নয়াদিল্লি: ঘাড়ে চেপেছে অর্থনৈতিক বোঝা। নিন্দার ঝড় উঠেছে সর্বত্র। ইউক্রেনে সেনা নামানোর সিদ্ধান্তে এমনিতেই ভূ-রাজনৈতিক ক্ষেত্রে নিঃসঙ্গ হয়ে পড়েছেন তিনি। এ বার ভালবাসার শহরেও ব্রাত্য হলেন রাশিয়াক প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন (Vladimir Putin)। ইউক্রেনে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ শুরুর দায়ে প্যারিসের মিউজিয়াম থেকে সরানো হল তাঁর মোমের মূর্তি।
২০০০ সালে প্যারিসের গ্রিভাঁ মিউজিয়ামে পুতিনের ওই মোমের মূর্তিটি তৈরি করা হয়। মঙ্গলবার সেটি প্রদর্শনীস্থল থেকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় গুদামে। তার পর একে একে সব অংশ খুলে ভরে রাখা হয় বাক্সে। সেই ভিডিয়ো ইতিমধ্যেই ছড়িয়ে পড়েছে নেটমাধ্যমে। পুতিনের মূর্তির জায়গায় ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির মূর্তি বসানোর পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন মিউজিয়াম কর্তৃপক্ষ।
মিউজিয়ামের ডিরেক্টর ইবস দেলহোমি বলেন, “আজকের দিনে এঁর মতো চরিত্রকে লোকের মানুষের সামনে তুলে ধরা সম্ভব নয়। সাম্প্রতিক ঘটনাসমূহের জেরে ইতিহাসে এই প্রথম বার কোনও মূর্তি সরিয়ে নিচ্ছি আমরা। যা ঘটছে, তাতে ওঁর মূর্তি চোখের সামনে থাকুক, চান না আমাদের কর্মীরা। গ্রিভাঁ মিউজিয়ামে হিটলারের মতো স্বেচ্ছাচারীদের কখনও তুলে ধরি আমরা। বর্তমানে পুতিনকেও তুলে ধরতে চাই না।”
গত বৃহস্পতিবার পুতিন ইউক্রেনে সেনা নামানোর ঘোষণা করার পর থেকেই ওই মূর্তিটির উপর দফায় দফায় হামলা হয় বলে জানা গিয়েছে। মিউজিয়ামে আসা সাধারণ মানুষও মূর্তিটি নিয়ে আপত্তি জানাতে শুরু করেন। তাতেই এমন সিদ্ধান্ত বলে জানা গিয়েছে। যুদ্ধের আবহ কাটলে কি পুতিনের মূর্তি ফের শোভা পাবে মিউজিয়ামে, অনিশ্চিত কর্তৃপক্ষ। বরং জো বাইডেন, শই জিনপিংয়ের মাঝখানে জেলনস্কিকে রাখার ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন তাঁরা।
ইবস বলেন, “ওই জায়গায় জেলেনস্কির মূর্তি বসাতে পারি আমরা। বিপদের সময় দেশ ছেড়ে না পালিয়ে অনুপ্রেরণা হয়ে উঠেছেন উনি। ইতিহাসের মহান ব্যক্তিত্বের মধ্যে ওঁর জায়গা পাওয়া উচিত।”
তবে এই প্রথম নয়, ২০১৪ সালে ক্রাইমিয়াকে রাশিয়া নিজদের দেশের অন্তর্ভুক্ত করে নেওয়ার পরও ওই মোমের মূর্তির উপর হামলা নেমে আসে। বুকে ছুরি বসিয়ে লাল রঙ দিয়ে সে বার তাতে লিখে দেওয়া হয় ‘পুতিনকে মেরে ফেল।’ মাথার অংশটিও ভেঙে দেওয়া হয় মূর্তির। পরে মেরামত করে সেটি ফের বসানো হয়েছিল।