লাহোর: মুম্বই হামলার মাস্টারমাইন্ড হাফিজ মহম্মদ সঈদকে গৃহবন্দি করে রাখার বিরুদ্ধে পেশ হওয়া পিটিশনের শুনানিতে লাহোর হাইকোর্ট জানিয়ে দিল, পাকিস্তান সরকার তাঁর বিরুদ্ধে তথ্যপ্রমাণ পেশ না করলে হাফিজকে এভাবে গৃহে অন্তরীণ রাখার পদক্ষেপ খারিজ হয়ে যাবে। যার অর্থ, তিনি ছাড়া পেয়ে যাবেন। ৩১ জানুয়ারি থেকে গৃহবন্দি সঈদ।

লস্কর-ই-তৈবা প্রধান সঈদ ও আরও ৪ জনকে গৃহবন্দি রাখা সংক্রান্ত মামলার যাবতীয় নথিপত্র নিয়ে গতকালের শুনানিতে হাজির হওয়ার কথা ছিল অভ্যন্তরীণ মন্ত্রকের সচিবের। কিন্তু তিনি না আসায় হাইকোর্ট ক্ষোভ জানিয়ে বলে, স্রেফ কয়েকটা প্রেস ক্লিপিংসের ভিত্তিতে কাউকে দিনের পর দিন আটকে রাখা যায় না। সরকারের আচরণ দেখে মনে হচ্ছে, পিটিশনারদের বিরুদ্ধে তাদের কাছে বিশ্বাসযোগ্য নথিপত্র নেই। আদালতে উপযুক্ত তথ্যপ্রমাণ পেশ না হলে কিন্তু আবেদনকারীদের আটকে রাখার পদক্ষেপ বাতিল হয়ে যাবে।

এক ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেলকে সঙ্গে নিয়ে অভ্যন্তরীণ মন্ত্রকের আরেক অফিসার আদালতে জানান, ইসলামাবাদে অনিবার্য কারণে থাকতে হয়েছে বলে আসতে পারেননি সচিব।

তিনি পিটিশনের জবাব পেশ করতে সময় প্রার্থনা করেন। বিচারপতি নকভি খেদ প্রকাশ করে বলেন, এক সরকারি শীর্ষকর্তাকে বাঁচাতে একদল অফিসারের বাহিনী নেমে পড়েছেন, অথচ আদালতকে সাহায্য করতে একজনও অফিসার পাওয়া যায় না।

সঈদের কৌঁসুলি এ কে ডোগার সওয়াল করেন, স্রেফ অনুমান, আশঙ্কা, লোকের মুখের কথার ভিত্তিতে জামাত নেতাদের গৃহবন্দি করে রেখেছে সরকার। আশঙ্কা, ভীতির সমর্থনে প্রমাণ না থাকলে আইনের চোখে তার কোনও মূল্য নেই।
পঞ্জাব সরকার আগেই আদালতে জানিয়েছিল, জামাত নেতাদের ছেড়ে দেওয়া হলে তাদের কার্যকলাপ দেশে অশান্তি ডেকে আনবে। জনজীবনে শান্তি-শৃঙ্খলা, নিরাপত্তা বিঘ্নিত হবে।

গত ২৫ সেপ্টেম্বর সঈদ ও তাঁর ৪ সহযোগী আবদুল্লা উবেইদ, মালিক জফর ইকবাল, আবদুল রহমান আবিদ ও কাজি কাসিফ হুসেনকে সন্ত্রাস দমন আইনে লাহোরে গৃহবন্দি রাখার মেয়াদ আরও ৩০ দিন বাড়িয়েছে পঞ্জাব সরকার।

২০১৪-র জুনে সঈদের জামাত-উদ-দাওয়াকে বিদেশি সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠী ঘোষণা করে মার্কিন প্রশাসন।

সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপে হাত থাকায় সঈদের ১ কোটি মার্কিন ডলার মাথার দামও ঘোষণা করে তারা।