এদিকে শেরিনের শেষকৃত্য সম্পন্ন করার অধিকার চেয়ে টেক্সাসের রিচার্ডসনের বাসিন্দা ওমর সিদ্দিকি একটি অনলাইন পিটিশন করেছেন। তাঁর সঙ্গে ম্যাথিউজ পরিবারের কোনও যোগাযোগ নেই। যেহেতু নিজের পরিবারের থেকে সেভাবে বেঁচে থাকার সময় ভালবাসা পায়নি ছোট্ট শেরিন, তাই রিচার্ডসন কমিউনিটির সদস্য হিসেবে সিদ্দিকি কর্তৃপক্ষের কাছে আর্জি জানিয়েছিলেন, যদি তাঁদের হাতে তুলে দেওয়া হয় শেরিনের দেহ। তাহলে শেরিনকে তাঁরা শেষ বিদায় জানাতে চান। শনিবার রাত পর্যন্ত সেই অনলাইন পিটিশনে সহমত হয় প্রায় পাঁচ হাজার ভোট পড়েছে।
তবে আইন অনুযায়ী, সন্তানের শেষকৃত্য তাঁর বাবা-মাকেই সম্পন্ন করতে হবে, যদি তাঁরা বেঁচে থাকেন। যেহেতু ওয়েসলি (শেরিনের বাবা) জেলে রয়েছে, সেক্ষেত্রে শেরিনের দেহ সবার আগে তার মা শিনির কাছেই যাওয়া উচিত। তবে অন্য কেউ শেরিনের শেষকৃত্য সম্পন্ন করতে পারেন, যদি শেরিনের পালক মা শিনি ম্যাথিউজ সে কাজ করার অধিকার অন্য কাউকে দেয়।
এদিকে শুক্রবারই এক টুইট করে টেক্সাসের ভারতীয় কনস্যুলেট জেনারেলকে পুরো ঘটনার তদন্ত-প্রক্রিয়ার ওপর কড়া নজর রাখার নির্দেশ দেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ।
ভারতের নারী ও শিশুকল্যান মন্ত্রী মানেকা গাঁধীকেও বিদেশমন্ত্রী অনুরোধ করেছেন, ভারত থেকে যে সমস্ত অনাথ শিশুকে দত্তক নেওয়া হচ্ছে, তাদের দত্তক নেওয়ার প্রক্রিয়া, সঠিকভাবে খতিয়ে দেখার।
ভারতের বিহার থেকে দত্তক নেওয়া ছোট্ট সরস্বতী বা শেরিনকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে শনিবার উত্তর টেক্সাসের ভারতীয় সংগঠনের তরফে প্রার্থনা সভা এবং মোমবাতি মিছিলের আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে উপস্থিত ছিলেন বহু মানুষ। হাজির ছিলেন হিউস্টনের ভারতীয় কনস্যুলেট জেনারেলের প্রতিনিধিরাও। প্রসঙ্গত, গত ৭ অক্টোবর প্রথম নিখোঁজ হয়ে যায় শেরিন। তারপর পনেরো দিন পর গত ২২ অক্টোবর টেক্সাসের স্থানীয় সময় রবিবার সকাল এগারোটায় একটি কালভার্টের মধ্যে থেকে শিশুর পচা গলা দেহ উদ্ধার হয়। মেয়েটির বাবা ওয়েসলি ম্যাথিউজ প্রথমে মেয়ে নিঁখোজ হওয়ার কথা বললেও, পরে পুলিশি জেরায় জানায় দুধ খেতে গিয়ে গলায় আটকে যায় শেরিনের। তারপর তার চোখরে সামনেই নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে মৃত্যু হয় শেরিনের। পরে সে নিজে গিয়ে দেহটি বাইরে ফেলে আসে। এরপরই তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। বাচ্চাকে আঘাত ও ফার্স্ট ডিগ্রি ফ্যালোনি চার্জ লাগু হয়েছে শেরিনের পালক বাবার ওপর। এখন ওয়েসলি ডালাস কাউন্টি জেলে রয়েছে।