নয়াদিল্লি: যুদ্ধ পরিস্থিতিতে সরাসরি বিরোধিতা না করলেও, ইউক্রেন (Russia-Ukraine War) নিয়ে আলোচনায় রাষ্ট্রপুঞ্জে (United Nations) এ বার রাশিয়ার বিরুদ্ধে ভোট দিল ভারত। রাষ্ট্রপুঞ্জে রাশিয়ার বিরুদ্ধে এই প্রথম ভোটদান ভারতের, যদিও তা পদ্ধতিগত সিদ্ধান্ত বলেই জানানো হয়েছে। বুধবার রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের টেলি কনফরেন্সে বক্তৃতা করেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি (Volodymyr Zelenskyy)। তাঁর ভার্চুয়াল বক্তৃতা নিয়ে ভোটাভুটি হলে, রাশিয়ার বিরুদ্ধে ভোটদান করে ভারত।


রাষ্ট্রপুঞ্জে রাশিয়ার বিরুদ্ধে প্রথমবার ভোট দিল ভারত


বিগত ছ'মাস ধরে ইউক্রেনে যুদ্ধ পরিস্থিতি। এ বছর ফেব্রুয়ারি মাসের শেষ দিকে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন (Vladimir Putin)। সেই নিয়ে পশ্চিমি বিশ্বের অধিকাংশ দেশ রাশিয়ার বিরুদ্ধে ভোটদান করলেও, ভোটদান থেকে নিজেদের বিরত রেখেছিল ভারত। যুদ্ধ সমাপ্তির পক্ষে সায় দিলেও, সরাসরি রাশিয়ার বিরোধিতা করেনি। সেই নিয়ে আমেরিকার বিরাগভাজনও হতে হয় দিল্লিকে। ইউক্রেন নিয়ে এই প্রথম রাশিয়ার বিরুদ্ধে ভোটদান করল তারা। 


এই মুহূর্তে রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের অস্থায়ী সদস্য ভারত। ইউক্রেনে আগ্রাসী আচরণের জন্য এ যাবৎ রাশিয়ার বিরুদ্ধে কোনও মন্তব্য করেনি তারা। বরং কূটনৈতিক আলোচনার মাধ্যমে যুদ্ধের সমাপ্তি এবং সহাবস্থানের পক্ষেই মত দিয়ে এসেছে বরাবর। আমেরিকা রাশিয়ার উপর কঠোর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা চাপালেও, রাশিয়ার থেকে তেল কেনা চালু রেখেছে ভারত। তাতে ভারতের উপর কার্যতই ক্ষুব্ধ হয়েছিল আমেরিকা। 


আরও পড়ুন: SC on Pegasus Issue : পেগাসাসকাণ্ডে ফোনে আড়িপাতার কোনও প্রমাণ মেলেনি, জানাল সুপ্রিম কোর্ট


সেই আবহেই বুধবার রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদে ছ'মাস ব্যাপী যুদ্ধ নিয়ে বিশেষ আলোচনার আয়োজন হয়। কিন্তু আলোচনার শুরুতে এ নিয়ে ভোটাভুটির প্রস্তাব দেন রাষ্ট্রপুঞ্জে রাশিয়ার প্রতিনিধি ভাসিলি এ নেবেঞ্জিয়া। জেলেনস্কির ভার্চুয়াল বক্তৃতার পক্ষে এবং বিপক্ষে মতামত চান। তাতে ভারত-সহ ১৩টি দেশ জেলেনস্কির বক্তৃতার পক্ষে ভোট দেয়। জেলেনস্কিকে বক্তৃতায় আহ্বান জানানোর বিপক্ষে ভোট দেয় রাশিয়া। ভোটদান থেকে বিরত থাকে চিন। 


এর পর ভার্চুয়াল বৈঠক শুরু করেন জেলেনস্কি। রুশ সরকার এবং সে দেশের সরকার ইউক্রেনের মাটিতে যুদ্ধাপরাধ ঘটিয়ে চলেছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। জেলেনস্কি বলেন, "এখনই মস্কোকে আটকানো না গেলে, রুশ হত্যাকারীরা অন্য দেশেও তাণ্ডব চালাতে শুরু করবে। ইউক্রেনের মাটির সঙ্গেই গোটা বিশ্বের ভবিষ্যৎ জড়িয়ে। তাই ভবিষ্যতের কথা ভেবেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে সকলকে।"


ছ'মাস ধরে চলছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ 


যুদ্ধ পরিস্থিতিতে রাশিয়া গোটা বিশ্বকে পরমাণু বিপর্যয়ের দিকে ঠেলে দিচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন জেলেনস্কি। জ়াপরিঝিয়া পরমাণু কেন্দ্রকে রাশিয়া যুদ্ধের কেন্দ্রস্থলে পরিণত করেছে বলে দাবি করেন তিনি। তিনি জানান, চেরনোবিলে একটি রিয়্যাক্টরে বিস্ফোরণ ঘটেছিল। জ়াপোরিঝিয়ায় ছ'টি রিয়্যাক্টর রয়েছে। তাই এখনই পদক্ষেপ না করলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে।