কিভ: নিরীহ নাগরিক নয়, ইউক্রেন এবং ন্যাটোর সামরিক পরিকাঠামো ধ্বংসই তাদেরপ লক্ষ্য। যুদ্ধ শুরুর গোড়া থেকেই এমন দাবি করে আসছে রাশিয়া (Russia Ukraine War)। কিন্তু ফেব্রুয়ারি ভ্লাদিমির পুতিন (Vladimir Putin) ইউক্রেনে সেনা পাঠানোর পর থেকে, গত ১৭ দিনে শুধুমাত্র মারিউপোল (Mariupol) শহরেই ২ হাজার ১৮৭ জন নাগরিক প্রাণ হারিয়েছেন বলে এ বার দাবি করল ইউক্রেন সরকার। গত ২৪ ঘণ্টাতেই সেখানে রাশিয়া ২২ বার বোমাবর্ষণ করেছে বলে জানাল মারিউপোলের সিটি কাউন্সিল।  


রবিবারও রাশিয়া এবং ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধ সমাপ্তি নিয়ে একদফা আলোচনা হয়েছে। মস্কোর তরফে আলোচনায় যথেষ্ট আগ্রহ দেখানো হচ্ছে বলে জানিয়েছে আমেরিকাও। তার মধ্যেই মারিউপোল সিটি কাউন্সলিলের তরফে একটি লিখিত বিবৃতি প্রকাশ করা হয়। তাতে বলা হয়, 'গত ২৪ ঘণ্টায় ২২ বার মারিউপোলে বোমাবর্ষণ করেছে রাশিয়া। বসতি এলাকায় আক্রমণ চালানো হয়েছে। ১০০টিরও বেশি বোমা ফেলা হয়েছে মারিউপোলে।'


এই মারিউপোলে উদ্ধারকার্য চালানো ঘিরে গোড়া থেকেই বার বার রাশিয়া এবং ইউক্রেনের মধ্যে দ্বন্দ্ব দেখা দিয়েছে। নিরীহ নাগরিকদের নিরাপদে বার করে নিয়ে যেতে সেখানে মানব করিডর গড়তে সম্মত হয় দুই দেশই। তার জন্য দিনের নির্দিষ্ট সময়ে যুদ্ধবিরতিতেও সম্মত হয় তারা। কিন্তু ইউক্রেনের অভিযোগ, যুদ্ধবিরতি চলাকালীনও আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছে রাশিয়া। তাতে ব্যাহত হচ্ছে উদ্ধারকার্য। এমনকি মারিউপোল থেকে মানব করিডর যে ভাবে বেলারুশে গিয়ে শেষ হচ্ছে, তাতেও আপত্তি তুলেছে কিভ। যদিও যুদ্ধবিরতি চলাকালীন ইউক্রেনীয় সেনার তরফেই লাগাতার প্ররোচনা দেওয়া হচ্ছে বলে দাবি রাশিয়ার। 


আরও পড়ুন: Russia-Ukraine War: যুদ্ধক্ষেত্রে মানবিক সঙ্কট তুলে ধরাই ছিল নেশা, কিভে গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু মার্কিন সাংবাদিকের


এ দিন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি জানান, এখনও পর্যন্ত এক দিনে সর্বাধিক ১ লক্ষ ২৫ হাজার মানুষকে মারিউপোল থেকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। দ্রুত এবং তৎপরতার সঙ্গে উদ্ধারকার্য সারতে মানবিক সাহায্য বাড়ানো হচ্ছে সেখানে। তিনি বলেন, "এই মুহূর্তে মারিউপোলকেই গুরুত্ব দিচ্ছি আমরা। মানবিক সাহায্য-সহ আমাদের কনভয় দু'ঘণ্টা দূরে রয়েছে। ষুধু ৮০ কিলোমিটার পেরনো বাকি। আগ্রাসনকারীদের রুখতে সব কিছু করছি আমরা। ওষুধ, খাবার, জল নিয়ে এগনো পাদ্রিদেরও বাধা দেওয়া হচ্ছে।"


উল্লেখ্য, এ  দিনই ইউক্রেনে আক্রমণের তীব্র বাড়িয়েছে রাশিয়া। পোল্যান্ড সীমান্তের কাছে ইউক্রেনীয় সেনা এবং ন্যাটোর একটি যৌথ প্রশিক্ষণ শিবিরে তারা বোমাবর্ষণ করে বলে অভিযোগ। তাতে ৩৫ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। আহত কমপক্ষে ১৩০। কিভের কাছে শরণার্থীদের কনভয় লক্ষ্য করেও গোলাবর্ষণের অভিযোগ রাশিয়ার বিরুদ্ধে। তাতে এক শিশু-সহ সাত ইউক্রেনীয় নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।