নয়াদিল্লি: কথা ছিল বুধবার সকালেই পদত্যাগ করবেন। তা না করে দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন শ্রীলঙ্কার (Sri Lanka Crisis) প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষ (Gotabaya Rajapaksa)। কড়া নিরাপত্তায় দেশ ছেড়েছিলেন তিনি। সস্ত্রীক আশ্রয় নিয়েছিলেন মলদ্বীপে। কিন্তু সেখানেও নাকি নিরাপত্তার অভাব বোধ করছিলেন তিনি তাই সৌদি আরবের বিশেষ বিমানে এ বার সিঙ্গাপুর রওনা দিলেন। তবে সেখানেও থাকবেন না তিনি। আপাত সৌদি আরবেই তিনি আশ্রয় নিতে চলেছেন বলে জানা গিয়েছে। ইতিধ্যেই তিনি রওনা দিয়েছেন বলে জানানো হয়েছে মলদ্বীপ সরকারের তরফে।
সৌদি আরবের পথে গোতাবায়া
ফোনে গোতাবায়ার সঙ্গে কথা হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্পিকার মহিন্দা ইয়াপা আবেওয়ারদেনা। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার সকালেই গোতাবায়ার সঙ্গে কথা বলেন মহিন্দা। যত শীঘ্র সম্ভব তাঁকে পদত্যাগপত্র জমা দিতে বলা হয়েছে। অন্যথায় গোতাবায়াকে অপসারণ করা হবে বলেও জানিয়েছেন মহিন্দা।
এ দিকে, রাজধানী কলম্বোয় পরিস্থিতি ধীরে ধীরে স্বাভাবিকের দিকে এগোচ্ছে বলে খবর মিলেছে। এখনও কার্ফু জারি রয়েছে সেখানে। শুক্রবার ভোর ৫টা পর্যন্ত কার্ফু জারি থাকবে। তবে প্রেসিডেন্টের প্রাসাদ, প্রধানমন্ত্রীর বাসভব, দফতর-সহ সমস্ত সরকারি অফিসের দখল খুব শীঘ্রই ছেড়ে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন। বিক্ষোভকারীরা এমনিতেই প্রেসিডেন্টের বাসভবন ছেড়ে বেরিয়ে যেতে শুরু করেছেন বলে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর।
আরও পড়ুন: Draupadi Murmu: জনজাতি মানুষের নন, অসৎ ভাবনার প্রতিনিধি দ্রৌপদী, মত কংগ্রেস নেতার
তবে রাজধানীর পরিস্থিতি থিতিয়ে আসার লক্ষণ দেখা গেলেও, দেশের বিভিন্ন প্রান্ত এখনও অস্থির। বুধবার রাতে একাধিক জায়গায় সংঘর্ষ বাধে। নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য-সহ কমপক্ষে ৭৫ জন তাতে আহত হয়েছেন। গতকাল রাতে সংসদ ভবনের কাছে পোলদুয়া জংশনে সংঘর্ষে আহত ৩৩ জনকে কলম্বো ন্যাশনাল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর অফিসের কাছে সংঘর্ষের ঘটনায় আহত হয়েছেন ৪২ জন। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। পুলিশ সিএস গ্যাস ছড়ালে এক ২৬ বছরের যুবকের মৃত্যুর খবরও মিলেছে। পুলিশ জানিয়েছে, পোলদুয়া জংশনের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্রশস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। তার মধ্যে রয়েছে T-56 আগ্নেয়াস্ত্র, ম্যাগাজিন, বুলেট।
এখনও রাজনৈতিক সঙ্কট কাটেনি
তবে হিংসা থিতিয়ে এলেও, রাজনৈতিক টালামাটাল অবস্থা এখনও অব্যাহত শ্রীলঙ্কায়। সর্বদলীয় সরকার গড়তে পদত্যাগের ঘোষণা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমসিঙ্ঘে (Ranil Wickremesinghe)। তাতে সব বিরোধী দলও নিমরাজি হয়েছিল। কিন্তু এখনও ইস্তফা দেননি রনিল। সে ক্ষেত্রে, আইন অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি ইস্তফা দিলে তাঁর পদে আসীন হওয়ার কথা প্রধানমন্ত্রীর। কিন্তু রনিলের আধিপত্যে আপত্তি বিরোধীদের। তাঁকে অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট পদেও দেখতে চায় না বলে জানিয়েছে বিরোধী দলগুলি। সে ক্ষেত্রে স্পিকারকে দিয়ে কাজ চালানো হতে পারে।