছিল মোল্লা হাসান।
আরও পড়ুন: Afghanistan: পাকিস্তানের বিরুদ্ধে স্লোগান, রাস্তায় নামলেন আফগান মহিলারা