নয়া দিল্লি: বদল এসেছে আবহাওয়ায়। গ্লোবাল ওয়ার্মিংয়ের কারণে বিশাল বদল এসেছে বিশ্বের আবহাওয়ায়। যার গুরুতর রেশ পড়তে চলেছে বিমান যাত্রায়। পরিসংখ্যান বলছে ইতিমধ্যেই অনেকটা বেড়েছে ফ্লাইট টার্বুলেন্স। ব্রিটেনের বিজ্ঞানীরা ক্লিয়ার-এয়ার টার্বুলেন্স নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা করেছেন। সেখানে দেখা গিয়েছে কার্বন ডাই অক্সাইড এর অতিরিক্ত নির্গমনের কারণে উষ্ণ বায়ু ১৯৭৯ সাল থেকে উত্তর আটলান্টিকে ৫৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। 


এর ফলে বায়ুমণ্ডলে পরিবর্তন এসেছে। বিমান যখন সেই বায়ুমণ্ডলের মধ্যে দিয়ে যাত্রা করছে তখন সমস্যা তৈরি হচ্ছে। আচমকাই এয়ার পকেটে পড়ে যাচ্ছে  প্লেন। যা দুর্ঘটনারও কারণ হয়ে যাচ্ছে। গবেষণার সহ-লেখক মার্ক প্রসার বলেছেন যে এই ধরনের টার্বুলেন্সের মধ্যে দিয়ে যাওয়ার অর্থ ঝুঁকি বাড়ছে বিমান যাত্রাতেও। সংবাদসংস্থা গার্ডিয়ানে একটি রিপোর্টে বলা হয়েছে, যাত্রী এবং ফ্লাইট অ্যাটেনডেন্টদের আহত হওয়ার ঝুঁকি বাড়িয়েছে এই ধরনের ঘটনা। 


আকাশে চলাচলের সময় বিমান এ ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হয়ে থাকে। মূলত, বায়ুপ্রবাহের চাপ এবং বিমানের গতিবেগের আকস্মিক পরিবর্তন হলে বিমানে একটি ধাক্কা লাগতে পারে। অথবা, বিমানে টানও অনুভূত হতে পারে। এটি হল বায়ুর এক অনিয়মিত প্রবাহ যা, বাতাসের ঘূর্ণমান এবং উল্লম্ব স্রোতের মিশ্রনে হঠাৎ তৈরি হতে পারে। এর ফলে হঠাৎই বিমানে এক বা একাধিক মারাত্মক ঝাঁকুনি লাগতে পারে। আবার হাওয়ার চাপ খুব বেশি থাকলে বিমান নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলতেও পারে। এমনকী বিমানের কাঠামোতে বড়সড় ক্ষতিও হয়ে যেতে পারে।


একটি বিমান যে কোনও সময় প্রায় ৭ ধরনের টারবুল্যান্সের মধ্যে পড়তে পারে। কখনও তা আবহাওয়া সংক্রান্ত সমস্যার কারণে হতে পারে। আবার কখনও বায়ু প্রবাহ বা জেট স্ট্রিম-এর কারণে হতে পারে। জেট স্ট্রিম হল বায়ুর স্রোতের এক শক্তিশালী বেড় যা ভূপৃষ্ঠ থেকে কয়েক মাইল উপরে পৃথিবীকে ঘিরে রেখেছে। উত্তর ও দক্ষিণ গোলার্ধে দু’তিনটি করে জেট স্ট্রিম থাকতে পারে। আবহাওয়া সংক্রান্ত টার্ব্যুলেন্স হলে, অর্থাৎ ঘন মেঘ বা বজ্রবিদ্যুতের মধ্যে দিয়েও বিমান উড়তে পারে।


প্রাকৃতিক নানা দুর্যোগ এবং এ ধরনের টারবুল্যান্স উড়ানের সময় খুবই স্বাভাবিক ঘটনা। তা হলে প্রশ্ন উঠতেই পারে, বিপদের সম্ভাবনা কতটা!সাধারণত, বিমান চালকদের টারবুল্যান্স মোকাবিলা করার উপযুক্ত প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। কিন্তু টারবুল্যান্সের ভয়াবহতা নির্ভর করে তার প্রকৃতি এবং তীব্রতার উপর। বজ্রপাতের সময় কোনও রকম টারবুল্যান্স তৈরি হলে তা মারাত্মক হতে পারে। কারণ এ রকম সময়ে বিমানের উপর অতিরিক্ত চাপ তৈরি হতে পারে, যাতে বিমান নিয়ন্ত্রণও হারাতে পারে। সমীক্ষা বলছে, ১২ থেকে ২০ হাজার ফুট উচ্চতায় ঝড়ের মধ্য-স্তরে টারবুল্যান্স হওয়ার সম্ভাবনা সব থেকে বেশি থাকে।